Thank you for trying Sticky AMP!!

উবার, পাঠাওয়ের নিবন্ধন শুরু

আনুষ্ঠানিকভাবে গতকাল সোমবার থেকে রাইড শেয়ারিংয়ের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। শর্তপূরণ সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানগুলো নিবন্ধন পাবে। ঢাকার বাইরে নিবন্ধিত কোনো মোটরসাইকেল ও গাড়ি রাজধানীতে রাইড শেয়ারিংয়ে যুক্ত হতে পারবে না। বিআরটিএর পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী প্রথম আলোকে জানান, নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরুর প্রথম দিনে ‘পিকমি’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল। গতকাল এই প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধন পেয়েছে।

নিবন্ধন পাওয়া ‘পিকমি’ ছাড়াও রাজধানীতে উবার, পাঠাও, সহজ, ওভাইসহ অন্তত ২৫টি রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান এবং কয়েক হাজার যানবাহন এই খাতের সঙ্গে যুক্ত। তবে এত দিন খাতটি কোনো আইনি কাঠামোর মধ্যে ছিল না। খাতটিকে আইনি কাঠামোর মধ্যে আনতে ২০১৭ সালে রাইড শেয়ারিং সার্ভিস নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নেয় বিআরটিএ। এ–সংক্রান্ত একটি খসড়া নীতিমালা গত বছরের ১৫ জানুয়ারি অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। এরপর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে নীতিমালাটি গত বছরের ৮ মার্চ থেকে কার্যকরের ঘোষণা দেওয়া হয়।

নীতিমালা অনুযায়ী, এই খাতের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠান ও যানবাহনের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়। কিন্তু বিআরটিএর কারিগরি প্রস্তুতি না থাকায় নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি শুরুতেই বাধাগ্রস্ত হয়। পরে বিভিন্ন সময় নিবন্ধনের জন্য বিআরটিএর কাছে মোট ১৬টি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠানই নীতিমালার সব শর্ত পূরণ করতে পারেনি। ফলে কোনো প্রতিষ্ঠানকেই নিবন্ধন দেয়নি সংস্থাটি। এখন নিবন্ধন দেওয়ার ক্ষেত্রেও নীতিমালার ‘খ’ অনুচ্ছেদের ১ নম্বর শর্তটি শিথিল করা হয়েছে। শর্তটি হচ্ছে, রাইড শেয়ারিং অ্যাপে এমন একটি বোতাম বা অপশন রাখতে হবে, যা স্পর্শ করলেই মোটরযান চালক ও যাত্রীর জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) অবস্থান সরাসরি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) চলে যাবে।

বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য সম্প্রতি পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিআরটিএ। কিন্তু একেক প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ একেক রকম হওয়ায় এবং এটি নিশ্চিত করার জন্য কিছু আধুনিক যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হওয়ায় এটি এখনই চালু করা সম্ভব নয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে কাজটি দ্রুত শেষ করা হবে বলে জানানো হয়েছে। পরে বিআরটিএ আপাতত ৯৯৯–এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার শর্তটি শিথিল রেখেই নিবন্ধনকাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

>

ঢাকা শহরে চলা রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলোর নিবন্ধন দেওয়া শুরু করেছে বিআরটিএ
রাজধানীতে উবার, পাঠাও, সহজ, ওভাইসহ অন্তত ২৫টি রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান এবং কয়েক হাজার যানবাহন এই খাতের সঙ্গে যুক্ত
পুরো প্রক্রিয়াটিই হবে অনলাইনে

নাম না প্রকাশের শর্তে বিআরটিএর এক কর্মকর্তা বলেন, আগে ১৬টি প্রতিষ্ঠান কাগজে-কলমে বিআরটিএর কাছে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল। গত ২৬ জুন প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডাকা হয়েছিল। তাদের অনলাইনে আবেদন করতে বলা হয়েছে এবং আবেদনের প্রক্রিয়াটিও দেখা হয়েছে। এরপর গতকাল একটি প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত ফি দিয়ে আবেদন করেছিল। তিনি বলেন, পুরো প্রক্রিয়াটি অনলাইনে হবে, নিবন্ধন সনদও অনলাইন থেকে সংগ্রহ করা যাবে। বিআরটিএতে সশরীরে কাউকে আসতে হবে না।

নীতিমালা অনুযায়ী, রাইড শেয়ারিংয়ের সঙ্গে যুক্ত হতে হলে (প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে) ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) অনুমোদিত এলাকায় কমপক্ষে ১০০টি, চট্টগ্রাম মহানগরে ৫০টি এবং দেশের অন্যান্য শহরে ২০টি যানবাহনের সঙ্গে বিআরটিএর মাধ্যমে নিবন্ধিত হতে হবে। প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ এক লাখ টাকা ফি দিতে হবে। নিবন্ধন নবায়ন করতে প্রতিবছর আরও ১০ হাজার টাকা করে দিতে হবে বিআরটিএর কোষাগারে। অন্যদিকে, যানবাহনের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে মোটরসাইকেলের জন্য পাঁচ শ টাকা এবং অন্যান্য গাড়ির জন্য এক হাজার টাকা করে ফি দিতে হবে।

বিআরটিএর দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, যানবাহনের নিবন্ধনের ক্ষেত্রেও অনলাইনে আবেদন করতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে যে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাহনটি যুক্ত, সেই প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন প্রয়োজন হবে। আর নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি এমন হবে, যেখানে ঢাকা মেট্রোর বাইরে নিবন্ধিত কোনো বাহন রাজধানীতে রাইড শেয়ারিংয়ের জন্য নিবন্ধন পাবে না। তবে চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ বা অন্যান্য এলাকায় নিবন্ধিত বাহন নিজ নিজ এলাকায় রাইড শেয়ারিংয়ের সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে। এ ছাড়া ঢাকার বাইরে নিবন্ধন যানবাহনগুলো রাইড শেয়ারিংয়ে যুক্ত না হয়ে ঢাকায় চলাচল করতে পারবে। বিআরটিএর পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রব্বানী বলেন, ঢাকার বাইরের বাহন রাইড শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে চলার ক্ষেত্রে বিভিন্ন মহলের বিশেষ করে পুলিশের আপত্তি ছিল। কারণ এতে যানজট বাড়ে। তাই ঢাকার বাইরে যানবাহনগুলোকে ঢাকা শহরে চলাচলের জন্য নিবন্ধন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।