ডেন্টিস্ট বাবা

ছোটবেলায় দাঁত নড়লেই ছুটতে হতো বাবার কাছে। বাবা কোনো ব্যথা ছাড়াই দাঁত তুলে দিতেন। বাবা দাঁতের ডাক্তার। কিন্তু একবার হলো কী, একটা দাঁত নড়ছিল আর তখন বাবাও ছিলেন হাসপাতালে। বাড়ির সবাই জোর করতে লাগল যে দাঁত তুলে দেবে। কিন্তু আমি তো বাবাকে ছাড়া কিছুতেই দাঁত তুলব না। তাই মা আমাকে জোর করে নিয়ে গেলেন ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার আংকেলের মুখ মাস্কে ঢাকা, দেখেই আমার ভয় করতে লাগল। কী জানি কী হয়! সবাই তো আর বাবার মতো না যে এক সেকেন্ডে ম্যাজিকের মতো আমার দাঁত তুলে দেবে।

এদিকে মাস্কের ভেতর থেকে মনে হলো ডাক্তার আংকেল হাসছেন। মা-ও হাসছেন। আমি হাসির কারণটা বুঝতে পারলাম না। আচ্ছা, ডাক্তার দেখলে কি হাসতে হয়? মনে মনে ভাবলাম। ডাক্তার আংকেল আমাকে বললেন, ‘মামণি, এখানে বসো তো। আর একদম ভয় পেয়ো না।’

গলার স্বরটা চেনা চেনা লাগল, তবে ভয়ের চোটে পাত্তা দিলাম না। ডাক্তার আংকেল বললেন, ‘এই যে, এখনই দাঁত তুলে দিচ্ছি। একটুও ব্যথা পাবে না।’ আমার তো হার্টফেল করার মতো অবস্থা! তাই চোখ বুজে রইলাম। কিন্তু না, কিছুই হলো না। না কোনো ব্যথা পেলাম, না হার্টফেল হলো। ঠিক আমার বাবার মতো করেই দাঁত তুলে দিলেন ডাক্তার আংকেল। যেই চোখ খুললাম, অমনি দেখি ডাক্তার আর কেউ নন, আমার বাবা!

‘কী, এবার হলো তো?’ বাবা বললেন।

আমি সঙ্গে সঙ্গে বাবাকে জড়িয়ে ধরলাম। মা আমার দিকে তাকিয়ে হাসতে থাকলেন।

এভাবেই বাবা সব সময় আমার পাশে থাকেন। আমি আমার বাবাকে খুব ভালোবাসি।

পঞ্চম শ্রেণি, শহীদ বীর উত্তর লে. আনোয়ারা গার্লস কলেজ, ঢাকা