লেবু থেকে ব্যাটারি

আজকাল বিয়েবাড়িতে ছোট ছোট এলইডি বাতি ঝুলে থাকতে দেখা যায়। ভেবে দেখো তো, একটা করে বাতির সঙ্গে চারটা করে লেবু ঝুলে আছে, কেমন হবে দৃশ্যটা? কল্পনায় উদ্ভট মনে হলেও সত্যি সত্যিই কাজটা করতে পারলে কিন্তু অনেকখানি বিদ্যুৎ বেঁচে যাবে! একগাদা লেবু যে খরচ হবে, সেটাও ঠিক। এই দুষ্টু বুদ্ধি থেকে একটা ভালো বুদ্ধি হয়তো তোমরা ভেবে বের করে ফেলবে।

সে যাকগে, লেবু ব্যবহার করে কীভাবে ব্যাটারি তৈরি করা যায়, সেটাই আজ বলব।

যা লাগবে

১। ৪টি লেবু, ২। ৪টি তামার পয়সা, ৩। ৪টি পেরেক, ৪। ১টি এলইডি বাতি, ৫। ক্লিপ লাগানো তামার তার, ৬। ১টি মাল্টিমিটার (না থাকলেও চলবে)

যেভাবে ব্যাটারি তৈরি করবে

প্রথম ধাপ: লেবুর ভেতর পাশাপাশি একটু দূরত্ব রেখে একটা তামার পয়সা আর একটা পেরেক অর্ধেকটা ঢুকিয়ে দাও। খেয়াল রেখো, লেবু আর পেরেক যেন একটা আরেকটার সংস্পর্ষ না পায়। এভাবে মোট চারটা লেবুতে পয়সা আর পেরেক ঢোকাও।

দ্বিতীয় ধাপ: ছবির মতো করে, তার দিয়ে একটি লেবুর পয়সার সঙ্গে অন্য একটা লেবুর পেরেকটা জুড়ে দাও। এমন ক্লিপ যদি না পাও, শুধু তার আর স্কচটেপ ব্যবহার করে জুড়ে দিলেও হবে। ছবির মতোই একটি পেরেক আর একটি পয়সার জায়গা যেন খালি থাকে।

তৃতীয় ধাপ: তোমার কাছে যদি একটা মাল্টিমিটার থাকে, সেটা ব্যবহার করার এটাই একটা ভালো সুযোগ। যে পয়সা আর পেরেকটা ফাঁকা আছে, সেটার সঙ্গে মাল্টিমিটারের তার দুটি জুড়ে দাও। এ ক্ষেত্রে ৩.৫ ভোল্টের কাছাকাছি একটা রিডিং দেখানোর কথা।

চতুর্থ ধাপ: এবার যে পয়সা আর পেরেকটা খালি রেখেছিলে, তার সঙ্গে ছবির মতো করে এলইডি বাতিটা জুড়ে দাও। কী, জ্বলছে? যদি বাতি জ্বলে থাকে, তাহলে তোমাকে অভিনন্দন। সফলভাবে তুমি একটি লেবু-ব্যাটারি তৈরি করতে পেরেছ। যদি না জ্বলে থাকে, তাহলে ছবির সঙ্গে মিলিয়ে দেখো কোথায় গণ্ডগোল হলো। আর এখানেই থেমে যেয়ো না কিন্তু। একই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারো আলু বা জাম্বুরা ব্যবহার করে। দেখোই না কী হয়!

লেবু-ব্যাটারি কীভাবে কাজ করে?

ব্যাটারির মূল ধারণাটা কী? একটি তড়িৎ বিশ্লেষ্য পদার্থের মধ্যে অ্যানোড আর ক্যাথোড থাকতে হবে। তাই তো? যেমন স্কুলে বইয়ে তোমরা হয়তো লঘু সালফিউরিক অ্যাসিড ব্যবহার করে কীভাবে ব্যাটারি তৈরি করতে হয়, সেটা পড়েছ। এখানে লেবুর রসে যে একধরনের অ্যাসিড আছে, তা তড়িৎ বিশ্লেষ্য হিসেবে কাজ করছে। পয়সা আর পেরেক ব্যবহৃত হচ্ছে অ্যানোড আর ক্যাথোড হিসেবে।

গ্রন্থনা: সাইফুল্লাহ, সূত্র: হাউ ইট ওয়ার্কস