উপন্যাস যখন ইতিহাসের সমান্তরাল

অলংকরণ: মাসুক হেলাল
অলংকরণ: মাসুক হেলাল

আমাদের স্বাধীনতা ও প্রতিরোধের মাস হলো মার্চ। আর আনোয়ার পাশার লেখা রাইফেল রোটি আওরাত আমাদের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্যের প্রথম নিদর্শন। মার্চের সেই উত্তাল, অবরুদ্ধ দিনগুলো অনুপুঙ্খভাবে ফুটে আছে কালজয়ী এই উপাখ্যানে। ১৯৭১ সালে উপন্যাসটি লিখে শেষ করার কিছুদিন পরেই পাকিস্তানি বাহিনী ধরে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে আনোয়ার পাশাকে। স্বাধীনতার মাসে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম উপন্যাস এবং এর লেখককে নিয়ে আয়োজন


শেষতক এই প্রশ্ন বড় জিজ্ঞাসা হয়েই রয়ে যায়, উপন্যাস ও ইতিহাসের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? এ দুইয়ের বিভাজন-রেখার আদৌ কোনো সুনির্দিষ্ট জ্যামিতিক অবয়ব আছে কি না। লিও তলস্তয় তাঁর ওয়্যর অ্যান্ড পিস সম্পর্কে বলেছেন, ‘এটা উপন্যাস নয়, এটা কাব্যের চেয়ে কম, এমনকি কম ইতিহাস থেকেও।’ উপন্যাস লিখতে গিয়ে নিশ্চয় তা ইতিহাস হয় না; আবার ইতিহাস লিখতে গিয়ে উপন্যাস হবে না। তবে এ দুইয়ের সমান্তরাল চলার আদর্শ নমুনা হতে পারে আনোয়ার পাশার রাইফেল রোটি আওরাত। ইতিহাস ও উপন্যাসের দুটি ভিন্ন তল একে অপরের ওপর আপতিত হতে পারে এবং হওয়া সম্ভব—রাইফেল রোটি আওরাত পড়লে তা-ই মনে হয়। ১৯৭১ সালের মার্চের ইতিহাস এই উপন্যাসের পাতায় পাতায় উঠে এসেছে। একাত্তরের যুদ্ধকালীন, যখন অবরুদ্ধ গোটা ঢাকা, সে সময় সংগোপনে আনোয়ার পাশা লিখেছিলেন উপন্যাসটি। এটি সম্ভবত বা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্যের প্রথম কীর্তিও বটে।

পয়লা মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করে দেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। এরপর থেকেই মূলত উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকা। কিন্তু এর আগের ইতিহাস তো আরও দীর্ঘ। সাতচল্লিশ থেকে একাত্তর—চব্বিশ বছরের ইতিহাসে পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে আদর্শগত বিরোধ ও সমষ্টিগত ব্যবধান বেড়ে গিয়েছিল বহুগুণে। পাকিস্তানের দুই অংশ এক থাকার সম্ভাবনা নষ্ট হয়েছে একাত্তরের আগেই। ক্ষমতা হস্তান্তরে পশ্চিম পাকিস্তানের তাই ছিল প্রবল ভীতি।

আনোয়ার পাশা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক; উপন্যাসের প্রধান চরিত্র সুদীপ্ত শাহীনও তাই। ফলে স্পষ্টত রাইফেল রোটি আওরাত-এর বড় অংশজুড়ে রয়েছে পঁচিশে মার্চের রাতে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় হত্যাযজ্ঞের বিবরণ। সুদীপ্ত শাহীনের চোখ দিয়ে আনোয়ার পাশা অবলোকন করেছেন মার্চের দম বন্ধ করা সময়কে। বিশেষত পঁচিশে মার্চের পরের দিনগুলো। ফলে পাঠকও সুদীপ্ত শাহীনের সঙ্গে সঙ্গে হাঁটতে থাকে মার্চের ঢাকার রাস্তায়, ভাবতে থাকে কী দোষ ছিল বাঙালিদের।

ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বড় ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। স্বাধীনতা লাভের আগ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মচারী শহীদ হন। ২ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন প্রাঙ্গণে এক ছাত্র-সমাবেশে বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। মার্চের অসহযোগ আন্দোলনের দিনগুলোতে স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হতো ইকবাল হল থেকে, বর্তমানে যেটির নাম জহুরুল হক হল।

পঁচিশে মার্চের রাতে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ শুরু করার আগে সমগ্র ঢাকা শহরে কারফিউ জারি করা হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কয়েকটি দল পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে ঢাকার রাস্তায় নেমে পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল ১৮ নম্বর পাঞ্জাব, ২২ নম্বর বেলুচ, ৩২ নম্বর পাঞ্জাব রেজিমেন্ট এবং কিছু সহযোগী ব্যাটালিয়ন। এই বাহিনীগুলোর অস্ত্রসম্ভারের মধ্যে ছিল ট্যাংক, স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, রকেট লাঞ্চার, ভারী মর্টার, হালকা মেশিনগান ইত্যাদি। এই সব অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পাকিস্তান বাহিনী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে অগ্রসর হয়। দেয়াল ভেঙে সেনাবহিনী ট্যাংক নিয়ে জগন্নাথ হলের মধ্যে প্রবেশ করে। আক্রমণ চালানো হয় ইকবাল হলেও। ওই রাতে অনেক ছাত্র শহীদ হন। হত্যা করা হয় নয়জন শিক্ষককে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নীলখেতের বাড়িতে মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ফজলুর রহমানকে তাঁর দুই আত্মীয়সহ হত্যা করা হয়। পাকিস্তানবাহিনী বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ার পাশা এবং ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক রাশীদুল হাসানের বাসায় প্রবেশ করে। দুই পরিবারই খাটের নিচে লুকিয়ে সেই যাত্রা প্রাণে বাঁচেন। ঘরে ঢুকে টর্চের আলো ফেলে তাঁদের কাউকে না দেখে হানাদাররা চলে যায়। উভয় অধ্যাপক ওই রাতে বেঁচে গেলেও, মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রান্তে তাঁরা আলবদর বাহিনীর হাত থেকে বাঁচতে পারেননি।

আনোয়ার পাশার কৃতিত্ব এখানেই যে, তিনি ইতিহাসকে ধারণ করেছেন ঔপন্যাসিকের দৃষ্টি দিয়ে, ইতিহাসের লেখনী দিয়ে নয়। এই সব হত্যাযজ্ঞের বর্ণনা এসেছে কাহিনির ফাঁকে ফাঁকে—ইতিহাসের একঘেয়েমি এখানে একেবারেই নেই। মানুষের প্রাণ বাঁচানের প্রচেষ্টা আর আকুতি পাঠকের দৃষ্টিকে ঝাপসা করে দেয়। কারণ রাইফেল রোটি আওরাত-এর বর্ণনা পাঠক তাঁর চোখে দেখতে পান। এমন কিছু বর্ণনা আছে যা মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগের আবেদনকে পাঠকের কাছে আরও মহান, আরও মানবীয় করে তোলে। অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া এক অবোধ শিশুর কথা আছে যে কিনা রাস্তায় গাছের গুঁড়ির আড়ালে পড়ে থাকা তার মৃত মায়ের স্তন চুষে চলেছে। চারতলা দালানের ছাদ থেকে চুল ধরে হিঁচড়ে টেনে আনা রমণীর কথা আছে—শেষ পর্যন্ত যাঁর মাথা থেকে একগোছা চুল খুলিসহ উঠে আসে। রিকশায় নিথর পড়ে থাকা রিকশাওয়ালার কথা আছে। উপন্যাস হয়েও এগুলো ইতিহাস।

পাকিস্তানের আদর্শ, নীতি ও বোধের প্রসঙ্গগুলো মুক্তিযুদ্ধ-পূর্বকাল থেকেই তর্ক তৈরি করেছে। ধর্ম, অর্থনীতি, সংস্কৃতি কোনোটাই মুক্তি পায়নি রাজনীতি থেকে। উপন্যাসের চরিত্রগুলোর পারস্পরিক কথোপকথনে, আলাপচারিতায় তা উঠে এসেছে এবং অবশ্যই উঠে এসেছে উপন্যাসের প্রধান চরিত্রের মনোদর্শনে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে পাঠ করতে হলে তাই রাইফেল রোটি আওরাতকে এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।

রাইফেল রোটি আওরাত-এর প্রচ্ছদ
রাইফেল রোটি আওরাত-এর প্রচ্ছদ

‘রাইফেল রোটি আওরাত’ থেকে

অনেক বছর পর অনেকক্ষণ ধরে কোরআন শরিফ পাঠ করলেন অধ্যাপক সুদীপ্ত শাহীন। ক্রমে সন্ধ্যা এল।

সেই সন্ধ্যার অন্ধকারে গা ঢাকা দিয়ে আমিনা গিয়ে রান্নাঘর খুললেন। স্বামী ও ছেলেমেয়েদের সামনে যখন ভাত-তরকারি তুলে ধরলেন, তখন কত রাত? তাকে রাত বলে না। সন্ধ্যা আটটা। সেই সন্ধ্যা আটটাতেই তখন ঢাকা শহরকে মৃত প্রেতপুরী মনে হতে লাগল। কোথাও কোনো দিকে একটু আলো জ্বলুক! কিংবা কোনো শব্দ! ওহ্, কী ভয়াবহ! সুদীপ্তর মনে হলো, ছোট-বড় মিলিয়ে তাঁরা এই পাঁচজনই কেবল সমগ্র ঢাকা শহরে জীবিত আছেন। এক বিশাল আলবাট্রসের পাখার নিচে সমগ্র নগর যেন দুঃস্বপ্নগ্রস্ত। খেতে গিয়ে একটি গ্রাসও মুখে তুলতে পারলেন না সুদীপ্ত। উঠে পড়লেন।

বেশিক্ষণ কিন্তু এ অবস্থাটা থাকল না। আলো দেখা গেল। পাকসেনারা আবার আগুন দিয়েছে শহরের বিভিন্ন এলাকায়। আবার গুলি চালাচ্ছে। তবে আশপাশে কোথাও বলে মনে হচ্ছে না। একটু দূরে দূরে। বোধ হয়, গতকাল তাদের এলাকার কাজ শেষ করে আজ অন্য এলাকা ধরেছে। এমনি চলতেই থাকবে নাকি! আচ্ছা জাঁতিকলে ফেলেছে রে বাবা! সারা শহরে কারফিউ দিয়ে রেখে দিব্যি এখন একটা একটা করে ধরে সাবাড় করবে সকলকে! মানে, সকল বাঙালিকে? এত ঔদ্ধত্য ওই পশ্চিম পাকিস্তানিদের!

পশ্চিম পাকিস্তানের উদ্ধত রেডিওতে বেজে উঠল—শেখ মুজিবুর রহমান দেশের শত্রু, বিশ্বাসঘাতক...। কে বলছে এ কথা? স্বয়ং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান। কিন্তু বাংলাদেশের প্রত্যেকটি ছেলে-বুড়ো জানে, শেখ মুজিবুর রহমান তাদের বন্ধু। বাংলার বন্ধু শেখ মুজিব। কিন্তু বাংলার শত্রুরা কী বলে শোন।...দেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। সে জন্য তাঁর শাস্তি না হয়ে যায় না।...শেখ মুজিবুর রহমানের শাস্তি! দেবে ইয়াহিয়া খান! অভিযোগ? পাকিস্তানকে ধ্বংস করতে চেয়েছেন শেখ মুজিবুর রহমান। এ কথা শুনে এখন মুখ খিস্তি করতে ইচ্ছে করে—ওরে খবিশের বাচ্চারা, পাকিস্তান বানিয়েছিল কারা? তোরা তখন তো ইংরাজ সরকারের বন্দুকের নল সাফ করতিস। আর শেখ মুজিব তখন তরুণদের মধ্যে পাকিস্তান-আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। আজ মায়ের চেয়ে মাসীর দরদ বেশি হলো? শেখ মুজিবের পেছনে আজ সাড়ে সাত কোটি মানুষের সমর্থন আর তোর পেছনে? কয়েকটা বন্দুক আর গোলাবারুদ। কিন্তু বন্দুক মানুষই বানিয়েছে না? মানুষের চেয়ে সেই বন্দুকের ক্ষমতা কখনো বেশি হয় নাকি! নিশ্চয়ই মানুষের জয় হবে। জয় হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের। কত রক্ত নেবে পিশাচেরা! বঙ্গবন্ধু তো বলেই দিয়েছে—রক্ত যখন দিয়েছি প্রয়োজন হলে আরও রক্ত দেব। দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশা আল্লাহ।...বঙ্গবন্ধুর সেই সাতই মার্চের কণ্ঠস্বর। একবার তা যে বাঙালির কানে গেছে জীবনের মতো সে হয়ে গেছে অন্য মানুষ। কিন্তু হয়নি যারা? তারা মানুষ নয়। তারা ওই রক্তলোভী পিশাচের দলে। রক্তপায়ী জীবটা এখন বলে কি! পাকিস্তানের সংহতি রক্ষার জন্য সেনাবাহিনী দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।...আবার মুখে গাল এসে গেল সুদীপ্তর। অমন যে নিরীহ অধ্যাপক সুদীপ্ত শাহীন, তিনিও ক্রোধে প্রায় দিশেহারা হলেন—ওরে হারামের হাড়, সংহতি মানে কি? বিনা বাধায় পশ্চিম পাকিস্তানকে রক্ত চুষতে দেওয়ার নাম সংহতি? তোদের ওই সংহতির নিকুচি করি। রাগে রেডিওটাকেই এখন তুলে আছাড় মারতে ইচ্ছে করছে। নাহ, রেডিওর কাছ থেকে এখন সরে যাওয়াই ভালো। ঘরের অন্য কোণে চলে গেলেন সুদীপ্ত। খাটের একাংশ পুড়ে গেছে, শুতে গেলে ভেঙে পড়তে পারে। অতএব মেঝেতে সপ বিছিয়ে শুয়ে পড়লেন—ঘুমানোর উদ্দেশ্যে নয়। সাতই মার্চের রেসকোর্স মাঠে এখন ফিরে যেতে ইচ্ছে করছে। অতীতের কোন আনন্দক্ষণে আত্মনিমজ্জনের মধ্যে বেঁচে ওঠার কোনো রসদ যদি মেলে। হ্যাঁ, বেঁচে ওঠার একটি মন্ত্রই আজ বাঙালি জপ করতে পারে—সেই অগ্নিমন্ত্রের নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। না, নামজপ নয়। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশকে জপমন্ত্রের মতো সারাক্ষণ মনের মধ্যে জাগ্রত রেখে কর্মের পথ বেছে নিতে হবে...আর যদি আমার মানুষের ওপর একটি গুলি চলে, তোমাদের ওপর নির্দেশ রইল, ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো।...আমরা যদি প্রত্যেকে নিজের ঘরকে এক-একটি দুর্গ করে তুলতে পারতাম। মুজিব ভাই, তোমার বাংলাদেশ একদিন ওদের জন্য দুর্ভেদ্য দুর্গ হবেই। কিন্তু তার আগে একটি নয়, বহু গুলি তারা চালাবে তোমার দেশের মানুষের ওপর।

উহ, আবার সেই কাল রাতের মতোই গুলিগোলা শুরু হলো। বক্মিবাজারের দিকেই আগুনের শিখাটা যেন বেশি দেখা যাচ্ছে। আগুন আর গুলিগোলার আওয়াজ। সেই রাতও গুলিগোলার বিচিত্র শব্দ শুনে কাটল। কারফিউ উঠল সকালে একটু বেলা হওয়ার পর।

কার কারফিউ উঠে যেতেই সেই ইচ্ছেটা প্রবল হলো সুদীপ্তর মধ্যে, একটু সে ঘুরে দেখবে কী ঘটেছে গত ত্রিশ ঘণ্টায়। কিন্তু দেখবার বহু কিছু তার ঘরেই ছিল। বসবার ঘরের প্রবেশ-দরজা খোলাই পড়ে আছে। দরজার গায়ে তিনটে গুলির দাগ। কয়েকটি ছবি টাঙানো ছিল ঘরে—রাফায়েল, রবীন্দ্রনাথ, অবনীন্দ্রনাথ, জয়নুল আবেদিন ও কামরুল হাসানের আঁকা কয়েকখানি ছবি। প্রত্যেকটাতে গুলি করেছে সেই বর্বরের দল, কিন্তু ভারি আশ্চর্য তো! পুব দেওয়ালে রবীন্দ্রনাথ অক্ষত আছেন। সুদীপ্ত কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দেখলেন রবীন্দ্রনাথকে: তোমাকে দেখলে বর্বরও বর্বরতা ভোলে। রবীন্দ্রনাথের ছবিতে গুলি করেনি ওরা। আর গুলি করেছে সর্বত্র—ঘরের মেঝেতে, দেয়ালে, এমনকি তাঁর সখের ক্যালেন্ডারখানিতেও।

[নির্বাচিত অংশ]