বাঙালির রঙ্গ-রসিকতার গল্প

ভূমিকা

 ‘বাঙালির রঙ্গ-রসিকতার গল্প’ শিরোনামেরঙ্গ-রসিকতামূলক এই গল্পগুলোতে বাংলাদেশের বাঙালির স্বকীয় কথনশৈলীর শৈল্পিক প্রকাশ আছে। দৈনন্দিন কর্মসূত্রের বিভিন্ন পরিবেশে প্রসঙ্গক্রমে এই সব রসিকতা কতটা তীক্ষ্ণ-তির্যক, সময় ও পরিবেশের উপযোগী হতে পারে তার নিপুণ উদাহরণ নিচের এই সব গল্প। এর কোনো কোনো রসিকতা এতটাই মোক্ষম যে তা একেবারেই লা-জবাব করে দেয়। কোথাও এসব রচনা হুল ফোটানো, কিন্তু বিদ্বেষহীন; কোথাও-বা ছাদ ফাটানো হাসিতে আসর মাতানো। বাঙালি জীবনের দুঃখ-দারিদ্র্য-দৈন্যের মধ্যে এ ধরনের রঙ্গ-রসিকতা তাঁদের জীবনকে অনন্য বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করেছে।

গ্রামবাংলার এই রঙ্গ-রসিকতার গল্পগুলোতে ঠিক গল্প নেই। আছে গ্রামীণ দেহাতি মানুষের কথার রঙ্গময় বুনন দেওয়া এক কুশলী শিল্প। গ্রামবাংলার গহিন ভেতরের রঙ্গ-রসময় ফল্গুধারায় টইটম্বুর এসব চুটকি। আশা করছি পাঠক এই রঙ্গগল্পগুলোর সামাজিক পটভূমিকার প্রতি খেয়াল রেখে রচনাগুলো পাঠ করবেন। তাহলেই এর সরসতা পাঠককে আনন্দময় করে তুলবে।

বামুন পণ্ডিত

বহুদিনের কথা। তখন আধুনিক স্কুল-কলেজ এখনকার মতো এতটা বেশুমার হয়নি। সংস্কৃত পড়ার জন্য টোল আর ফারসি পড়ার জন্য মাদ্রাসা—এই-ই ছিল। স্কুল-কলেজ খুঁজে পাওয়া সে সময় অত সহজ ছিল না।

সংস্কৃত পড়ার টোলের পণ্ডিত এবং ফারসি পড়ার মাদ্রাসার মৌলভিদের ধর্ম-কর্মের অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ করে খাওয়াতেন মানুষেরা। হিন্দুরা নেমন্তন্ন করে খাওয়াতেন সংস্কৃত পণ্ডিত বা বামুন-পুরুতকে। বলা ভালো, তাঁরা খেতেও পারতেন মেলা। খাওয়ার শেষ দিকটায় হতো প্রতিযোগিতা। যেমন পুরুত মশাইয়ের গলা পর্যন্ত খাবার উঠে গেছেÑএমন অবস্থায় নিমন্ত্রণকর্তা হয়তো বললেন, পুরুত মশাই আরেকটা রসগোল্লা খেতে পারলে আপনাকে আরও এক টাকা বেশি দেব। টাকার লোভে তিনি খেতেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এমন হতো যে পুরুত-বামুন আর হেঁটে বাড়ি ফিরতে পারতেন না। বাঁশের তৈরি সাইংয়ে করে তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দিতে হতো। মৌলভি-মাওলানাদের মধ্যেও কেউ কেউ ছিলেন এমন পরখেকো খাদক।

তো, একবার এক শিক্ষিতা ও সুচতুরা হিন্দু বিধবা ভাবলেন, বামুন-পুরুতেরা খাবার নিয়ে বড় অরুচিকর বাড়াবাড়ি করেন। তাই তাঁদের নেমন্তন্ন না করে সংস্কৃত টোলের দুজন পণ্ডিতকে নেমন্তন্ন করবেন। দুজন বিদ্বান খাবেন, দুটো জ্ঞানের কথা বলবেন, সে ভারি শোভন হবে।

যেমন ভাবা তেমন কাজ।

দুই পণ্ডিতকে নেমন্তন্ন করে বাড়িতে আনলেন তিনি। সমাদর করে বসালেন। অনুরোধ করলেন হাতমুখ ধুয়ে আহারে বসতে। জলের ঘটি নিয়ে বাইরে গেলেন এক পণ্ডিত। সে সময় যিনি ঘরে ছিলেন, তিনি আরেক পণ্ডিত। বিধবাকে তিনি বললেন, ‘মা ঠাকরান, পণ্ডিতজনকে নেমন্তন করে খাওয়ানো পুণ্যের কাজ! কিন্তু আপনি ওই ছাগলটাকে নেমন্তন করেছেন কেন?’

ইতিমধ্যে হাতমুখ ধুয়ে ঘরে ঢুকেছেন বাইরে থাকা পণ্ডিত। আর ঘরের পণ্ডিত বাইরে গেছেন হাতমুখ ধুতে। সদ্য হাতমুখ ধুয়ে আসা পণ্ডিত তখন ভদ্রমহিলাকে বললেন, ‘মা জননী, আপনার মঙ্গল হোক। আপনার স্বর্গীয় স্বামীর কল্যাণ হোক। তা, আমাকে নেমন্তন্ন করায় আপনার উদ্দেশ্যকে আমি সাধুবাদ দিই। তবে ওই গাধাটাকে কেন নেমন্তন্ন করেছেন, মা ঠাকরান?’

বিধবা ভদ্রমহিলা এবার ভেতরের ঘরে গেলেন। যাওয়ার আগে তাঁদের বলে গেলেন, ‘আপনারা বসুন। আপনাদের খাবার নতুন করে সাজিয়ে আনতে আমার সামান্য একটু বিলম্ব হবে।’ কিছুক্ষণ পর দুটো বড় কাঠের খঞ্চার একটিতে তাজা ঘাস ও অন্যটিতে খড়বিচালি সাজিয়ে দুই পণ্ডিতের সামনে উপস্থিত হলেন বিধবা। বললেন, ‘খান।’

এ ঘটনায় আঁতকে উঠলেন পণ্ডিতদ্বয়, ‘একি! আমাদের এভাবে অপমান করার মানে কী?’

বিধবা বললেন, ‘আমার ওপর ক্রুদ্ধ হবেন না। আপনারাই বলেছেন, আপনাদের একজন ছাগল, আরেকজন গাধা। আমি সেইমতো খাবার দিয়েছি। আমার অপরাধ কোথায়, বলুন?’

অলংকরণ: মাসুক হেলাল
অলংকরণ: মাসুক হেলাল


ইজ্জতের দর
এক দরিদ্র মায়ের ছেলে মহাবিদ্বান হয়ে দেশের বাড়িতে ফিরে এল। মা তো দারুণ খুশি। ছেলে বিদ্বান-পণ্ডিত, ভালো চাকরিও করে। ছেলেকে আদর-যত্ন করে মা বললেন, ‘বাজান, বাজারে যাও, মিষ্টি আনো, আমি গেরামের মাইনসেরে মিঠামুখ করামু।’

ছেলে বাজারে যাচ্ছে মিষ্টি কিনতে। পথিমধ্যে তার সঙ্গে দেখা হলো এক ঝুনা বুড়ির। বুড়ি বলল, ‘বাপ রে, তুমি কই যাও?’

বিদ্বান: বাজারে যাই।

বুড়ি: তয় ভালা কাম অইছে। বাজার থেইকা ইজ্জতের দর জাইনা আইয়ো। ফিরনের সময় আমার বাড়িত খবরডা দিয়া যাইয়ো।

বুড়ির কথায় মহামুশকিলে পড়ল বিদ্বান। ইজ্জতের আবার দরদাম থাকে নাকি? তবে এ বিষয়ে অজ্ঞতার পরিচয় দেওয়াও তার মতো বিদ্বানের পক্ষে মানানসই নয়। সে যে পণ্ডিত! তাই অথই সাগরে পড়ে একটু কূলকিনারা পাওয়ার আশায় সে বলল, ‘তোমার বাড়ি কই, বুড়ি?’

বুড়ি: ‘ইটের ওপরে ইটখলা

          তার ওপারে মধুখলা

          তার ধারে কোবাকোবি

          তার লগে বাড়ি ওপর বাড়ি

          মোর বাড়ি তার দক্ষিণের বাড়ি।’

বিদ্বান এবার পড়ল আরও ফাঁপড়ে। এর মাথামুণ্ডু তো কিছুই বোঝে না। তাই একটু আশার আলো পেতে এবার সে বলে, ‘তোমরা জাতে কী?’

ফোকলা দাঁতে হেসে হেসে বুড়ি বলে:

‘আইতে অ মারে, যাইতে অ মারে

এমনে অ মারে হেমনে অ মারে।’

বিদ্বান-পণ্ডিত ছেলেটি এসবের কিছুই বুঝতে পারে না। বাড়ি ফিরে আসে সে। মাকে খুলে বলে সব কথা। মা হেসে বলেন, ‘বাজান রে, খালি এলেম দিয়া কাম অয় না, হেলেমও লাগে। ইজ্জত রক্ষা করে কাপড়ে। বুড়ি বাজারে কাপড়ের দর কত, তা-ই জানতে কইছে। “ইটের ওপরে ইট” মানে কুমারবাড়ি—হাঁড়িপাতিল একটার ওপরে আরেকটার পাঁজা কইরা রাখে কুমারবাড়িতে। আখের কলে আখ পিষে মিষ্টি রস বাইর করে, তাই হেই জায়গা অইল “মধুখলা”। আর “কোবাকোবি” অইল কাঠ ফাঁড়নের কল। কলে দিবার আগে কাঠ কোপাইয়া সাইজ কইরা লয়। “বাড়ির ওপর বাড়ি” মানে কামারশালা। দক্ষিণের বাড়িটাই বুড়ির। আর বুড়ি জাতে জোলা। তাঁত চালাইলে মাকু একবার ডাইনে যায়, আবার বামে ফিরে আসে। তাইতে ঠক ঠক শব্দ অয়। আমরা কইলে বেজার অয়, তাই আমরা “নাইল ঢক্কর”ও বলি। বাপ রে, খালি বড় বড় কিতাবেই বিদ্যা নাই। চোখ-কান খোলা রাইখা চলাফিরা করো, হেলেম অইব। সাধারণ বুদ্ধি ও দুনিয়ার জ্ঞান অইব।’

নাপিত ও গণতন্ত্র

গল্পটি বেশি দিন আগের নয়। এই রঙ্গ-রসিকতার গল্পগাছাটির নায়ক এক পাকিস্তানি নাপিত এবং সে দেশের এককালের দুর্দান্ত সামরিক স্বৈরশাসক, বিমান দুর্ঘটনায় (চক্রান্তমূলক!) নিহত জেনারেল জিয়াউল হক। নরসুন্দর নিয়মিতভাবে লৌহমানব জিয়ার ক্ষৌরকর্ম করতে আসে। প্রতিবারই কাজ শুরুর পর চুলে পানিটানি দিয়ে সুযোগমতো কানের পাশে চুল বড় হয়েছে কি না, দেখার ছলে জেনারেলের কান দুটোও দলাইমলাই করে দেয় সে। লোকটি সামরিক বাহিনীরই ‘বারবার’, তার এই কাজে হয়তো কোনো গূঢ়ৈষা নেই। তবু জেনারেলের কেমন যেন অস্বস্তি লাগে।

ক্ষৌরকর্মের আগে নরসুন্দর পানি দিয়ে চুলকে বশে এনে নিজের দুই হাতের তালুতে শব্দ করে মুখ একটু কাত করে জেনারেলের কানের কাছে নিয়ে বলে, ‘রদ্দা মেরে দিয়ে শুরু করব, না খেউরি করে রদ্দা মারব।’

জেনারেল একেকদিন একেক রকম চান। নাপিত জেনারেলের ঘাড়ে-পিঠে দুই হাতের থাবড়া দিয়ে জোরে জোরে চাপ মারে। ‘উহ্, বহুত আরাম’ বলে চোখ মুদে থাকেন জেনারেল।

এরপর শুরু হয় আসল কাজ, চুল কাটা। পানিতে ভেজা নেতিয়ে পড়া চুল কাটার কায়দা করা কঠিন। নরসুন্দর চিকন হাসি হাসে। চুল নাড়াচাড়া করে। তারপর কিছুটা আকস্মিকভাবে বলে, ‘হুজুর, গণতন্ত্র কবে দেবেন?’ জেনারেল নড়েচড়ে বসেন। ভেতরে-ভেতরে ক্রুদ্ধ হন। ক্রূর দৃষ্টিতে বারবার মানে নাপিতের দিকে তাকান। নাপিতের কাজ হয়ে যায়। শশব্যস্ত হয়ে সে বলে, ‘সদর সাহাব আরাম কারিয়ে।’

প্রতিদিনই ঘটে এমন ঘটনা। একদিন বারবার যেই বলেছে, ‘গণতন্ত্র কবে দেবেন?’ অমনি চিৎকার করে ওঠেন জেনারেল, ‘তুই নাপিত। তোর কাম চুল কাটা। তুই ক্যান রোজ গণতন্ত্র গণতন্ত্র করিস? বল হারামজাদা, তোর মতলব কী?’

নরসুন্দর: মাপ কিজিয়ে হুজুর। কোয়ি বদমতলব নেহি।

জেনারেল: তো!

নরসুন্দর: গণতন্ত্রের নাম শুনলেই আপনার চুল খাড়া হয়ে ওঠে। তাতে আমার চুল কাটার সুবিধা হয়। কামের সুবিধার জন্যই গণতন্ত্র আমার প্রিয় বুলি। অন্য কোনো মতলব নাই।


চাটুকার
গ্রামের এক মাতব্বর আর তাঁর গৃহকর্ম-সহকারীর গল্প এটি। মাতব্বর ছিলেন রাগী আর একগুঁয়ে। অধস্তনেরা তাঁর কথা শুনুক—এটাই চাইতেন তিনি। তাঁর গৃহ-সহকারী অল্প দিনেই মালিকের মেজাজ-মর্জি বুঝে চলা এবং মন রক্ষা করা শিখে ফেলে। আসলে মালিককে তোয়াজ-তোষামোদ করার বিদ্যা ঠিকঠাকমতো রপ্ত করে নেয় সে। তো, একদিন বাজারে যাওয়ার আগে মাতব্বর ও গৃহ-সহকারীর মধ্যে যে কথা হয় তা এ রকম:

মাতব্বর: বাজারে যে যাও,¾আনবা কী, আনাজ-তরকারি?

গৃহ-সহকারী: আপনি যা কইবেন, তা-ই খুব দরকারি।

মাতব্বর: দেইখা-শুইনা আনিস তোর পছন্দসই।

গৃহ-সহকারী: না, আপনে কন¾কী খাইতে মন চায়?

মাতব্বর: আলু আনলে হয় কেমন?

গৃহ-সহকারী: সে আর বলতে, সবকিছুতেই যায় এমন কিম্মতি জিনিস কে না খায়!

মাতব্বর: আমার যে ডায়াবেটিস, আলু খাইতে কেন বলিস!

গৃহ-সহকারী: আলু—তা এক সর্বনেশে চিজ! ওটা খাবেন না, অনেক সময় তাতে পোকা করে গিজগিজ।

মাতব্বর: তাইলে বেগুন আনিস, ভর্তা খাইতে স্বাদ।

গৃহ-সহকারী: জি হুজুর জি, বেগুনই আনব নি।

মাতব্বর: কিন্তু...বেগুনের চুলকানি, খাইলে বুঝবানি!

গৃহ-সহকারী: জি, যার নাই কোনো গুণ, তার নাম বাইগুন। বাগুন দিলাম বাদ, ওতে ঘটে পয়মাদ।

মাতব্বর: থাম বেটা চাটুকার। কর্তাভজা হার্মাদ।

গৃহ-সহকারী: নুন খাই যাঁর, গুণ গাই তাঁর। এই যদি হয় চাটুকারি, সে-ও তো এক বাহাদুরি।

অন্ধের দিব্যদৃষ্টি

ঝড়-বৃষ্টিময় ঘোর অন্ধকার রাতে হাতে প্রজ্বলিত একটি হারিকেন ও মাথায় একটি ভরা কলসি নিয়ে নিজের ঘের ফিরছিল এক অন্ধ ব্যক্তি। বৃষ্টির পানি ও কাদায় রাস্তা পিচ্ছিল। তার ওপর গাছগাছালি নিচু হয়ে রাস্তার মাঝখানে চলে আসায় মানুষের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছিল বেশ। এই অবস্থায় মুখে-মাথায় গাছের ডাল আর পাতার খোঁচা খেয়ে নাকাল এক চক্ষুষ্মান অন্ধকে বাতি হাতে আসতে দেখে বলল, ‘তুমি তো আস্ত বোকা হে! তুমি অন্ধ, তোমার কাছে রাত-দিন সমান অন্ধকার। এ পিচ্ছিল দুর্গম পথে ঝুঁকি নিয়ে ভরা কলস মাথায় করে চলেছ, সেটা তোমার জন্য এক মস্ত বড় কীর্তি। কিন্তু এই কীর্তি ম্লান হয়ে গেছে তোমার নির্বুদ্ধিতায়। ওই হারিকেনটা তোমার কোন কাজে লাগছে? বোকা-বুদ্ধ না হলে কেউ বিপদের পথে বাড়তি ঝামেলা কাঁধে নেয় নাকি?’

চক্ষুষ্মানের কথায় উচ্চ স্বরে হেসে উঠল অন্ধ। বলল, ‘আমি বোকা-নির্বোধ নই। অন্ধত্ব থাকলেও দিব্যদৃষ্টি আছে আমার। তাই ভালো করে বিচার করে দেখলে নিরেট অন্ধ আমি নই, অন্ধ হলে তুমি। তুমি দিনে দেখো, রাতে দেখো না। অর্থাৎ তুমিও অর্ধেক অন্ধ। আর আমি দিনে যেমন দেখি, রাতেও একই রকম দেখি। এই মেঘলা ঘোর অন্ধকার, দুর্যোগময় রাতে মাথায় বোঝা নিয়েও আমি কেমন নির্বিকার দেখো; আর তুমি যেকোনো মুহূর্তে পা হড়কে আমার ওপরে এসে পড়তে পারো! তাতে ভাঙতে পারে আমার পানিভর্তি কলস। অন্ধকারে বেমক্কা আমার ওপরে অন্ধের মতো যাতে না পড়ো, সে জন্যই এই হারিকেন। এটা আমার অন্ধত্বের জন্য নয়, তোমার অন্ধত্ব দূর করার জন্য।’