ফতুল্লায় 'জনতা লীগ' নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

শেখ স্বাধীন মনির হোসেন
শেখ স্বাধীন মনির হোসেন

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পাগলায় কেব্ল সংযোগের (ডিশ) ব্যবসা নিয়ে বিরোধের জেরে ‘আওয়ামী জনতা লীগ’-এর নেতা শেখ স্বাধীন মনির হোসেনকে (৩৫) কুপিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। মীর হোসেন ওরফে ল্যাংড়া মীরু বাহিনীর লোকজন এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে অভিযোগ করেছে মনিরের পরিবার।
মনির স্থানীয় কুতুবপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের মোসলেম শেখের ছেলে। তিনি ফতুল্লা থানা আওয়ামী জনতা লীগের সভাপতি ছিলেন। তবে আওয়ামী লীগের ওই নামের কোনো সহযোগী সংগঠন নেই।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, কুতুবপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর হোসেনের বড় ভাই আলমগীর হোসেন, ভাগনে শাকিল ও সহযোগী জনিসহ কয়েকজন ধারালো অস্ত্র নিয়ে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ফতুল্লা থানাধীন পাগলা রসুলপুর এলাকায় তিব্বত মিয়ার বাড়িতে হামলা চালান। তিব্বতের ভায়রা আওয়ামী জনতা লীগের নেতা মনির তখন ওই বাড়িতে ছিলেন। হামলাকারী ব্যক্তিরা তাঁকে চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপান। মনিরকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে তাঁর স্ত্রী পারভীন আক্তার ও স্ত্রীর বড় বোন রেখা আক্তারকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে এলাকাবাসী আহত তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার ভোরে মনির মারা যান।
নিহত মনিরের স্ত্রী পারভীন আক্তার অভিযোগ করে বলেন, এলাকায় ডিশ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কয়েক দিন আগে ল্যাংড়া মীরুর সঙ্গে মনিরের বিরোধ সৃষ্টি হয়। পরে মীরু গ্রেপ্তার হলেও কারাগার থেকে সহযোগীদের নির্দেশ দিয়ে এ হামলা চালিয়েছেন।
ফতুল্লা মডেল থানা-পুলিশ সূত্রের বিবরণ অনুযায়ী, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মীর হোসেন পঙ্গু হলেও হুইলচেয়ারে বসে এলাকার বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করেন। সরকারি দলের স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় ও পুলিশের সঙ্গে সখ্য গড়ে তিনি এত দিন ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন। কিন্তু মীরু বাহিনী ৭ অক্টোবর পাগলা রেলস্টেশন এলাকায় চার যুবককে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় মীর হোসেনের ভাগনে শাকিল গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। এ ঘটনায় মীর হোসেন ও শাকিলসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ঘটনার পরদিন দুপুরে মীরুকে নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর পাগলা রসুলপুর এলাকায় ডিশ ব্যবসা নিয়ে স্থানীয় লিটন ও মীরু পক্ষের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে লিটনের পক্ষ নেন মনির। পরে মীরুর পক্ষে যে মামলা করা হয়, তাতে মনিরকেও আসামি করা হয়।
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, মনিরের ওপর হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।