'দুঃখের কথা কার কাছে গিয়া কই'

সুস্মিতা কর্মকার
সুস্মিতা কর্মকার

সুস্মিতা কর্মকার এবার বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে এমবিবিএসে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু টাকার অভাবে তাঁর ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সুস্মিতার বাবা একজন কাঠমিস্ত্রি। মা ক্যানসারে আক্রান্ত।
সুস্মিতাদের বাড়ি শেরপুরের নালিতাবাড়ী পৌর শহরের কাচারীপাড়া এলাকায়। তাঁদের জমিজমা নেই। বাবা-মা ও ছোট এক ভাইকে নিয়ে তাঁরা একটি ভাড়া ঘরে থাকেন।
সুস্মিতা ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় বেশ ভালো। বড় হয়ে চিকিৎসক হবেন, এই ছিল তাঁর স্বপ্ন। এবার সুযোগও পেয়েছেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দারিদ্র্য, অর্থাভাব।
জানতে চাইলে সুস্মিতা প্রথম আলোকে বলেন, তিনি উপজেলার তারাগঞ্জ পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। এ বছর শহীদ আবদুর রশিদ মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন।
দুই বছর আগে তাঁর মা গৌরী রানী কর্মকারের স্তন ক্যানসার ধরা পড়ে। তখন তাঁর চিকিৎসায় প্রায় আট লাখ টাকা খরচ হয়। আত্মীয়স্বজনেরা সহায়তা দেন। এর বাইরে তাঁর বাবা সুদে দুই লাখ টাকা ধার নেন। এই টাকা শোধ করতে ভিটেবাড়ি বিক্রি করতে হয়। এখন বাবার রোজগারে মায়ের ওষুধ কেনা, তাঁদের সংসারখরচ ও দুই ভাইবোনের পড়াশোনা চলে। আগামীকাল থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে মেডিকেলে ভর্তি হতে হবে। এতে অন্তত ২২ হাজার টাকা লাগবে।
কিন্তু এত টাকা তাঁর হতদরিদ্র মা-বাবার পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব নয়।
সুস্মিতার মা গৌরী রানী বলেন, ‘ছোট থেকেই মেয়েডা ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখত। খাইয়া না-খাইয়া স্কুল-কলেজ করছে। আমরা গরিব মানুষ, আমাগর বাড়িভিটাও নাই। মেয়ের ভর্তির লাইগা সাড়ে তিন হাজার টাকা জোগাড় অইছে। অহন কেমনে কী করমু বুঝবার পাইতাছি না।’
বাবা কৃষ্ণ কর্মকার বলেন, ‘মেয়েডা মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাইছে, শোনার পর আনন্দে চোখে জল চইল্যা আসে। অহন টাকার অভাবে ভর্তি অইতে পারতাছে না। বাবা অইয়া এই দুঃখের কথা কার কাছে গিয়া কই!’
নালিতাবাড়ীর শহীদ আবদুর রশিদ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌল্লাহ বলেন, সমাজের সহৃদয় ও বিত্তবান ব্যক্তিরা যদি একটু সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন তাহলে অসম্ভব মেধাবী এই ছাত্রী মেডিকেলে ভর্তি হতে পারে। চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে পারে।

আর্থিকভাবে কেউ তাঁকে সহযোগিতা করতে চাইলে তাঁর বাবা কৃষ্ণ কর্মকারের সঙ্গে ০১৭৩৮২৯৬০৬৫ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।