আশার আলো দেখাচ্ছে জিংক ধান

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় ব্রি ধান-৭২–এর প্রদর্শনী প্লটে কৃষককে পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা l প্রথম আলো
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় ব্রি ধান-৭২–এর প্রদর্শনী প্লটে কৃষককে পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা l প্রথম আলো

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় জিংকসমৃদ্ধ আমন ধানের নতুন জাত ব্রি ধান-৭২–এর পরীক্ষামূলক চাষে সাফল্য এসেছে। উপজেলার কৃষি বিভাগের উদ্যোগে ৫৫ জন কৃষকের সাড়ে ছয় হেক্টর জমিতে এই ধানের আবাদ করে ফলন পাওয়া গেছে ৪২ মেট্রিক টন। যেখানে একই পরিমাণ জমিতে প্রচলিত জাতের ধানের ফলন হয়েছে ৩২ মেট্রিক টন। ফলন ভালো হওয়ায় পুষ্টিকর এই জাতের চাষাবাদের সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদী হচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. বুলবুল জানান, লোহাগাড়ায় আমন মৌসুমে কৃষকেরা হরি ধান, বিআর-১০, বি আর-২২সহ প্রচলিত জাতের ধান চাষ করেন। নতুন উদ্ভাবিত জিংকসমৃদ্ধ ধানের ফলন উপজেলায় কেমন হতে পারে, এবার সেই ধারণা পাওয়া গেল। এ জন্য ৫৫ জন কৃষকের মধ্যে ব্রি ধান-৭২–এর বীজ বিতরণ করা হয়। পুষ্টি নিয়ে কাজ করে এমন দুটি বেসরকারি সংস্থা গণ উন্নয়নকেন্দ্র ও হারভেস্ট প্লাস কৃষকদের মধ্যে এই বীজ বিনা মূল্যে বিতরণ করে।

উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা জানান, পুষ্টিকর এই ধানের কেবল ফলনই বেশি হয়নি, রোগপ্রতিরোধী বলে কীটনাশকও কম দিতে হয়েছে। এতে চাষিদের খরচও কম হয়েছে।

নতুন জাতের ধান চাষ করে খুশি উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের মো. শাহেদ। তিনি জানান, এ বছর আমন মৌসুমে তিনি ৩৩ শতক জমিতে ব্রি ধান-৭২ চাষ করেছেন। ফলন হয়েছে প্রায় ২০ মণ, যা গতবারের চেয়ে পাঁচ মণ বেশি। লোহাগাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শামীম হোসেন জানান, ব্রি ধান-৭২ উচ্চফলনশীল জিংকসমৃদ্ধ আমন ধান। এই ধানের পরীক্ষামূলক চাষে ফলন অনেক ভালো হওয়ায় কৃষকদের মাঝে আগ্রহ বেড়েছে।

তিনি আরও বলেন, নতুন এই চালের আকার লম্বা, দানা মোটা ও রং সাদা। এক হাজার পুষ্ট ধানের ওজন প্রায় ২৭ দশমিক নয় গ্রাম। এতে শতকরা ৮ দশমিক ৯ ভাগ আমিষ ও ২২ দশমিক ৮ মিলিগ্রাম জিংক আছে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন হয় ৫ দশমিক ৭ টন থেকে সাড়ে ৭ টন পর্যন্ত।

চট্টগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আমিনুল হক চৌধুরী জানান, ব্রি ধান-৭২ রোগ বালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ অন্যান্য জাতের চেয়ে কম হয়। ফলে কৃষকদের চাষের খরচ বাঁচে।