পর্যটকদের জন্য খুলল স্বর্ণমন্দিরের দরজা

বান্দরবানের বালাঘাটায় অবস্থিত অনিন্দ্যসুন্দর স্থাপত্যে নির্মিত স্বর্ণমন্দির পর্যটকদের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ।  দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর আবার মন্দিরে পর্যটকেরা যাচ্ছেন (ইনসেটে) l প্রথম আলো
বান্দরবানের বালাঘাটায় অবস্থিত অনিন্দ্যসুন্দর স্থাপত্যে নির্মিত স্বর্ণমন্দির পর্যটকদের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর আবার মন্দিরে পর্যটকেরা যাচ্ছেন (ইনসেটে) l প্রথম আলো

বান্দরবানে পর্যটকদের আকর্ষণ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম উপাসনালয় স্বর্ণমন্দির খুলে দেওয়া হয়েছে। গত নয় মাস ধরে স্বর্ণমন্দিরে সাধারণ পর্যটকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ ছিল। এ সময় পূজারি ছাড়া অন্য মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ায় এবার পর্যটকেরা মন্দির পরিদর্শনে যেতে পারবেন।

স্বর্ণমন্দির কর্তৃপক্ষ জানায়, মন্দিরে এখন পুলিশের সার্বক্ষণিক প্রহরা রয়েছে। মন্দিরের পবিত্রতা রক্ষার নিয়মকানুন মেনে যেকোনো পর্যটক এখন থেকে স্বাচ্ছন্দ্যে স্বর্ণমন্দির দেখতে যেতে পারেন।

গত শুক্রবার জেলা শহরের বালাঘাটার পুলপাড়া এলাকার পাহাড়চূড়ায় অবস্থিত স্বর্ণমন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকেরা মন্দির দেখতে এসেছেন। ঢাকা মিরপুরের বাসিন্দা মো. ইউনুছ বলেন, তাঁরা আগেও একবার বান্দরবান এসেছিলেন। কিন্তু তখন স্বর্ণমন্দির বন্ধ থাকায় ঢুকতে পারেননি। এ জন্য এবার শুধু স্বর্ণমন্দির দেখার জন্য এসেছেন। মন্দিরের অনিন্দ্যসুন্দর স্থাপত্য দেখে তাঁদের খুবই ভালো লাগছে।

চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ থেকে শিউলি বিশ্বাস ও অনিরুদ্ধ বিশ্বাস ছেলেমেয়ে নিয়ে বেড়াতে এসেছেন। তাঁরা বলেন, নীলগিরি, নীলাচল ঘুরে স্বর্ণমন্দিরে না গেলে বান্দরবান আসাটাই অপূর্ণ থেকে যেত।

স্বর্ণমন্দিরের প্রধান উপাসক বা চ মং মারমা বলেন, গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে স্বর্ণমন্দিরে পর্যটকদের প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। অনেক পর্যটক ধর্মীয় পবিত্রতার বিষয়ে উদাসীন ছিলেন। এর পাশাপাশি মন্দিরের নিরাপত্তার বিষয়টিও বিবেচনায় ছিল তখন। এসব কারণেই মন্দিরে সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

জানা গেছে, বোমাং রাজবিহারে গত ১৩ নভেম্বর কঠিন চীবরদান উৎসবে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং, জেলা ও দায়রা জজ শফিকুর রহমান, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁরা স্বর্ণমন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা উপঞা জোত মহাথেরর সঙ্গে স্বর্ণমন্দির খুলে দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা করেন। সেদিনই সিদ্ধান্ত হয় ১৬ নভেম্বর থেকে স্বর্ণমন্দির পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হ​েব।

প্রধান উপাসক বা চ মং মারমা বলেন, প্রশাসন থেকে নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় স্বর্ণমন্দির আবার পর্যটকদের জন্য খুলে দিতে তাঁরা রাজি হয়েছেন। এখন ছয়জন পুলিশ সার্বক্ষণিকভাবে সেখানে থাকেন। তাঁরা পর্যটকদের সহযোগিতা করেন।