সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটিতে বইপড়া উৎসব

দেশপ্রেম এবং শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চায় তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করতে ‘বইপড়া উৎসব’ পালন করেছে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির সোশিওলজি অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ৷ এই বিভাগে শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চার মাস টার্মের বইপড়া উৎসব যোগ করা হয়৷
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ইউনিভার্সিটির সামনে জাতীয় সংগীত গেয়ে, বেলুন উড়িয়ে ও আনন্দ-উল্লাস করে এই উৎসবের উদ্বোধন করা হয়৷ এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, উপাচার্য পারভীন হাসান, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কাজী জাহিদুল হাসান, রেজিস্ট্রার মিসেস ফিরদৌস আলী, সোশিওলজি অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক মালেকা বেগমসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন৷
‘আমাদের পাঠাগার: বইপড়া উৎসব-২০১৬’ শীর্ষক এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিভাগের ৬৭ জন ছাত্রী অংশগ্রহণ করেন৷ তাঁরা কোর্সের বইপড়া কর্মসূচির অংশ হিসেবে নিজ নিজ কাজ প্রদর্শন করেন৷ অতিথিরা তাঁদের এই প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন৷ তাঁরা ছাত্রীদের সঙ্গে বইপড়া নিয়ে কথা বলেন৷ এ ছাড়া ছাত্রীরা ইউনিভার্সিটির গ্রন্থাগারে বিভিন্ন বই উপহার দেন৷
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অধ্যাপক মালেকা বেগম বলেন, গত জুলাই থেকে তিনি বইপড়া কর্মসূচি নিয়ে ভেবেছিলেন৷ ওই মাসেই গুলশানের একটি রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলায় নিহত হন ফারাজ আইয়াজ হোসেন৷ তখন সারা দেশে জঙ্গিবাদ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়৷ শিক্ষার্থীদের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে৷ এরপরই জঙ্গিবাদ থেকে কীভাবে ছাত্রীদের দূরে রাখা যায়, কীভাবে তাঁদের সঠিক পথ ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করা যায়, তা নিয়ে তিনি ভাবেন৷ পরে তিনি ছাত্রীদের নিয়ে পাঠ্যসূচির বাইরে বইপড়া কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ শুরু করেন৷ তিনি বলেন, ফারাজের ওই ঘটনা সবার মনে আলো জ্বেলে ছিল৷ ওই দিন ফারাজ নিজ জীবনের মায়া করেননি। বন্ধুদের বাঁচাতে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন। এমন মানবিক হতে হলে সবাইকে বই পড়তে হবে।
ফিরদৌস আলী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বই পড়তে উৎসাহ দেওয়া দরকার।
ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য কাজী জাহিদুল হাসান তাঁর বক্তব্যে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান৷
পারভীন হাসান বলেন, বই মানুষের সারা জীবনের সুখ-দুঃখের সঙ্গী। বই পড়লে নিজ কল্পনার জগৎ বেরিয়ে আসে। এ সময় তিনি প্রধান অতিথিকে উত্তরীয় পরিয়ে সম্মাননা জানান৷ সেলিনা হোসেন বলেন, ‘ফারাজ যে সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, সাধারণত তা গল্প-উপন্যাসে পাওয়া যায়। এবার আমরা তা বাস্তবে পেয়েছি। ফারাজ আমাদের কল্পজগতের নায়ক। তরুণ প্রজন্মকে শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সব ধরনের বই পড়তে হবে।’ এ সময় তিনি ইউনিভার্সিটির গ্রন্থাগারে বিভিন্ন লেখকের ২২টি বই উপহার দেন৷
সোশিওলজি অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক জোবায়েরা বিশ্বাস অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন৷