আইনটি পাস করবেন না

বিশেষ বিধান যুক্ত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের খসড়া পাস না করতে বাংলাদেশের সাংসদদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

গতকাল বৃহস্পতিবার সংস্থাটির নারী অধিকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ গবেষক হেদার বার এই আহ্বান জানান। তাঁর আহ্বানটি এইচআরডব্লিউর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।

খসড়াটি পাস হয়ে আইনে পরিণত হলে তা বাংলাদেশের মেয়েদের বাল্যবিবাহের বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে ফেলবে বলে মন্তব্য করেন হেদার বার।

এইচআরডব্লিউর এই গবেষক বলেন, খসড়াটি আইন হিসেবে পাস হলে তা বাংলাদেশকে অনেকটা পিছিয়ে দেবে।

হেদার বার বলেন, মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাওয়া ‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৬’-এর খসড়াটি এখন সংসদে যাবে। বাংলাদেশের মেয়েদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সাংসদদের সামনে এক গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ এসেছে। আইনটি পাস না করা তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

এইচআরডব্লিউর এই আহ্বানে উল্লেখ করা হয়, বিশ্বে এবং এশিয়ায় বাল্যবিবাহপ্রবণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এখানে বয়স ১৮তে পড়ার আগেই ৫২ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়। এমনকি বয়স ১৫ হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায় ১৮ শতাংশ মেয়ের। বাল্যবিবাহ ওই মেয়ে ও তাদের পরিবারের জন্য গভীর সংকট ডেকে আনে। এর ফলে মেয়েরা স্কুল ত্যাগ করতে বাধ্য হয়, আটকে যায় দারিদ্র্যের পাঁকে। অল্প বয়সে সন্তান জন্মদানের ফলে তার ও নবজাতকের স্বাস্থ্য কঠিন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে।

‘বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৬’-এর খসড়া গত ২৪ নভেম্বর অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা। এতে মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর রাখা হলেও বিশেষ ক্ষেত্রে যেকোনো অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের সর্বোত্তম স্বার্থে আদালতের নির্দেশে এবং মা-বাবার সম্মতিতে বিয়ে হতে পারবে বলে বিশেষ বিধান রাখা হয়েছে।

আইনে বিশেষ বিধান রাখার সমালোচনা করে এর অপব্যবহার হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জেন্ডার বিশেষজ্ঞ ও নারী নেত্রীরা। তাঁরা বলছেন, আইনের ফাঁক গলে বাল্যবিবাহ বৈধতা পেতে পারে।

অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে এমন আশঙ্কাকে অমূলক বলা হচ্ছে।