ইয়াবা দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে ধরা খেলেন এসআই!

যশোরের কেশবপুর উপজেলার জাহানপুর বাজারের একজন ব্যবসায়ীকে ইয়াবা বড়ি দিয়ে ফাঁসাতে গিয়ে পুলিশের একজন উপপরিদর্শক (এসআই) ধরা খেয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে। পরে জনতার প্রতিরোধের মুখে অভিযুক্ত ওই এসআইকে যশোর পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জাহানপুর বাজারে রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে মুদি ব্যবসায়ী আবদুল লতিফ নিজের দোকানে পণ্য বিক্রি করছিলেন। এ সময় ভাল্লুকঘর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই মিজানুর রহমান দুজন কনস্টেবলসহ ওই দোকানে যান। দোকানে অবৈধ মালামাল আছে বলে তল্লাশি শুরু করেন তাঁরা। একপর্যায়ে দোকানের ক্যাশবাক্স থেকে পাঁচটি ইয়াবা বড়ি পাওয়া গেছে উল্লেখ করে লতিফকে হাতকড়া পরিয়ে ফেলেন।

দোকানি আবদুল লতিফ বলেন, ওই দিন তাঁর দোকানে হালখাতা চলছিল। তিনি অভিযোগ করেন, তল্লাশির নামে এসআই মিজানুর রহমান তাঁর ক্যাশবাক্স থেকে ৮০ হাজার টাকা তুলে নেন। এ সময় বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা এ ঘটনা ষড়যন্ত্রমূলক বলে প্রতিবাদ করেন। কিন্তু তারপরও তাঁকে নিয়ে যেতে চাইলে ব্যবসায়ীরা বাধা দেন। পরে মাইকে বিষয়টি প্রচার করলে এলাকার লোকজন এসে প্রতিরোধ করেন।

বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমি ওই উপরিদর্শককে এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলি ইয়াবা পেয়েছেন, কিন্তু টাকা নিয়ে যাচ্ছেন কেন?’ খলিলুর অভিযোগ করেন, লতিফকে ছেড়ে দেওয়ার কথা বললে এসআই অস্ত্র দেখিয়ে তাঁকে ভয় দেখান। এ সময় উপস্থিত লোকজনের সহায়তায় ওই দোকান বন্ধ করে আমি ওসি, চেয়ারম্যানসহ অন্যদের ফোনে ঘটনাটি জানাই। খলিলুর দাবি করেন, তল্লাশির নামে একজন কনস্টেবল দোকানের ক্যাশবাক্সে ইয়াবা বড়ি ঢুকিয়ে দেন। সেটা একজন খরিদ্দারও দেখে ফেলেন।

সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামছুদ্দীন আহমেদ বলেন, রাতেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। তিনি বলেন, ‘লতিফ খুব ভালো লোক। তাঁকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ চেয়ারম্যান বলেন, এলাকার লোকের জনরোষের মুখে কেশবপুর থানার ওসি রাত সাড়ে ১১টার দিকে এসআই মিজানুর রহমানসহ দুই কনস্টেবলের বিচার করার আশ্বাস দিয়ে তাঁদের নিয়ে থানায় ফিরে যান। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা উদ্ধার করে দোকানমালিককে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, রোববার রাতেই এসআই মিজানুর রহমানকে যশোর পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। এখন যা করার পুলিশ সুপার করবেন।