কূটনীতিকের শুল্কমুক্ত গাড়ি চালান ব্যবসায়ীর স্ত্রী

সাবেক মিসরীয় রাষ্ট্রদূত মাহমুদ ইজ্জতের আনা শুল্কমুক্ত গাড়িটি আটক করা হয়েছে। গতকাল রোববার বারিধারার একটি বাসা থেকে রেঞ্জ রোভার ভোগ ২০১৪ মডেলের গাড়িটি আটক করেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। পরে গাড়িটি কাকরাইলের শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরে আনা হয়। কয়েক মাস আগেই মাহমুদ ইজ্জত দায়িত্ব শেষ করে বাংলাদেশ ত্যাগ করেন।

অভিযোগ উঠেছে, এ গাড়িটি শুল্ক-কর পরিশোধ না করেই হস্তান্তর করা হয়েছে। গাড়িটি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করছেন ইন্ট্রাকো গ্রুপ ও চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রিয়াদ আলীর স্ত্রী হুদা আলী সেলিম।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে মিসরীয় রাষ্ট্রদূত মাহমুদ ইজ্জত রেঞ্জ রোভার জিপটি শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনেন। শুল্কায়নের জন্য এ গাড়ির মূল্য ধরা হয় ৭৭ লাখ ৭৩ হাজার ৩২৮ টাকা। আর সব মিলিয়ে এতে সম্ভাব্য শুল্ক-করের পরিমাণ ৪ কোটি ৬৭ লাখ ৪৭ হাজার ৭৫১ টাকা। কিন্তু কূটনৈতিক সুবিধায় আনা হয়েছে বলে কোনো শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হয়নি।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুল্ক গোয়েন্দারা জানতে পারেন, কোনো অনুমোদন ছাড়াই এই গাড়ি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করছেন হুদা আলী সেলিম। গতকাল সকালে গোয়েন্দাদের একটি দল বারিধারা কূটনৈতিক এলাকার ১ নম্বর সড়কের ১১ নম্বর অ্যাপার্টমেন্ট ভবন থেকে গাড়িটি আটক করে। কূটনীতিক কিংবা প্রিভিলেজড পারসন না হওয়া সত্ত্বেও ছয় মাসের বেশি সময় ধরে হুদা আলী সেলিম হলুদ নম্বরপ্লেটের গাড়িটি ব্যবহার করছেন বলে গাড়িচালক গোয়েন্দাদের জানান।

কোনো বিদেশি কূটনীতিক যদি তাঁদের কার্যকাল শেষ হওয়ার আগেই শুল্কমুক্ত গাড়ি হস্তান্তর করতে চান, তবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ ক্ষেত্রে তা-ও করা হয়নি।

গাড়িটি সম্পর্কে এখন বিস্তারিত তদন্ত করবেন শুল্ক গোয়েন্দারা। মিসরীয় দূতাবাস ও ব্যবহারকারীর কাছে ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হবে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মইনুল খান প্রথম আলোকে বলেন, শুল্ক-কর পরিশোধ না করেই এ গাড়িটি হস্তান্তরের অভিযোগ উঠেছে। তদন্তসাপেক্ষে এখন আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।