কাজে ডিজিটাল ও আচরণে অ্যানালগ হওয়ার পরামর্শ কাদেরের

ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি
ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে নেতা-কর্মীদের কাজকর্মে ডিজিটাল ও আচরণে অ্যানালগ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় রাজশাহীতে তিন দিনব্যাপী বিভাগীয় ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

সরকারি কার্যক্রমের অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক স্লোগান ও ছাত্রলীগের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়ার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের সমালোচনাও করেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের ভাবতে হবে—কোন সভার বৈশিষ্ট্য কী? এটা একটা ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা। রাজনৈতিক সমাবেশ নয়, র‍্যালি-মিছিল বা রাজনৈতিক আলোচনাসভাও নয়। কাজেই এখানে রাজনৈতিক স্লোগান দেওয়ার কোনো দরকার নেই।’

হুজুগে সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যে আসরে যে গান, সেই আসরে সেই গান গাইতে হবে। এখানে ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে স্লোগান হলে আমি অ্যাপ্রিশিয়েট করতাম। এখানে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্লোগান হলে আমি অ্যাপ্রিশিয়েট করতাম।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই মঞ্চে ছাত্রলীগের ফুল দেওয়ার কি কোনো প্রয়োজন আছে? আমাকে ফুল দেওয়ার অনেক সময় আছে। কিন্তু এখানে কেন?’ এ সময় তিনি রাজনৈতিক ব্যানারে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি ছোট এবং নিজের ছবি বড় করে দেওয়ারও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমি নেতা-কর্মীদের বলব, আপনারা কাজকর্মে ডিজিটাল হন। কিন্তু আচার-ব্যবহারে আমি কাউকে ডিজিটাল হতে বলব না। আচার-ব্যবহারে অ্যানালগ থাকাই ভালো।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগকে জনগণের আস্থার ঠিকানা হিসেবে গড়ে তুলতে যা যা করা দরকার, যে যোগ্যতা-গুণাবলি অর্জন করা দরকার, তা করতে হবে বলে জানান তিনি। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আরও শক্তিশালী দল হিসেবে অংশ নেবে বলেও ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলা মামলায় আদালতের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে শাস্তি দেওয়া হলে জনগণ তা প্রতিহত করবে—বিএনপির এমন বক্তব্যের বিষয়ে ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আদালতের রায় প্রতিহত করার ক্ষমতা বিএনপির নেই। তারা যদি আদালতের রায়কে প্রতিহত করতে যায়, তবে জনগণই তাদের প্রতিহত করবে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে তারা আগুন লাগিয়ে, পেট্রলবোমা মেরে, মানুষ হত্যা করে প্রতিহত করতে পারেনি। প্রতিহত করার ক্ষমতা বিএনপির নেই।’

রাজশাহীর ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মুনির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক। এ ছাড়া বক্তব্য দেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই কর্মসূচির জনপ্রেক্ষিত বিশেষজ্ঞ নাইমুজ্জামান মুক্তা, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান প্রমুখ।

মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলবে। রাজশাহী বিভাগীয় প্রশাসনের আয়োজনে মেলায় রাজশাহী বিভাগের অধীনে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, সেবা খাত, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।