আবারও 'রাজনৈতিক মামলা' প্রত্যাহারের উদ্যোগ!

.
.

রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বিবেচনায় ৩৪টি হত্যা মামলাসহ নতুন করে ২০৬টি আলোচিত মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দেড় শতাধিক মামলাই আওয়ামী লীগের পরপর দুই মেয়াদের সরকারের আমলে করা। অধিকাংশ মামলারই বাদী সরকারের বিভিন্ন সংস্থা। গত বছর করা মামলাও প্রত্যাহারের তালিকায় রয়েছে।
সরকারের দায়ের করা মামলা সরকারই কী করে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বলে, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন আইন বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকারকর্মীরা।
প্রত্যাহারের সুপারিশের জন্য প্রস্তুত তালিকায় হত্যা ছাড়াও ধর্ষণ, নাশকতা, ঘুষ লেনদেন, সরকারি টাকা আত্মসাৎ, ডাকাতি, অবৈধভাবে অস্ত্র নিজ দখলে রাখা, কালোবাজারি, অপহরণ, জালিয়াতি, বোমা, চুরি ও অস্ত্র মামলা রয়েছে। এসব মামলা প্রত্যাহারের জন্য মন্ত্রী-সাংসদেরা আধা সরকারি (ডিও) পত্র দিয়েছেন।

এর আগে ২০০৯-১৩ মেয়াদের আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের আমলে ‘রাজনৈতিক হয়রানিমূলক’ বিবেচনায় ৭ হাজার ১৯৮টি মামলা সম্পূর্ণ বা আংশিক প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছিল। এর উল্লেখযোগ্য একটি অংশ ছিল হত্যা মামলা। ইতিমধ্যে এসব মামলার বেশির ভাগই সুপারিশ মেনে আদালত থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ওই সময় আলোচিত কিছু মামলাও রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার হওয়া নিয়ে তীব্র সমালোচনা হলে এ-সংক্রান্ত আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি বিলুপ্ত করা হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আগের আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি বাতিল হওয়ার পরও মামলা প্রত্যাহারের আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা পড়া অব্যাহত থাকে। অনেক মন্ত্রী-সাংসদও এ ব্যাপারে সুপারিশ করে চিঠি পাঠিয়েছেন। এসব কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবেদনগুলো যাচাই-বাছাই করার জন্য একটি কমিটি করেছে। ইতিমধ্যে এই কমিটি এক দফা বৈঠক করে প্রত্যাহারের সুপারিশ করার জন্য একটি তালিকা চূড়ান্ত করেছে। তবে বিলুপ্ত কমিটির বিভিন্ন বৈঠকে একাধিকবার নাকচ হওয়া অনেক আবেদন নতুন তালিকায় স্থান পেয়েছে বলে জানা গেছে।

রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারে আবেদন যাচাই-বাছাই কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত সচিব আতিকুল হক প্রথম আলোকে বলেন, নতুনভাবে জেলা কমিটি এবং কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করে এসব মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিসভা কমিটিকে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই কমিটির কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মামলাগুলো প্রত্যাহার করা হবে।

মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, সরকার দলীয় লোকের বিরুদ্ধে সরকার কীভাবে হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করে? আর কয়েক বছর ধরে তো বর্তমান সরকারই ক্ষমতায়, তাহলে কে রাজনৈতিকভাবে নেতা-কর্মীকে হয়রানি করেছে? বিষয়টি বিতর্কিত হয়ে যায় বলে মনে হয়। খুনের মামলা, ধর্ষণের মামলা—এগুলো কোনো বিবেচনায়ই সুপারিশ করা উচিত নয়।

২০০১-০৬ মেয়াদে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারও একই কায়দায় ৫ হাজার ৮৮৮টি মামলা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং ৯৪৫টি মামলা থেকে কিছু আসামিকে অব্যাহতি দেয়। ওই সময় মোট ৭৩ হাজার ৫৪১ জন আসামি এই প্রক্রিয়ায় বিচার এড়াতে সক্ষম হন।

জানতে চাইলে আইনজীবী শাহদীন মালিক প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করা অসম্ভব। সরকারি নেতা-কর্মীদের মামলা প্রত্যাহারে বিচারব্যবস্থা দলীয়করণে অস্বাভাবিক আরেকটি ধাপ। এ উদ্যোগ সরকারি দলকে আরও কলুষিত করবে।

এসব মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল প্রথম আলোকে বলেন, অনেক আবেদন এসেছে। যাচাই-বাছাই করেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

১৭টি মামলা ২০১৪ সালের

জমিসংক্রান্ত জটিলতার জের ধরে ২০১৪ সালের ১২ মার্চ ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মহিষমারী গ্রামের পজির উদ্দিনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। ওই মামলার আসামি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক বাবুল হোসেন। মামলা থেকে তাঁর নাম প্রত্যাহারের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে ২০১৪ সালের মে মাসে ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাংসদ মো. দবিরুল ইসলাম একটি ডিও লেটার দিয়েছেন।

মামলার বাদী ও পজির উদ্দিনের স্ত্রী আলিয়া বেগম বলেন, টাকা আর ক্ষমতার কাছে তিনি আজ অসহায়, তাঁর আর কিছুই করার নেই।

তবে বাবুল হোসেন প্রথম আলোকে জানান, হয়রানি করার জন্য হত্যা মামলায় তাঁর নাম জড়ানো হয়েছিল। এ কারণে মামলাটি থেকে তাঁর নাম প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়।

হত্যা ছাড়াও ভোটকেন্দ্রে হামলা-ভাঙচুর, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলাসহ ঠাকুরগাঁওয়ের ১৭টি মামলা থেকে ১৫ জন আসামির নাম রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বিবেচনায় প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাংসদ রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, যারা ভোটকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে নির্বাচনী কর্মকর্তাকে হত্যা করে, গণতন্ত্রকে ধ্বংসের চক্রান্ত করে, মামলা থেকে তাদের নাম প্রত্যাহারে সুপারিশ করার প্রশ্নই ওঠে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

কলেজছাত্র হত্যা মামলা

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার কলেজছাত্র নাছির উদ্দিন ভূঁইয়া ওরফে রাজু হত্যা মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছে।

চার বছর ধরে আইনি লড়াইয়ের বিভিন্ন ধাপ অতিক্রমের পর মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ চূড়ান্ত হওয়ায় নিহত ছাত্রের পরিবার বিস্ময় ও হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, আগাম ঘোষণা দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। চিহ্নিত খুনিরা যদি রাজনৈতিক বিবেচনায় পার পেয়ে যায়, তাহলে মানুষ আইন-আদালতের প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলবে।

 নাছির উদ্দিন ভূঁইয়া ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের বালিসিতা গ্রামের বাসিন্দা মাদ্রাসাশিক্ষক নুর উদ্দিন ভূঁইয়ার বড় ছেলে। তিনি ঈশ্বরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। হুমকি দেওয়ার এক সপ্তাহ পর গুলি করে তাঁকে হত্যা করা হয়।

নূর উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ‘নাছিরকে যিনি প্রকাশ্য সালিসে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন, থানা-পুলিশ ও সিআইডির দেওয়া অভিযোগপত্রে তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়নি। এতে আমরা এমনিতেই হতাশ। অন্যদিকে অভিযুক্তরা সকলেই আদালতের দেওয়া জামিন ভোগ করছেন।’

নাছির উদ্দিনের মা জুলেখা খাতুন বলেন, ‘যারা আমার ছেলেকে আগাম ঘোষণা দিয়ে হত্যা করেছে, সেই সব খুনিকে ফাঁসি ছাড়া আমার কষ্ট কমবে না। আমি বিচারের আশায় বসে আছি।’

উপজেলার নিজ তুলন্দর গ্রামে গিয়ে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করার বিষয়ে জানতে চাইলে আবেদনকারী আমিনুল ইসলাম বলেন, নাছির তাঁর সহপাঠীদের দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন, তাই তিনি মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন।

নাশকতার মামলাও তালিকায়

২০১৩ সালের ৩ ডিসেম্বর ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের জোরপোল এলাকায় বাসে ভাঙচুর, ককটেল নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টার সময় দুই যাত্রী লাফিয়ে পড়ে আহত হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁরা মারা যান। এ ব্যাপারে সাভার মডেল থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল হাশেম বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় মামলা (নম্বর-৬) করেছিলেন। ওই মামলায় মিনহাজ উদ্দিনকে আসামি করা হয়। এ ছাড়া একই বছর ভাঙচুর ও সরকারি কাজে বাধা, বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গাড়িতে অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন ঘটনায় আটটি মামলা হয়।

মামলা প্রত্যাহারের আবেদন প্রসঙ্গে মিনহাজ উদ্দিন বলেন, ‘সাভারের সাবেক সরকারদলীয় সাংসদ তৌহিদ জং মুরাদের ব্যক্তিগত আক্রোশের কারণে আমার বিরুদ্ধে এসব মামলা হয়েছে। আমি কোনো ধরনের নাশকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না।’ তিনি বলেন, ‘তখন বিএনপি করলেও আমি এখন আওয়ামী লীগ করছি। আমি যে আওয়ামী লীগ করি, স্থানীয় সাংসদ এনামুর রহমানও এ বিষয়ে প্রত্যয়ন করেছেন।’

জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান বলেন, এ মামলায় মিনহাজের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।

সাংসদ এনামুর রহমান বলেন, মিনহাজ উদ্দিন মোল্লা আওয়ামী লীগের কোনো পদে না থাকলেও দলের পক্ষে কাজ করেন।

বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলা

২০১৪ সালে খুলনার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে সম্পদ নষ্ট ও ভাঙচুরের দায়ে চার শ্রমিকনেতার বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়। বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা এ মামলার সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এই মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও সাংসদ মন্নুজান সুফিয়ান। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক আধা সরকারি পত্রে (ডিও লেটার) তিনি বলেছেন, ‘এলাকায় ও মিলে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে কর্তৃপক্ষের দায়ের করা এ মামলাটি মানবিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করতে হবে।’

জানতে চাইলে সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ও বর্তমান সাংসদ মন্নুজান প্রথম আলোকে বলেন, এঁরা সবাই আওয়ামী লীগ নেতা। এঁরা কিছুই করেননি।

যাঁদের মামলা প্রত্যাহারে এই উদ্যোগ তাঁরা হলেন ওই পাটকল সিবিএর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হেমায়েত উদ্দিন আজাদী, প্রচার সম্পাদক আবদুল সালাম কালাম, ক্রীড়া সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন ও সিবিএর সহসম্পাদক আবু হানিফ। সাংসদ মন্নুজান তাঁর পত্রে দাবি করেছেন, তাঁরা জাতীয় শ্রমিক লীগের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সম্পৃক্ত।

মামলার আসামি মাওলানা হেমায়েত উদ্দিন আজাদী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সহিংস কিছুই করিনি। উদ্দেশ্যমূলকভাবে এ মামলা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে জামিনে আছি। সাংসদ দৌড়ঝাঁপ করছেন।’

গৃহপরিচারিকা হত্যা মামলা

যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নাসরিনের রাজধানীর আগারগাঁওয়ের তালতলার বাসায় গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করত জেসমিন। ২০১১ সালের ২০ জানুয়ারি একটি কাচের গ্লাস ভেঙে ফেলায় বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী গৃহপরিচারিকা জেসমিনকে মারধর করা হয়। ২৮ জানুয়ারি ভাই রিপন মুন্সি ঢাকায় গিয়ে জেসমিনকে নিয়ে এসে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেসমিন মারা যায়। এ ঘটনায় মামলা করে জেসমিনের পরিবার। ২০১৪ সালের ২০ অক্টোবর তাঁকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা।

ইসরাত জাহান নাসরিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘জেসমিন প্রকৃতপক্ষে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। তার সৎমা তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার পর যুবলীগ নেত্রী নাজমা আমার বাড়িতে নিয়ে এলে আমি আশ্রয় দিই। আমরা ওকে বাড়িতে পাঠানোর পর সে অসুস্থ হয়। সম্ভবত চিকিৎসা করাতে না পারায় মারা যায়। বরিশালের এক কৃষক লীগের নেতার ইন্ধনে আমাকে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে।’

মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন। ইসরাত জাহান নাসরিন ও বরিশালের বাবুগঞ্জ থানা শাখার সাংস্কৃতিক সম্পাদক নাজমা আক্তারকে আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁরা নিজেদের যুব মহিলা লীগের ‘সংগ্রামী কর্মী’ দাবি করে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন।

আলোচিত জামাল হত্যা মামলা

১৩ বছর আগে চট্টগ্রামের বিএনপির নেতা ও শিল্পপতি জামাল উদ্দিন চৌধুরীকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। দুই বছর পর ফটিকছড়ি থেকে তাঁর কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়। মামলাটির ১৪ আসামির একজন নাজিম উদ্দিন জামিনে আছেন। তিনি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার হাইলধর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। উপজেলা শ্রমিক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি আইয়ুব খান প্রথম আলোকে বলেন, জামাল উদ্দিন হত্যা মামলাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় ২০১০ সালের ১৪ অক্টোবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন শাখা বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তির জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করেন। কিন্তু মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকায় এত দিন বিচার শুরু করা যায়নি।

১৩ বছরেও বাবা হত্যার বিচার পাননি, এ অবস্থায় এক আসামির নাম প্রত্যাহারের আবেদন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মামলার বাদী ও নিহত জামাল উদ্দিনের বড় ছেলে চৌধুরী ফরমান রেজা লিটন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

জানতে চাইলে আসামি নাজিম উদ্দিনের মুঠোফোনে কয়েক দিন ধরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মুঠোফোনের খুদে বার্তারও জবাব দেননি। স্থানীয় লোকজন জানান, এলাকায় তাঁকে দেখা যায় না।

 {প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি, সাভার, চাঁদপুর, ঠাকুরগাঁও ও চট্টগ্রামের নিজস্ব প্রতিবেদকপ্রতিনিধি৷}