জয়পুরহাটে মুক্তিপণ না পেয়ে শিশুকে হত্যা

তাওহীদ শামীম শুভ
তাওহীদ শামীম শুভ

জয়পুরহাটের কালাই পৌর এলাকার এক শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। কালাই পৌরসভার মুন্সিপাড়া মহল্লায় শিশুটির বাড়ির পাশের একটি খড়ের গাদার কাছ থেকে গতকাল শনিবার সকালে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
শিশুর বাবার অভিযোগ, অপহরণের পর অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে তাঁর কাছে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল অপহরণকারীরা।
নিহত শিশুটির নাম তাওহীদ শামীম শুভ (৮)। সে কালাইয়ের মুন্সিপাড়া মহল্লার স মিল ও কাঠ ব্যবসায়ী আবদুল গফুর ওরফে তোতা মিয়ার ছেলে এবং কালাই সদরের কাকলি শিশু নিকেতনের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
পরিবার ও কালাই থানা-পুলিশ সূত্র বলেছে, শুভ গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। সারা দিন খোঁজাখুঁজির পর ওই দিন রাতেই গফুর অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে একটি অপহরণ মামলা করেন।
কালাই থানার ওসি নুরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে গতকাল সকালে শুভর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে শুভর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ও নিহত শুভর লাশের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক আতাউর রহমান বলেন, ময়নাতদন্তে মনে হয়েছে, শিশুটিকে শ্বাসরোধেই হত্যা করা হয়েছে। সব তথ্য মিলিয়ে মেডিকেল বোর্ড তার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রস্তুত করবে।
গতকাল শুভর বাড়িতে গেলে তার বাবা গফুর কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ছেলে নিখোঁজের পর শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে একটি মুঠোফোন নম্বর থেকে মিসড কল আসে। ওই নম্বরে বারবার যোগাযোগের পর সন্ধ্যা সাতটার দিকে কেউ একজন ফোনটা ধরেন এবং ছেলের মুক্তিপণ হিসেবে তিন লাখ টাকা দাবি করেন। এরপর রাত আটটায় যোগাযোগ করা হবে জানিয়ে ফোনের লাইন কেটে দেন ওই ব্যক্তি। কিন্তু রাত আটটার পর থেকে মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
গফুরের প্রতিবেশী রাহেলা বেগম বলেন, গতকাল সকাল ছয়টার দিকে তিনি নিজের বাড়ির খড়ের গাদার কাছে বেড়া দিয়ে ঘেরা কাছের একটি খড়ের গাদার পাশে শুভর লাশ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দিয়ে ওঠেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে শুভর লাশ উদ্ধার করে।
ঘটনাস্থলে জয়পুরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) বেলায়েত হোসেন বলেন, শুক্রবার রাতে মামলা দায়েরের পর থেকেই পুলিশ মাঠে নেমেছে। খুব দ্রুত জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।