গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য কাজ করছে কমিশন: সিইসি

চট্টগ্রামে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন সিইসি কে এম নুরুল হুদা। ছবিটি আজ সোমবার নগরের সার্কিট হাউস থেকে তোলা। ছবি: জুয়েল শীল
চট্টগ্রামে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন সিইসি কে এম নুরুল হুদা। ছবিটি আজ সোমবার নগরের সার্কিট হাউস থেকে তোলা। ছবি: জুয়েল শীল

গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। তিনি বলেন, সব দলের অংশগ্রহণের ক্ষেত্র তৈরি করছি।

আজ সোমবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য আমরা অলরেডি কাজ শুরু করে দিয়েছি।’

চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলনকক্ষে আজ জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণ অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে সিইসি প্রধান অতিথি ছিলেন। জেলা প্রশাসক মো. সামশুল আরেফিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী। আরও বক্তব্য দেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম ও উপপরিচালক আবদুল বাতেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিইসি বলেন, পর্যায়ক্রমে ১০ কোটি ১৭ লাখ স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে। স্মার্ট কার্ড সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য প্রযুক্তি। এতে ৩০টির মতো তথ্য থাকবে।

অনুষ্ঠান শেষে সিইসি বলেন, ‘দায়িত্ব নেওয়ার পর এখন পর্যন্ত আমরা সুন্দরভাবে নির্বাচন পরিচালনা করেছি। সামনে যে নির্বাচন পরিচালনা করার পরিকল্পনা, সেগুলোও আশা করি ভালোভাবে হবে। আশা করি, আমাদের কার্যক্রম ভালো হবে। আর যদি ভালো হয়, তাহলে আমার বিশ্বাস সব রাজনৈতিক দল নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে আসতে পারেন, সে রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ম্যাজিস্ট্রেট যাঁরা আছেন, তাঁদের তৎপর রাখা হবে। যাতে কোনো রকমের কারচুপি না হয়। ভোট দিয়ে নিরাপদে ফিরে যেতে পারেন, এ রকম পরিবেশ তৈরির কাজ করছি।’

মাগুরার মতো বিতর্কিত নির্বাচনের আশঙ্কার বিষয়ে সিইসি বলেন, ‘অবশ্যই ব্যতিক্রম হবে। সেটা ছিল একটা পরিস্থিতি। সব পরিস্থিতি তো সব সময় এক রকম থাকে না। আমাদের সময়ে নির্বাচন পরিস্থিতি তেমন হবে বলে আমার মনে হয় না। কারণ সব দল অংশগ্রহণ করলে নির্বাচন পরিস্থিতি আর তেমন হবে না।’
আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা হবে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যেসব ইস্যু নিয়ে আমাদের আলোচনা দরকার, সেগুলো নিয়ে কথা বলতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে। তবে কীভাবে রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগ হবে—এসব বিষয় নিয়ে নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করব। আর রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শ যদি থাকে, তারা যদি আমাদের দেয়, আমরা স্বাগত জানাব।’
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘কুমিল্লায় সেনাবাহিনী থাকার আপাতত প্রয়োজন নেই। যদি আমাদের কাছে প্রয়োজন মনে হয়, তাহলে সেনাবাহিনী আসবে। এ জন্য তাদের (সেনাবাহিনী) প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনে যাঁরা কাজ করবেন, তাঁদের সঙ্গে সভা করেছি। তাঁরা আশ্বস্ত করেছেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে তাঁদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। নিরাপদে যাতে সবাই ভোট দিতে পারেন এবং ভোট দিয়ে ফিরে যেতে পারেন, সে ব্যবস্থা করব।’
এর আগে সিইসি সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, অধ্যাপক অনুপম সেন, কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন এবং চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল হকের হাতে নিজ নিজ স্মার্ট কার্ড তুলে দেন।