গাজীপুরে জরাজীর্ণ সেতু দিয়েই চলছে যানবাহন

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বরদল এলাকায় একটি সেতু জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে। এই সেতু দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর সদরের সঙ্গে উপজেলার প্রায় ৩০টি গ্রাম ও ঢাকার ধামরাইয়ের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম কালিয়াকৈর-ধামরাই সড়ক। এই পথে প্রতিদিন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীবাহী বাস, যাত্রীবাহী বাস, ১০-১২টি ইটভাটার ট্রাকসহ ছোট-বড় বহু যানবাহন চলাচল করে। এ ছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজট তৈরি হলে বিকল্প হিসেবে এই সড়কে চাপ বাড়ে। এই সড়কে বেশ কয়েকটি সেতু আছে। এসব সেতুর অবস্থা নড়বড়ে। তবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে কালিয়াকৈর ডিগ্রি কলেজসংলগ্ন সেতুটি। এটি নির্মাণ করা হয়েছে ৩০-৩৫ বছর আগে। ১০-১২ দিন আগে সেতুর একাংশ ভেঙে এক ফুট দেবে গেছে। এরপর দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্কতা হিসেবে সেতুটির দুপাশে লাল নিশান টানানো হয়েছে। পাশাপাশি ভারী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা-সংবলিত নোটিশ টাঙিয়ে দিয়েছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। কালিয়াকৈর থানার পুলিশও সেতুটি পরিদর্শন করেছে, কিন্তু যানবাহন চলাচলের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি।
গতকাল সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিয়াকৈরের সাহেববাজার এলাকা থেকে কালিয়াকৈর-ধামরাই সড়কটির শুরু। এরপর প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে গিয়ে দেখা যায়, কালিয়াকৈর ডিগ্রি কলেজসংলগ্ন সেতুটি নাজুক অবস্থায় আছে। কয়েক বছর আগে সেতুটির মাঝখানের অংশের ঢালাই ভেঙে পড়েছিল। সেখানে মাটিভর্তি বস্তা ও আবর্জনা ফেলে তার ওপর স্টিলের পাত দিয়ে কোনো রকমে সচল রাখা হয় সেতুটি। কিন্তু তার পাশেই ঢালাই খসে পড়ছে। সেতুর উত্তর অংশে ফাটল ধরেছে। উত্তর-পূর্ব কোণের কিছু অংশ ভেঙে এক ফুট দেবে গেছে। ছোট-বড় গাড়ি যাচ্ছে আর ঢালাই খসে খসে পড়ছে। রডও বের হয়ে গেছে।
পিকআপচালক মফিজুল ইসলাম বলেন, বিকল্প সড়ক না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই এ সেতু দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। ট্রাকচালক মেহের আলী বলেন, ‘ধামরাই থেকে মির্জাপুরের গোড়াই যাচ্ছি। এটাই সহজ রাস্তা। তবে সেতুটির এই অবস্থার কথা জানা ছিল না। তাই ঝুঁকি নিয়ে কোনোভাবে অতিক্রম করার চেষ্টা করছি।’
কালিয়াকৈর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সৈয়দা রিমু আক্তার বলে, ‘ভেঙে দেবে যাওয়ার বিষয়টি জানার পর কর্তৃপক্ষ শুধু ভারী যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী ঘোষণা করেছে সেতুটিকে। এতেই তাদের দায় শেষ। যানবাহন চলাচলের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। সেতুতে যানবাহন চলাচলের সময় দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকতে হয়।’
কালিয়াকৈর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবদুল হাই বলেন, ‘এই অঞ্চলের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তা এটি। ইতিমধ্যে সেতুর কিছু অংশ ধসে গেছে। এই সেতুর ওপর দিয়ে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীবাহী ও যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। যেকোনো সময় সেতুটি ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, যাতে ঘটতে পারে প্রাণহানির মতো ঘটনা।’
সড়ক ও জনপথ বিভাগ গাজীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিন রেজা বলেন, সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে একটি বেইলি সেতু নির্মাণ করা হবে। বেইলি সেতুর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।