ভূঞাপুরে দলীয় নেতা হত্যায় দুই আ.লীগ নেতার আবার রিমান্ড

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা রকিবুল ইসলাম ওরফে ফরিদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া দলের দুই নেতাকে দ্বিতীয় দফায় তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এদিকে এ মামলায় গোয়েন্দা পুলিশ চান মিয়া নামের আরও একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, আজ মঙ্গলবার শুনানি শেষে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নওরিন মাহবুব তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
দ্বিতীয় দফা রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া দুই নেতা হলেন ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তাহেলুর ইসলাম ওরফে তোতা এবং অলোয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম সরকার। এঁদের দুজনকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ১৪ মার্চ ঢাকার গুলশান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন তাঁদের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গত শনিবার গোয়েন্দা পুলিশ আদালতে হাজির করে তাঁদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।
টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা অশোক কুমার সিংহ বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা প্রথম দফা রিমান্ডে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। সেগুলো নিয়ে চলছে তদন্ত। আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দ্বিতীয় দফায় রিমান্ড চাওয়া হয়েছে।
এ হত্যার ঘটনায় গত সোমবার সন্ধ্যায় লাল মাহমুদ ওরফে লাল চান নামে একজনকে টাঙ্গাইলের ডিসি লেক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। লাল চান ভূঞাপুর উপজেলার ভারই মধ্যেপাড়া গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তাঁকে টাঙ্গাইল বিচারিক আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। আজ আগামীকাল রিমান্ড আবেদনের শুনানির তারিখ দিয়েছেন আদালত।
অপর দিকে আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ ও নিহত রকিবুলের গ্রামবাসী।
আজ সকালে বিক্ষোভ মিছিল টাঙ্গাইল কোর্ট চত্বর প্রদক্ষিণ করে। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনে অংশ নেন তাঁরা। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে রকিবুল হত্যার বিচারের দাবিতে স্মারকলিপি দেন।
গত ৬ ডিসেম্বর সকালে ভূঞাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রকিবুল ইসলামের গলাকাটা মরদেহ তাঁর নিজ গ্রাম ভারই মধ্যপাড়ার একটি নির্জন পুকুরপাড় থেকে উদ্ধার করা হয়। আগের দিন রাত সাড়ে নয়টার পর তিনি নিখোঁজ হন। ওই দিনই রকিবুলের ভাই ফজলুল করিম বাদী হয়ে ভূঞাপুর থানায় মামলা করেন।
মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। পরে ফজলুল করিম বাদী হয়ে গত ১৫ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে আরও একটি সম্পূরক মামলা করেন। সে মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক তাহেরুল ইসলাম, অপর যুগ্ম আহ্বায়ক ও জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত সদস্য আবদুল হামিদ মিয়া ওরফে ভোলা, অলোয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম সরকারসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়।