ত্রিপুরা-বাংলাদেশ তিনটি রেল সংযোগ স্থাপনের কথা বিবেচনা করছে ভারত

ভারতের ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের তিনটি রেল সংযোগ স্থাপনের কথা বিবেচনা করছে ভারতীয় রেল। এর মধ্যে আগরতলা-আখাউড়া ১৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের জন্য সীমান্তের উভয় পারেই চলছে জমি অধিগ্রহণের কাজ। দক্ষিণ ত্রিপুরার বিলোনিয়া থেকে ফেনী হয়ে চট্টগ্রাম রেলসংযোগ স্থাপনের বিষয়ে শিগগিরই জমি সমীক্ষার কাজ শুরু হবে। আর খোয়াই থেকে বাংলাদেশের শায়েস্তাগঞ্জ রেলসংযোগ স্থাপনে ত্রিপুরা সরকারের নয়া প্রস্তাবও বিবেচনা করবে ভারতীয় রেল দপ্তর।

বৃহস্পতিবার আগরতলায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ভারতের কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী রাজেন গোঁহাই। ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায় ও মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, রাজ্য সরকার এপ্রিল মাসের মধ্যেই আগরতলা থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের জন্য জমি হস্তান্তরে রাজি হয়েছে। জমি পেলে ৩০ মাসের মধ্যে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ে নির্মাণকাজ শেষ করবে।’ একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের অভ্যন্তরেও জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে। রাজেন গোঁহাইয়ের দাবি, ‘আগরতলা-আখাউড়া রেলপথ চালু হলে ত্রিপুরার মানুষ গুয়াহাটি হয়ে দেড় হাজার কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে নয়, সহজেই মাত্র ৬০০ কিলোমিটার রেলযাত্রা করেই পৌঁছে যেতে পারবেন কলকাতায়।’ তিনি জানান, এর পাশাপাশি দক্ষিণ ত্রিপুরার বিলোনিয়া থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের জন্য জরিপ করবে ভারতীয় রেল।

উত্তর পূর্ব রেলের নির্মাণ বিভাগের প্রধান এস কে জাগ্গি জানান, বিলোনিয়ায় প্রস্তাবিত রেলস্টেশন থেকে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশ সীমান্ত। সেখান থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে ফেনী রেলস্টেশন। বিলোনিয়া থেকে ফেনী হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রেলসংযোগ স্থাপনের জন্য জরিপ করবে ভারতীয় রেল। বাংলাদেশের ভেতরে জমি জরিপের কাজ করার জন্য ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে রেল দপ্তরের তরফ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। খোয়াই-শায়েস্তাগঞ্জ রেল সংযোগের বিষয়টি এখনো রেলকর্তাদের আলোচনার স্তরেই রয়েছে বলে জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রীর দাবি, ত্রিপুরার সঙ্গে বাংলাদেশের রেলসংযোগ স্থাপিত হলে শুধু ত্রিপুরাই নয়, গোটা উত্তর পূর্ব ভারতই উপকৃত হবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, ত্রিপুরা, মণিপুর বা মিজোরাম হয়ে মিয়ানমার দিয়ে ট্রান্স এশিয়া রেল মানচিত্রে বাংলাদেশও অদূর ভবিষ্যতে সংযুক্ত হবে। কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, ত্রিপুরা থেকে মাত্র ৯৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করলেই পৌঁছানো যাবে মিয়ানমারে। তিনি বলেন, ‘সবদিকই বিবেচনা করছে রেল মন্ত্রণালয়। ভারত সরকারের অ্যাক্ট ইস্ট পলিসির লক্ষ্যই তো এটা। যোগাযোগ উন্নয়নের প্রথম শর্ত। রেল সেই কাজটাই করবে।’