মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম পরিচালনায় বাধা নেই

প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের কার্যক্রম পরিচালনায় আইনগত বাধা কেটেছে। এ বিষয়ে দেওয়া আদেশ সংশোধন করে দিয়েছেন উচ্চ আদালত।

আজ মঙ্গলবার বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি এম ফারুকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের করা সংশোধন আবেদনের শুনানি নিয়ে আদেশ দেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করিম ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এ আর এম হাসানুজ্জামান।

অন্যদিকে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম সাইফুল বারী ও আইনজীবী আব্দুল মান্নান।

পরে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এ আর এম হাসানুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ১৯ জানুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে ৪৭০টি কমিটি গঠন করা হয়। মন্ত্রণালয়ের ওই স্মারকের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দুটি উপজেলা কমিটি গঠন নিয়ে হাইকোর্টে পৃথক রিট হয়। শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুলসহ মন্ত্রণালয় পুরো স্মারকের কার্যকারিতা স্থগিত করে দেন। একটি মামলা শুনানিতে গত সপ্তাহে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মার্চের একটি স্মারক নজরে এলে আদালত বলেন, পুরো স্মারক স্থগিত করা হয়নি। এ অবস্থায় রাষ্ট্রপক্ষ আগে দেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ সংশোধন চেয়ে আবেদন করে। হাসানুজ্জামান বলেন, হাইকোর্ট একটিতে (ফরিদপুর উপজেলা) রুল খারিজ করে দিয়েছেন। ফলে ৪৭০ টির ক্ষেত্রে কার্যক্রম পরিচালনায় স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হলো। অপরটিতে (টুঙ্গিপাড়া) স্থগিতাদেশ বহাল রেখে আদেশ সংশোধন করে দিয়েছেন, শুধু টুঙ্গিপাড়া হবে। ফলে টুঙ্গিপাড়া ছাড়া বাকি যাচাই-বাছাইয়ের কার্যক্রম পরিচালনায় আইনগত কোনো বাধা নেই।

আইনজীবী সূত্র বলেছে, ৪৫৯টি উপজেলা কমিটি, তিনটি জেলা কমিটি ও আটটি মহানগর কমিটি (৪৭০ টি) পুনর্গঠন করে গত ১৯ জানুয়ারি আদেশ জারি করে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। যথাযথভাবে কমিটি গঠন করা হয়নি উল্লেখ করে রিট (১০২৭ / ২০১৭) করেন ফরিদপুরের একটি উপজেলা নিয়ে এক মুক্তিযোদ্ধা। আর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নিয়ে অপর রিটটি (১১০৮ / ২০১৭) করেন আরেক মুক্তিযোদ্ধা। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৩ জানুয়ারি ও ২৯ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ চার মাসের জন্য কার্যক্রম পরিচালনায় স্থগিতাদেশ দেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এক আদেশে গত ১৯ জানুয়ারি প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির ওই কার্যক্রম স্থগিত করে। এরপর হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে দুটি আবেদন করে, শুনানি নিয়ে ৩০ মার্চ আদালত হাইকোর্টে রুল শুনানি করতে বলেন। এর ধারাবাহিকতায় রুল শুনানির জন্য ওঠে।

এ দিকে আপিল বিভাগের আদেশের কপি পাওয়া যায়নি জানিয়ে ৫ এপ্রিল এক বিজ্ঞপ্তিতে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপজেলা বা জেলা বা মহানগর যাচাই-বাছাই সকল (৪৭০ টি) কমিটির কার্যক্রম স্থগিত রাখা হল। ১১০৮ নম্বর রিট মামলায় আট জেলা এবং ১০২৭ নম্বর রিট মামলায় সকল (৪৭০ টি) যাচাই-বাছাই কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয় বলে এতে উল্লেখ করা হয়।