ঘরে ঢুকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা, ছাত্রীর আত্মহত্যা

জয়পুরহাটের এক দরিদ্র পরিবারের মেয়ে মুনিশা বেগম (১৭)। লেখাপড়া শিখে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছিল। কিন্তু সে স্বপ্নপূরণের আগেই না-ফেরার দেশে চলে গেল মুনিশা।

পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় বখাটে শাহিন হোসেন (২৫) গত বৃহস্পতিবার বাড়িতে একা পেয়ে মুনিশার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। অপমান সহ্য করতে না পেরে সেদিন রাতেই গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে সে।

মুনিশা জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার উৎরাইল গ্রামের মোজাহার হোসেনের মেয়ে। উপজেলার নান্দাইল দীঘি কলেজের একাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল সে। আর শাহিন হোসেন উৎরাইল গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে।

মামলা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শাহিন প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন মুনিশাকে। এ ব্যাপারে মুনিশার মা-বাবা অভিযোগ করলেও শাহিনের পরিবার বিষয়টিকে পাত্তা দেয়নি। গত বৃহস্পতিবার সকালে মুনিশার বাবা মোজাহার হোসেন জরুরি কাজে বগুড়ার শিবগঞ্জে যান। আর মা মনোয়ারা বেগম ১০ টাকা কেজি দরের চাল কিনতে পুনট ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) যান। বাড়িতে একা পেয়ে মুনিশার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন শাহিন। ক্ষোভে, অভিমানে ওই দিন রাত আটটার দিকে নিজের ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে মুনিশা। খবর পেয়ে কালাই থানা-পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

মনোয়ারা বেগম বলেন, পুনট ইউপি থেকে ফেরার পর মেয়ের কাছে জানতে পারেন, শাহিন বাড়িতে ঢুকে মুনিশাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন।

মুনিশার বাবা মোজাহার আলী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার আমি ও আমার স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে শাহিন বাড়িতে ঢুকে আমার মেয়েকে শ্লীলতাহানি করে এবং খারাপ প্রস্তাব দেয়। মুনিশা তা সহ্য করতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।’

কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুজ্জামান চৌধুরী গতকাল মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে মুনিশার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় শাহিন, তাঁর বাবা মন্টু মিয়া ও মা ফাহিমা বেগমকে আসামি করে কালাই থানায় মামলা করেছেন মোজাহার হোসেন। তবে আসামিরা পলাতক রয়েছেন। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।