কাউকে পাওয়া যায়নি, বিস্ফোরক উদ্ধার

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামে ‘জঙ্গি আস্তানা’ সন্দেহে একটি বাড়িতে গতকাল শুক্রবার অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তবে কোনো জঙ্গিকে পাওয়া যায়নি। সেখানে প্রচুর বিস্ফোরক, গ্রেনেড ও বোমাভর্তি আত্মঘাতী বন্ধনী (সুইসাইডাল ভেস্ট) পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের অতিরিক্ত উপকমিশনার ছানোয়ার হোসেন বলেন, গতকাল বিকেল পাঁচটার পর সদর উপজেলার পোড়াহাটি গ্রামের কয়েকটি বাড়ি ঘিরে রাখেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সেখানকার একটি বাড়িতে ‘জঙ্গি আস্তানা’ রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। পরে সেখানে অভিযান চালিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে বাড়িটির ভেতর বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ প্রচুর বিস্ফোরক পাওয়া গেছে।
জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে দুই কক্ষের টিনের যে বাড়িতে অভিযান চালানো হয়, সেটির মালিক আবদুল্লাহ নামের এক ব্যক্তি। ঘিরে রাখা বাড়িটিতে অভিযান সাময়িক স্থগিত করেছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে সংবাদ ব্রিফিংয়ে পুলিশের খুলনা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) দিদার আহম্মদ বলেন, রাতের যেকোনো মুহূর্তে বা শনিবার সকাল থেকে অভিযান আবারও চালানো হবে। তিনি বলেন, ওই বাড়িতে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক, বোমা তৈরির সরঞ্জাম ও অস্ত্র আছে। বাড়ির মালিক আবদুল্লাহ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তিনি জেএমবির সদস্য। আবদুল্লাহ পাঁচ বছর আগে সনাতন ধর্ম থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, ঝিনাইদহের ওই জঙ্গি আস্তানা থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তল, তিনটি সুইসাইডাল ভেস্ট, প্রেশার কুকার বোমা, ২০ কনটেইনার ভরা রাসায়নিক এবং প্রচুর পরিমাণে তৈরি বোমা (আইইডি) ও ডেটোনেটর পাওয়া গেছে।
পোড়াহাটি গ্রামের বাসিন্দা চাঁদ আলী বলেন, বিকেলে হঠাৎ করে গ্রামে পুলিশের একাধিক গাড়ি আসে। পুলিশ এরপর আবদুল্লাহর বাড়ি ঘিরে ফেলে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশের পাহারা বসানো হয়। ওই বাড়ির আশপাশের বাড়ির লোকজনকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে কী ঘটেছে তা তাঁরা জানেন না।
ওই গ্রামের আরেক বাসিন্দা বলেন, আবদুল্লাহ বর্তমানে যেখানে বাড়ি করেছেন, আগে এর আধা কিলোমিটার দূরে গ্রামেরই আরেক প্রান্তে থাকতেন।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, ওই বাড়িতে জঙ্গি আস্তানা আছে এমন খবরের ভিত্তিতে তাঁরা অভিযানে নামেন।
অভিযানের আগে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে পোড়াহাটি গ্রামের মোড়ে মোড়ে সোয়াট, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা যায়।
গত মার্চ মাসে চট্টগ্রাম, সিলেট, মৌলভীবাজারে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নারীসহ বেশ কয়েকজন জঙ্গি নিহত হয়। তবে কুমিল্লার কোটবাড়ীতে একটি জঙ্গি আস্তানা থেকে বিস্ফোরক পাওয়া গেলেও কাউকে পাওয়া যায়নি।