খালেদাকে চুপ থাকতে বললেন হাসিনা

বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সহিংসতা চালিয়ে নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছেন। এখন চুপ থাকেন। কোনো কিছুই ঠেকাতে পারবেন না।’

আজ মঙ্গলবার রাত সাড়ে সাতটায় গণভবনে ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে  বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি হয়তো ভেবেছিল বাধা দিয়ে একটা সাংবিধানিক ক্রাইসিস তৈরি করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করবে। কিন্তু জনগণ তাদের সে সুযোগ দেয়নি। নির্বাচনে ৪০ ভাগ ভোট পড়েছে। অনেক উন্নত দেশে এত ভোট পড়ে না। এত বাধা অতিক্রম করেও যখন ভোট হয়েছে, তখন আর কী করবেন? আমি এখন এটাই চাইব, ওনার যেন একটু হুঁশ ফিরে আসে। উনি যেন জনগণকে আর কষ্ট না দেন।’

আলোচনার দরজা খোলা, উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জামায়াত আর যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গ ছেড়ে যদি আলোচনা করতে আসেন, তবে আমরা আলোচনা করে আগামী দিনে কীভাবে চলা যায়, সেটা দেখব। তবে হাইকোর্টে নিষিদ্ধ জামায়াতের সঙ্গ ছেড়ে আসতে হবে।’

সুশীল সমাজের কড়া সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিছু কিছু লোক গণতন্ত্র চাইবে না, এটা আমরা জানি। যারা ভাবে, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা থাকলে, গণতান্ত্রিক সরকার থাকলে তাদের কোন মূল্য নাই। আবার কেউ কেউ ভাববে, অগণতান্ত্রিক কেউ এলে তাদের গাড়িতে পতাকা উড়বে। তাদের ফাইভ স্টার হোটেলে বসে মিটিং করে বাংলাদেশের সর্বনাশ করার চিন্তা ছাড়া উচিত। ওসব জায়গায় মিটিংয়ের খবর আমাদের কাছে আছে। তাই একটু সচেতন থাকা ভালো।’

গণমাধ্যমগুলোর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের উচিত গণতান্ত্রিক ধারাকে অব্যাহত রেখে কাজ করা। অবশ্য কিছু কিছু মিডিয়ার অগণতান্ত্রিক হলেই কদর বাড়ে। প্রাইভেট চ্যানেলগুলো তো আমাদেরই দেওয়া।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে কেউ প্রাইভেট চ্যানেল দেওয়ার সাহসই পাননি। ’৯৬ সালে আমিই দিয়েছি। অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছি। মানুষের কর্মসংস্থানটা কীভাবে বাড়ে সে চিন্তাটা আমি করেছি।’

গণমাধ্যমগুলোকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলেন, ‘মিডিয়াগুলোকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। তারা অনেক কাজ করেছে, যেটা আমাদের সহযোগিতা করেছে। আবার অনেক কাজ করেছে যেটা সন্ত্রাসে সহায়তা করেছে। আগুনের ছবি দেখিয়েছে। অনেকে আবার দেশলাই দিয়েছে। সবারই একটা দেশের প্রতি দায়িত্ব আছে। একটু দৃষ্টি দিতে হবে যাতে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।’

আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না, উল্লেখ করে হাসিনা বলেন, বিএনপি ২০০১ সালে প্রতিহিংসার রাজনীতি করেছে। সাধারণ মানুষসহ আওয়ামী লীগ ও সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করেছে। এখনো তাদের অভ্যাস বদলায়নি। এখন আবার তারা সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা করছে। যেখানে যেখানে হামলা হচ্ছে, সেখানে ব্যাপক অভিযান চালানো হবে। যারা এসবের সঙ্গে জড়িত, তাদের কঠিন শাস্তি দেওয়া হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানুষ্যসৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে ও প্রাকৃতিক বৈরী পরিবেশেও মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছে, এজন্য সবাইকে ধন্যবাদ।’

বৈঠকে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদসহ আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।