নিখোঁজের ১৫ দিন পর গৃহবধূর লাশ উদ্ধার

পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সেহাংগল গ্রাম থেকে নিখোঁজ হওয়ার ১৫ দিন পর রোজিনা আক্তার (২৮) নামের এক গৃহবধূর গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার দুপুরে পিরোজপুর সদর উপজেলার নলবুনিয়া গ্রামের কচা নদীর পাড় থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। রোজিনার মা পিয়ার বেগম ও ভাই পলাশ খান পরনের পোশাক দেখে লাশটি রোজিনার বলে শনাক্ত করেন।

রোজিনা আক্তার নেছারাবাদ উপজেলার সেহাংগল গ্রামের দিনমজুর ইলিয়াস হোসেনের স্ত্রী। রোজিনার নিখোঁজ হওয়ার পর পুলিশ ইলিয়াসকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

পুলিশ ও রোজিনার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইলিয়াস হোসেনের সঙ্গে সাত বছর আগে ঝালকাঠী সদর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের রোজিনার বিয়ে হয়। ওই দম্পতির দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর থেকে ইলিয়াস বিভিন্ন সময়ে যৌতুকের জন্য রোজিনা আক্তারকে শারীরিক নির্যাতন করতেন। ৪ মে রাতে ইলিয়াসের সঙ্গে রোজিনার ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে ইলিয়াস ঘর থেকে বের হয়ে যান। এরপর রোজিনা স্বামীকে খোঁজার জন্য বের হন। একই সময় ইলিয়াসের পরিবারের সদস্যরাও ইলিয়াসকে খুঁজতে বের হন। গভীর রাতে ইলিয়াস তাঁর পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে ফিরে এলেও রোজিনা ফেরেননি।

এরপর রোজিনার শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে আসেন রোজিনার মা পিয়ারা বেগম। মেয়ের খোঁজ জানতে চাইলে ইলিয়াস জানান, রোজিনার সঙ্গে তাঁর (ইলিয়াস) দেখা হয়নি। রোজিনাকে না পেয়ে ৭ মে রোজিনার ভাই পলাশ খান নেছারাবাদ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ৯ মে পুলিশ রোজিনার স্বামী ইলিয়াসকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। ইলিয়াস রোজিনার বিষয়ে কোনো তথ্য না দেওয়ায় ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। ইলিয়াস বর্তমানে পিরোজপুর কারাগারে রয়েছেন।

আজ শুক্রবার সকালে পিরোজপুর সদর উপজেলার শারিকতলা ডুমরিতলা ইউনিয়নের নলবুনিয়া এলাকায় কচা নদীর পাড়ে স্থানীয় লোকজন একটি গলিত লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। খবর পেয়ে দুপুরে রোজিনার মা পিয়ার বেগম ও ভাই পলাশ খান ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের পরনের পোশাক দেখে লাশ শনাক্ত করেন।

রোজিনার মা পিয়ারা বেগম অভিযোগ করেন, দাম্পত্য কলহের জের ধরে ইলিয়াস রোজিনাকে হত্যা করেছেন।

পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমুর রহমান বিশ্বাস বলেন, পিরোজপুর সদর হাসপাতালের মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এ ঘটনায় নেছারাবাদ থানায় মামলা হবে। নেছারাবাদ থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, রোজিনাকে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। এ ঘটনায় হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।