দুঃখীদের ভাগ্য পরিবর্তনে সংগ্রাম চলবে: প্রধানমন্ত্রী

গণভবনে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় হাত নেড়ে নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বাসস।
গণভবনে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় হাত নেড়ে নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বাসস।

দুঃখী মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত সংগ্রাম চলবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘নেতা হয়ে কী পেলাম, কী পেলাম না—এটা ভাবা যাবে না। জাতিকে কী দিতে পারলাম, সেটাই ভাবনার বিষয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগকে কাজ করতে হবে।’

আজ শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংগঠনের বর্ধিত সভার প্রারম্ভিক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণকে কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছানোর জন্য দেশকে সঠিক রাস্তায় পরিচালিত করাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য। এটা বারবার প্রমাণিত যে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই কেবল দেশের উন্নতি হয়।

দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সভায় উদ্বোধনী বক্তৃতা করেন। বৈঠকের শুরুতে সংগঠনের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাম শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন। প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

এক ঘণ্টার বেশি সময়ের বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের শাসনামলে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন এবং বিএনপির রাজনীতির নামে বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনকে লক্ষ্য রেখে জনসমর্থন আদায়ে সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের প্রত্যেক ভোটারের কাছে পৌঁছাতে হবে।

আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলেন, ‘নেতা হয়ে কী পেলাম, কী পেলাম না—এটা ভাবা যাবে না। জাতিকে কী দিতে পারলাম, সেটাই ভাবনার বিষয়। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগকে কাজ করতে হবে।’

দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে যেন কোনো অনিয়ম না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ক্ষমতা ভোগের কোনো বস্তু নয়, ক্ষমতা দায়িত্ব পালনের। প্রতিটি ঘণ্টা, প্রতিটি মিনিট, প্রতিটি সেকেন্ড দায়িত্ব পালন করতে হবে। জনগণের কল্যাণে কাজ করে যেতে হবে। কোনো বিশ্রাম নেই।

শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সকাল সাড়ে ১০টায় এ সভা শুরু হয়। সভায় সারা দেশ থেকে আসা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, তথ্য গবেষণা ও দপ্তর সম্পাদকেরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী কমিটি, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং সাংসদেরাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

নকল করে হয়তো পাস করা যায়
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ঘোষিত ভিশন-২০৩০ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি নেত্রী একটি ভালো জিনিস শিখেছেন বহু যুগ পরে। এত যুগ পরে তাদের মাথায় এল। তারা ভিশন-২০৩০ দিয়েছে। যাহোক, মানুষই মানুষের কাছে শেখে। তারা আওয়ামী লীগের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছে। নকল করে হয়তো পরীক্ষায় পাস করা যায়, কিন্তু দেশের জনগণের দায়িত্ব এটা বিবেচনা করার। চুরিবিদ্যা বড় বিদ্যা যদি না পড়ে ধরা।’

বিএনপির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা হত্যা ও সহিংসতার পথ ছেড়ে জাতির সামনে একটা বিষয় তুলে ধরেছে, তবু ভালো। খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ যে এত দিন পরে হলেও ভিশন-২০৩০-এর মতো পরিকল্পনা ঘোষণা করতে পেরেছেন।’

বর্ধিত সভায় উদ্বোধনী বক্তা হিসেবে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। আর এ জন্য স্মার্ট, আধুনিক, সুসংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ হয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামী নির্বাচন মোকাবিলা করতে হবে। জনগণের সঙ্গে ভালো আচরণ করতে হবে।