বাজেট প্রত্যাখ্যান সিপিবি বাসদের, স্বাগত জাসদের

২০১৭-১৮ অর্থবছরের ঘোষিত বাজেটকে ‘গরিব মারার’, ‘জনগণের কাঁধে করের বোঝা চাপানোর’ এবং ‘লুটপাট ও দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষক’ হিসেবে উল্লেখ করেছে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও সংগঠন।

এই বাজেট প্রত্যাখ্যান করে ৫ জুন সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা। তবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) এই বাজেটকে স্বাগত জানিয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করার পর রাতে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে দলগুলো আলাদা বিবৃতি দেয়।

সিপিবি

দলটির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম এই বাজেটকে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ গরিব মারার বাজেট ও ধনীদের স্বার্থ রক্ষার দলিল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁরা বলেছেন, এই বাজেট মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী আদর্শে প্রণীত হয়েছে। ঢালাওভাবে যে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আদায়ের প্রস্তাব সব পণ্য ও সেবার মূল্যবৃদ্ধি ঘটিয়ে মূল্যস্ফীতির হারকে অসহনীয় পর্যায়ে নিয়ে যাবে। তাঁরা ‘বিশাল’ এই বাজেটের সমালোচনা করে বলেন, বাজেটের অর্থ সংস্থানের জন্য ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের ব্যয় বাড়বে। দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত মানুষকেই এই দুঃসহ ভারের বোঝা বহন করতে হবে।

বাসদ

দলটির সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বিবৃতিতে বলেছেন, বিশাল বাজেটের নামে বিপুল করের বোঝা জনগণের ওপর চাপানো হয়েছে। তিনি এই বাজেটকে আমলাতান্ত্রিক, অগণতান্ত্রিক, ঋণনির্ভর, ধনীদের স্বার্থ রক্ষাকারী এবং জনগণের ওপর বিশাল করের বোঝা চাপানোর দলিল বলে উল্লেখ করেন। বাসদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান খালি করে তা আবার ভরার জন্য জনগণের ওপর করের বোঝা চাপানো হয়েছে।

বাজেটের বিরোধিতা করে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার অন্তর্ভুক্ত কয়েকটি সংগঠন। এর মধ্যে গণসংহতি আন্দোলন, বাসদ (মার্ক্সবাদী), ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি রয়েছে।

জাসদ

দলের কার্যকরী সভাপতি রবিউল আলম ও সম্পাদক শিরীন আখতার বাজেটকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট প্রাক্কলন জাতীয় সক্ষমতারই বহিঃপ্রকাশ। তাঁরা বলেন, বাজেটে অবকাঠামো, শিক্ষা, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ধারাকে আরও বেগবান করবে।

গণসংহতি আন্দোলন বিবৃতিতে বলেছে, এই বাজেটের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, জনগণের ওপর অভূতপূর্ব পরিমাণে ট্যাক্স আরোপ। সরকার আয়কর বা শুল্ক বাড়ানোর চেয়ে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে জনগণের কাছ থেকে ভ্যাট আদায়ে। অর্থাৎ জনগণের ওপর সব দিক থেকেই বাড়তি ব্যয়ের বোঝা চাপবে।