লংগদু হামলায় ক্ষতি প্রায় সাত কোটি টাকা

লংগদুতে পাহাড়ি গ্রামে হামলায় পুড়ে যাওয়া একটি বাড়ি। ছবিটি ৩ জুন তোলা। ছবি: সাধন চাকমা
লংগদুতে পাহাড়ি গ্রামে হামলায় পুড়ে যাওয়া একটি বাড়ি। ছবিটি ৩ জুন তোলা। ছবি: সাধন চাকমা

রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় পাহাড়িদের বসতবাড়িতে হামলার ঘটনায় ৬ কোটি ৬১ লাখ ৮৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় ২১৩টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত এবং আটটি দোকান পুড়ে গেছে। 

পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে রাঙামাটির জেলা প্রশাসকের পাঠানো এক প্রতিবেদনে এই হিসাব তুলে ধরা হয়েছে।
স্থানীয় যুবলীগের এক নেতার মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে ২ জুন সকালে লংগদু উপজেলা সদরের চারটি গ্রামে পাহাড়িদের দুই শতাধিক বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো হচ্ছে তিনটিলা, মানিকজোড়ছড়া, বাত্যাপাড়া ও বড়াদম। ঘটনার সময় দুই শতাধিক পাহাড়ি পরিবার পালিয়ে যায়।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসকের প্রতিবেদনে জানা যায়, ১ জুন সড়কের চারমাইল এলাকায় রাঙামাটির লংগদু ইউনিয়নের যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের লাশ পাওয়া। তিনি ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতেন। স্থানীয় বাঙালিরা এ ঘটনার জন্য পাহাড়ের আঞ্চলিক সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে দায়ী করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লংগদু উপজেলায় আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। তারা দুর্গম এলাকায় বনে পরিত্যক্ত ঘর, গাছতলায় অবস্থান করছে। শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের নিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহায় পরিবারগুলো।
এর আগে এ ঘটনায় বিচারিক তদন্ত চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।
নোটিশে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতির নেতৃত্বে এই তদন্ত কমিটি করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থাও করতে বলা হয়েছে।
এ সহিংস ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্‌ঘাটন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের লক্ষ্যে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনারের সভাপতিত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পাহাড়িদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পক্ষে গত শনিবার একটি মামলা হয়েছে। মামলায় লংগদু উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. নাছির উদ্দিনসহ ৯৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় ২০০ থেকে ৩০০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।