ক্লিকেই ইফতার!

কেয়া আলমের বাসায় ইফতার করার আবদার করছেন তাঁর বন্ধুরা। তাঁদের কথা, এতে ইফতারের পাশাপাশি লম্বা আড্ডাও দেওয়া যাবে। বন্ধুদের জন্য এমন আয়োজন করতে পারাটা আনন্দদায়ক। কিন্তু অফিস সামলে রান্নার ধকলটা নেওয়া বেশ ঝক্কির ব্যাপার কেয়ার জন্য। কিছুটা মন খারাপ করেই ঘরে পায়চারি করছেন তিনি।

ঘটনা শুনে ছোট ভাই ইমন আলম বলেন, ‘আরে এ তো মাত্র একটা ক্লিকের ব্যাপার।’ বোন বলেন, ‘তুই মজা করছিস।’ ভাই এবার গম্ভীর হয়ে বলেন, ‘অনলাইনে এখন ইফতারের অর্ডার করা যায়। অর্ডার করলে ঘরে বসেই মিলবে তোমার পছন্দমতো ইফতারি।’

এরপর দুই ভাইবোন মিলে দেখেশুনে একটা অনলাইন থেকে খাবার অর্ডার করেন। ভাইকে ধন্যবাদ দিয়ে কেয়া মুঠোফোন নিয়ে বসেন বন্ধুদের দাওয়াত দিতে।

শুধু কেয়া আলম নন রাজধানীর অনেক বাসিন্দা বিশেষ করে চাকরিজীবী নারীদের অনেককেই ইফতার তৈরির ঝক্কি থেকে মুক্তি দিয়েছে অনলাইনের খাবার দোকান। নির্ধারিত সময় মেনে অর্ডার করলে বাসায় ইফতার পৌঁছে যাবে সময়মতো।

এমন একটি অনলাইন বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান সাবরিনা’স ডাইন। এখানে অর্ডার করে ইফতারের বিভিন্ন প্যাকেজ নেওয়া যাবে। কম্বো-১ নামের প্যাকেজে জালি কাবাব ৪ পিস, চিকেন কাঠি কাবাব ৪ পিস, চিকেন পনির বল ৪ পিস, চিকেন রোল সঙ্গে চিজ রোল ৪ পিস, দইবড়া ৮ পিস থাকবে। দাম পড়বে ৬৮০ টাকা।

কম্বো-২ প্যাকেজে থাকবে সুতি কাবাব আধা কেজি থেকে এক কেজি, চিজ টানা পরোটা ২ থেকে ৪ পিস, এর সঙ্গে পনির টানা পরোটা। দাম পড়বে ৬২০ থেকে ১ হাজার ২৪০ টাকা।

ইফতার অর্ডার দিতে ভিজিট করতে হবে ফেসবুক পেজে। তবে ঘরে বসে ইফতার পেতে খরচ করতে হবে অতিরিক্ত ৮০ টাকা। ইফতার পাওয়ার পর টাকা পরিশোধ করা যাবে।

ঈদ উপলক্ষে সাবরিনা’স ডাইনে থাকছে বিশেষ আয়োজন। পাওয়া যাবে ফ্রোজেন চিকেন শাশলিক, চিকেন কাটলেট, চিকেন টিক্কা, কোফতা, দুধলাউ, শাহি বাসমতী জর্দা। স্বাদ নিতে কেবল ক্লিকের অপেক্ষা।

এই প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা সাবরিনা করিম বলেন, ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে খাবারে ঢাকার স্বাদ বজায় রাখা হয়। তবে সব খাবার ঘরে তৈরি নয়।

ভিড়ের কারণে রেজা হাবিব এবং লিমা আহসান দম্পতির কেউই ইফতার বাজারে ঢুঁ মারতে রাজি নন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে মনকষাকষি থেকে টুকটাক ঝগড়াও হয়। আবার ঘরেও ইফতার বানানোর ফুরসত মেলে না। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে এই রমজান মাসে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন অনলাইনের খাবার দোকানে।

লিমা আহসান বলেন, অনলাইনে ইফতার কেনার সুযোগ থাকায় ঝামেলা অনেকটাই কমে গেছে। বাজারে যেতে হয় না, রান্না করতে হয় না। সময়ও বেঁচে যায়। তবে খাবারের গুণগত মানের দিকে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের আরেকটু যত্নশীল হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।

ব্যস্ততা ও যানজটের কারণে অনেকেই এখন বেছে নিচ্ছেন অনলাইন খাবার দোকান ‘রান্নাঘর’। অফিস, বাসা, পার্টি বা প্রতিদিনের ইফতারের মজাদার সব আইটেম নিয়ে স্ক্রিনে পসরা খুলেছে প্রতিষ্ঠানটি। এখানে ক্রেতা নিজের পছন্দমতো খাবার অর্ডার করতে পারবেন। তবে জানাতে হবে কমপক্ষে এক দিন আগে। ডেলিভারি চার্জ নেই। পরিমাণে খুব কম হলে যাতায়াত খরচ দিতে হবে। রান্নাঘরের স্বত্বাধিকারী রাজীব বলেন, বিক্রি বেশ ভালো।

ইফতারে ভিন্নতা আনতে পারে কেক বা বিভিন্ন ধরনের ডেজার্ট। এ ধরনের খাবার পেতে ঢুঁ মারা যাবে শামা’স কিচেনে। পবিত্র রমজানে স্পেশাল খাবার পাওয়া যাবে মিট মনস্টারে।