রাজীব গান্ধীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা মামলার অন্যতম আসামি জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী। ফাইল ছবি
হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা মামলার অন্যতম আসামি জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী। ফাইল ছবি

হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা মামলার অন্যতম আসামি জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তারা জানতে পেরেছে, হোলি আর্টিজানের হামলাকারীদের সহযোগীদের মধ্যে একজন মার্কিন নাগরিক থাকতে পারে। তাই জাহাঙ্গীর আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে তাঁর সহযোগীরা ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্থাপনা বা স্বার্থে আঘাত হানার পরিকল্পনা করছে কি না, দেশটি তা জানতে চায়।
পারস্পরিক আইনি সহযোগিতা চুক্তির (এমএলএটি) আওতায় বাংলাদেশকে এ ব্যাপারে সহায়তা করতে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের আইন দপ্তর। গত মার্চে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এ-সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছে।
এ বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত কী, জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে পুলিশের সদর দপ্তরের মতামত চেয়েছি। তাদের বক্তব্য পাওয়ার পর সিদ্ধান্ত জানাব।’
চিঠিতে বাংলাদেশের কারাগারে থাকা জাহাঙ্গীর আলমকে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুরোধের পাশাপাশি তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনসহ অন্যান্য ডিজিটাল সরঞ্জাম এবং হোলি আর্টিজান বেকারির প্রধান পরিকল্পনাকারী ও তাঁর অন্য সহযোগীদের ব্যবহৃত ডিজিটাল সরঞ্জাম, তাঁদের মুঠোফোনের ডেটা ও কলের বিস্তারিত বিবরণ চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া হোলি আর্টিজানের হামলার বিষয়ে হালনাগাদ তথ্যও চেয়েছে দেশটি।
চিঠিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ব্যুরো (এফবিআই) অনুসন্ধান ও তথ্য সংগ্রহ করবে। যার মাধ্যমে হোলি আর্টিজানে হামলার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা যাবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের হামলা প্রতিরোধ করা যাবে।
এ বিষয়ে মার্কিন দূতাবাসের বক্তব্য জানতে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ই-মেইলে যোগাযোগ করা হয়। জবাবে তারা জানায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো তদন্তের বিষয়ে তারা সাধারণত কোনো বক্তব্য দেয় না।
গত ১৩ জানুয়ারি কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের একটি দল টাঙ্গাইল থেকে জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধীকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ বলছে, হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে একজন এই জাহাঙ্গীর আলম।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন দপ্তরের চিঠিতে হোলি আর্টিজানের হামলাকারীদের সহযোগীদের মধ্যে একজন মার্কিন নাগরিক থাকতে পারে বলে যে কথা বলা হয়েছে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে নিহত জঙ্গিদের একজন শেহজাদ অর্ক রউফ। তাঁর যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব রয়েছে। হয়তো তাঁর বিষয়ে বলা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুলাই কল্যাণপুরের ওই অভিযানে শেহজাদসহ মোট নয় জঙ্গি নিহত হয়। এরপর অক্টোবরে শেহজাদের লাশ চেয়ে মার্কিন দূতাবাস চিঠি দিয়েছিল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শেহজাদ ঢাকার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছিলেন। তিনি হোলি আর্টিজানে হামলায় জড়িত জঙ্গিদের একজন নিবরাস ইসলামের বন্ধু ছিলেন বলে জানা গেছে।