চেনা রূপে ফিরছে ঢাকা

ঈদের ছুটির পর আবারও চেনা রূপে ফিরছে রাজধানী। সড়কগুলোতে বেড়েছে গাড়ির সংখ্যা। গতকাল বিকেলে বাংলামোটর এলাকা থেকে ছবিটি তোলা প্রথম আলো
ঈদের ছুটির পর আবারও চেনা রূপে ফিরছে রাজধানী। সড়কগুলোতে বেড়েছে গাড়ির সংখ্যা। গতকাল বিকেলে বাংলামোটর এলাকা থেকে ছবিটি তোলা প্রথম আলো

রাস্তায় যানজট, গন্তব্যে যেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা, গণপরিবহনে উঠতে হুড়োহুড়ি—এটাই রাজধানীর চেনা রূপ। তবে পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে রাজধানীর চিত্র ছিল ভিন্ন। রাস্তা ছিল প্রায় ফাঁকা, ছিল না যানজট। এখন স্বজনদের সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন শেষে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছে লোকজন। শহরের প্রধান প্রধান সড়কে যানবাহনের চাপ বাড়ছে। চেনা রূপে ফিরতে শুরু করেছে রাজধানী। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, তবে ঢাকার পুরোপুরি ‘স্বরূপে’ ফিরতে আরও কয়েক দিন লেগে যাবে।

গতকাল রোববার সকালে গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাজধানীতে ফিরছে মানুষ। এ সময় কথা হয় একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মী মো. আবদুল জলিলের সঙ্গে। তাঁর গ্রামের বাড়ি মাগুরার শ্রীপুরে। আবদুল জলিল বলেন, ‘প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটাতে গ্রামে গিয়েছিলাম। ঈদের পর অফিস খুলেছে। প্রথমে বাসায় যাব, তারপর ফ্রেশ হয়ে অফিসে যাব।’

কর্মব্যস্ত হতে শুরু করেছে রাজধানী। পণ্য নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন হকাররা। মিরপুর রোড থেকে তোলা ছবি l প্রথম আলো
কর্মব্যস্ত হতে শুরু করেছে রাজধানী। পণ্য নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন হকাররা। মিরপুর রোড থেকে তোলা ছবি l প্রথম আলো

এদিকে গতকাল সকালে টিপটিপ বৃষ্টি হওয়ায় রাজধানীতে প্রবেশ করতে মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, মহাখালী, গাবতলী, কল্যাণপুর ও টেকনিক্যাল মোড় এলাকায় কাদাপানি মাড়িয়ে মানুষকে যাতায়াত করতে দেখা গেছে।

কল্যাণপুরে এসআর কাউন্টারের সামনে কথা হয় রাজশাহী থেকে আসা শহিদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সকালে ঢাকায় নেমে দেখি বৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে আবার অফিসে যাওয়ার তাড়া আছে। তাই ভিজেই মোহাম্মদপুরে যাচ্ছি। সেখান থেকে পরে অফিসে যাব।’

রাজধানীর ব্যস্ততম এলাকা ফার্মগেটে গিয়ে দেখা গেছে, গত কয়েক দিনের তুলনায় যানবাহনের চাপ বেড়েছে। মিরপুরের ইটিসি বাসের চালক মো. মালেক বলেন, ‘মানুষের চাপ বাড়ছে, তয় রাস্তাঘাট অখনো ফাঁকা। কোথাও জাম নাই।’

ফার্মগেটের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আফরিন জানালেন, তিনি সকালে পেশাগত কাজে মিরপুর থেকে ধানমন্ডি যান। এরপর সেখান থেকে গুলশান ও পরে ফার্মগেটে এসেছেন। কোথাও যানজট পাননি। স্বাচ্ছন্দ্যেই বাসে যাতায়াত করতে পেরেছেন।

মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন ট্রাফিক সার্জেন্ট জসিম উদ্দিন ও সজীব দে। তাঁরা বলেন, কয়েক দিন ধরেই মানুষ ঢাকা আসতে শুরু করেছে। গত কয়েক দিনের তুলনায় রোববার যানবাহনের চাপও বেড়েছে। তবে যানজট নেই বললেই চলে।

আগামী কয়েক দিনের মধ্যে চাপ আরও বাড়বে বলে মনে করেন তাঁরা।

বিকেল অবশ্য রাজধানীর কয়েকটি সড়কে যানজট দেখা যায়।

হানিফ পরিবহনের মহাব্যবস্থাপক মোশারফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিন ধরে ধাপে ধাপে মানুষ রাজধানীতে আসতে শুরু করেছে। আরও কয়েক দিন এভাবে মানুষ রাজধানীতে আসবে। তিনি জানান, দুই ধাপে মানুষ রাজধানীতে আসছে। একটি হচ্ছে আশপাশের জেলা থেকে আর আরেকটি হচ্ছে দূরের জেলা থেকে। আশপাশের জেলা থেকে মানুষ দ্রুত আসছে, কেননা ওই জেলাগুলো থেকে বাস বেশি আসে। আর দূরের জেলার বাস কম হওয়ায় ওই জেলা থেকে মানুষ ধীরে ধীরে রাজধানীতে আসছে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে আবার ঢাকা আগের রূপে ফিরতে পারে।