মানুষ আত্মকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে

জরিপে অংশ নেওয়া ৯৬ দশমিক ৬ শতাংশ তরুণ কমবেশি একমত মানুষ ক্রমাগতভাবে আত্মকেন্দ্রিক বা স্বার্থপর হয়ে পড়ছে। এর মধ্যে সম্পূর্ণ একমত ৭৫ দশমিক ৮ শতাংশ এবং কিছুটা একমত ২০ দশমিক ৮ শতাংশ। সব মিলিয়ে বলা যায়, প্রায় সব তরুণের মধ্যেই মানুষের এই আত্মকেন্দ্রিক হওয়া নিয়ে তেমন কোনো সংশয় নেই।

সামাজিক বিভিন্ন বিষয় বা সমস্যা নিয়ে তরুণদের ভাবনা বা মনোভাব জানারও চেষ্টা ছিল জরিপে। প্রশ্ন ছিল সামাজিক বিষয় নিয়ে। জানতে চাওয়া হয় কোন কোন বিষয় নিয়ে তারা বেশি চিন্তিত? তরুণেরা নির্ধারিত সাতটি বিষয় নিয়ে তাদের মনোভাবের কথা জানায়। আর এর মধ্যে আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়া ছাড়াও আরও ছয়টি বিষয়ের কথা বলেছে তরুণেরা।

যেমন, সামাজিক নীতিনৈতিকতার যে অবক্ষয় হচ্ছে, এ নিয়েও একমত ৯৫ দশমিক ১ শতাংশ তরুণ। এর মধ্যে সম্পূর্ণ একমত ৫৭ দশমিক ৩ শতাংশ আর মোটামুটি একমত ৩৭ দশমিক ৮ শতাংশ তরুণ। এরপরই তরুণেরা বলেছে দুর্নীতি বৃদ্ধি পাওয়ার কথা। দিন দিন দুর্নীতি যে বাড়ছে, এ নিয়ে একমত ৯৩ শতাংশ তরুণ। তাদের মধ্যে ৭২ দশমিক ১ শতাংশের এ নিয়ে কোনো ধরনের সংশয় নেই, আর মোটামুটি একমত ২১ শতাংশ।

দিন দিন বেকারত্ব বাড়ার বিষয়েও একমত ৯২ দশমিক ৯ শতাংশ তরুণ। ৭২ দশমিক ২ শতাংশই মনে করে, এ নিয়ে সংশয়ের কোনো অবকাশ নেই। বাকি ২০ দশমিক ৭ শতাংশ মোটামুটি একমত। সামাজিক বন্ধন ক্রমান্বয়ে শিথিল হওয়ার বিষয়ে একমত ৮৯ দশমিক ৯ শতাংশ তরুণ। তাদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৫ শতাংশ সম্পূর্ণ একমত।

জরিপে এই প্রশ্নে তরুণেরা আবারও সামাজিক বিষয়ের মধ্যে মা-বাবার সঙ্গে সন্তানদের দূরত্ব বৃদ্ধি পাওয়ার কথাটি বলেছে। এখানে একমত পোষণ করেছে ৮৫ দশমিক ৭ শতাংশ তরুণ। সবশেষে পারিবারিক বন্ধন দিন দিন দুর্বল হওয়ার বিষয়ে একমত ৮৫ দশমিক ৩ শতাংশ তরুণ।

তরুণদের উদ্বেগ এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। জানতে চাওয়া হয়েছিল শিক্ষার গুণমান নিয়েও। চিত্র মোটামুটি একই। ৩৯ দশমিক ২ শতাংশ তরুণ শিক্ষার গুণমান নিয়ে খুব বেশি উদ্বিগ্ন বলে জানায়। আর ৪৪ দশমিক ৬ শতাংশ তরুণ মোটামুটি উদ্বিগ্ন। অন্যদিকে ১০ দশমিক ৭ শতাংশ তরুণের মধ্যে এ নিয়ে ততটা উদ্বেগ নেই।

তরুণদের এই যে সংকট আর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা—এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কী? এ সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার সহজ কোনো উপায় নেই বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ মানুষের মধ্যে অতিকেন্দ্রিকতা বাড়ছে। পরস্পর পরস্পরের ভাষা বুঝতে পারছে না। পেশাজীবন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে সমাজের বড় অংশের মধ্যে। আগে পরিবার থেকে তরুণদের ওপর নৈতিকতাসম্পন্ন ভালো মানুষ হওয়ার চাপ ছিল। এখন সেটি পরিবর্তিত হয়ে পেশাজীবন ও পরীক্ষায় ভালো করা, বহুজাতিক কোম্পানিতে কাজ করা, গাড়ি-বাড়ির মালিক হওয়ার মতো বিষয়ে পরিবার থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। পরিবেশ ও পরিস্থিতির কারণে এমন সমস্যা তৈরি হচ্ছে। 

বন্ধন

মা-বাবার সঙ্গে সন্তানদের দূরত্ব বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়ে একমত ৮৫.৭%

সামাজিক বন্ধন শিথিল হওয়ার বিষয়ে একমত ৮৯.৯%