শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন প্রত্যাহার

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে আমরণ অনশন প্রত্যাহার করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গত শনিবার শহীদ মিনারের পাদদেশে আমরণ অনশন শুরু করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ ছিল আমরণ অনশনের তৃতীয় দিন। পরে সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মো. আমির হোসেন অনশনস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সম্মানজনক সমাধানের আশ্বাস দেন। এতে শিক্ষার্থী অনশন প্রত্যাহার করতে চাইলে তিনি তাঁদের পানি খাইয়ে অনশন ভাঙান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মো. আমির হোসেন বলেন, ‘এ পরিস্থিতিতে সম্মানজনক সমাধানের জন্য যা প্রয়োজন, তা-ই করতে ব্যক্তিগতভাবে আমি, কোষাধ্যক্ষ এবং শিক্ষক সমিতিসহ অন্যান্য শিক্ষকেরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব। আমাদের সঞ্চালক (সুস্মিতা মরিয়ম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক) বললেন অতীতের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, এবারের অভিজ্ঞতা খারাপ হবে না। কারণ, আপনারা আমাদের প্রতি সম্মান দেখিয়েছেন, আস্থা রেখেছেন। এটার মর্যাদা আমরা রক্ষা করব, কোনো ত্রুটি থাকবে না।’

সহ-উপাচার্য বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষক সমিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। অনশনরত এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমাদের আশ্বাসে আশ্বস্ত হয়ে তাঁরা অনশন প্রত্যাহার করেছেন।’

এ বিষয়ে প্রথম অনশনকারী শিক্ষার্থী সরদার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘স্যারের বক্তব্যের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, যদি সাত দিনের মধ্যে আশানুরূপ ফল না দেখা যায়, তবে আবারও অনশনে বসতে আমরা পিছপা হব না।’

এ সময় সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক নাসিম আখতার হোসাইন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৬ মে ভোরে ক্যাম্পাস-সংলগ্ন সিঅ্যান্ডবি এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে দুর্ঘটনায় নাজমুল হাসান ও মেহেদি হাসান নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, ঘাতক চালকের শাস্তি ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে পরদিন ২৭ মে বেলা পৌনে ১১টা থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। বিকেলে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর করেন। এ সময় কয়েকজন শিক্ষক লাঞ্ছিত হন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ৫৪ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শিক্ষকদের একটি অংশ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন।