সদস্য সংগ্রহের পাশাপাশি নির্বাচনের প্রস্তুতি

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কুষ্টিয়ায় বিএনপির সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম চলছে। জেলা বিএনপির কয়েকজন নেতা বলেন, এ কর্মসূচির পাশাপাশি তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হচ্ছে। বিশেষত যাঁরা আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক, তাঁরা নিজ এলাকায় যাচ্ছেন। নেতা-কর্মীদের চাঙা করার পাশাপাশি তাঁরা নির্বাচনে সাধারণ মানুষের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছেন।

জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সোহরাব উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচন ও আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিতে ও এলাকায় থাকতে বলেছেন। এখন প্রতিদিন বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে গণসংযোগ করা হচ্ছে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে কুষ্টিয়ার চারটি সংসদীয় আসনের তিনটিতে জয়ী হয় বিএনপি। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে চারটিতেই বিএনপির প্রার্থীরা জয়লাভ করেন। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনে সব কটি আসন হারায় বিএনপি। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর থেকে এ জেলায় অনেকটা কোণঠাসা দলটি। কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি ঘরোয়াভাবে পালন করে আসছে। হামলা-মামলা আর কারাবাসে দলীয় নেতারা পর্যুদস্ত।

দলের সদস্য সংগ্রহ ও নবায়নের দুই মাসব্যাপী কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এর অংশ হিসেবে ১ জুলাই থেকে কুষ্টিয়া জেলায় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঘাঁটি পুনরুদ্ধারে মাঠে গণসংযোগ করছেন দলের শীর্ষ নেতারা। ভয়ভীতি মাথায় নিয়ে মাঠে নেমেছেন বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দলীয় কলহ ও বিরোধ ভুলে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে এলাকায় এলাকায় ঘুরছেন তাঁরা।

সদর উপজেলার হাটশ-হরিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, গত শনিবার এলাকায় জেলার শীর্ষ নেতারা এসেছিলেন। তাঁরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে গণসংযোগ করেছেন। যেসব নেতা-কর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, অন্যত্র পালিয়ে ছিলেন, তাঁদের খোঁজখবর নিয়েছেন।

উজানগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মজিদ বলেন, এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা আগের তুলনায় একটু স্বস্তিতে আছেন। তবে পরিস্থিতি কখন পাল্টে যাবে তা বলা যাচ্ছে না। তবুও এলাকার নেতা-কর্মীরা গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

গত রোববার আবদালপুর ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘোরেন সোহরাব উদ্দীন। বিভিন্ন বয়সী মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন তিনি। সোহবার উদ্দীন বলেন, গ্রামের মানুষ সুষ্ঠু নির্বাচনের অপেক্ষায় আছে। তাদের প্রবল আগ্রহ দেখা গেছে। প্রশাসন একটু সদয় হলে আশা করা হচ্ছে একটা ভালো ধারা ফিরে আসবে।

দৌলতপুর বিএনপির এক শীর্ষ নেতা বলেন, দৌলতপুরের প্রতিটি ইউনিয়নে নেতা-কর্মীরা নড়েচড়ে বসছেন। তাঁরা চাঙা হচ্ছেন।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শামীমুল হাসান বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশে এলাকার বিপদগ্রস্ত মানুষের মাঝে যতটুকু সম্ভব সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। বিএনপিকে শক্তিশালী করতে ও ঘাঁটি ফিরিয়ে আনতে কর্মীদের সঙ্গে সব রকম যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

কুমারখালী ও খোকসা উপজেলায় গত সপ্তাহজুড়ে গণসংযোগ চালিয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী। তিনি বলেন, প্রশাসন ও রাজনৈতিক বিরোধী শক্তির ভয়ভীতি উপেক্ষা করেই গণসংযোগ চালানো হচ্ছে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে নির্বাচনমুখী হতে মানুষকে বলা হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের নেতা-কর্মীদের মনোবল দৃঢ় করার চেষ্টা চলছে।