'না' ভোট নিয়ে বিএনপিতে আলোচনা হয়নি

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপে সেনা মোতায়েন ও ‘না’ ভোটের প্রস্তাব করেছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। সেনা মোতায়েনের বিষয়টি সমর্থন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। কিন্তু না ভোটের বিষয়ে নিজেদের অবস্থান এখনো ঠিক করেনি দলটি।

একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত সোমবার থেকে সংলাপ শুরু করেছে ইসি। সংলাপে সুশীল সমাজের অনেকে বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে প্রার্থী, পোলিং এজেন্ট, ভোটার—সবার মনে আতঙ্ক রয়েছে। আতঙ্ক দূর করতে সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), ১৯৭২-এ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় পুলিশ, আর্মড পুলিশ, র‍্যাব, আনসার, বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে সেনাবাহিনী বা সশস্ত্র বাহিনীর কথা নেই। ২০০৯ সালে আরপিও সংশোধনীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞা থেকে সশস্ত্র বাহিনীকে বাদ দেওয়া হয়। বর্তমান আইন অনুযায়ী, সশস্ত্র বাহিনী ‘স্ট্রাইকিং ফোর্স’, তারা ক্যাম্পে অবস্থান করবে, প্রয়োজনে তাদের ডাকা যাবে।

এ ব্যাপারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা তো সেনা মোতায়েনের কথা অনেকবারই বলেছি। না ভোটের ব্যাপারে আমাদের এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

ভবিষ্যতে দলের ভেতর আলোচনা হবে কি না, জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সামনে আমরা যখন এ বিষয় নিয়ে কথা বলব, তার আগে আমাদের দলের মধ্যে অবশ্যই আলোচনা হবে।’

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘না’ ভোট ছিল। ২০০৯ সালে বিধানটি বাতিল করা হয়। ইসির সঙ্গে সংলাপে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের বেশির ভাগই না ভোটের পক্ষে বলেছেন। এর পক্ষে সুশীল সমাজের যুক্তি হলো, বড় দলগুলো অনেক ক্ষেত্রে এমন ব্যক্তিদের মনোনয়ন দেয়, যাঁদের পেশিশক্তি আছে এবং কালোটাকার মালিক। বড় দুই দল এভাবে মনোনয়ন দিলে ভোটার যে তা পছন্দ করছেন না, সেটা বোঝানোর জন্য না ভোট দরকার।

না ভোটের বিষয়ে ব্যক্তিগতভাবে আপত্তি নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ। তবে এর বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

মওদুদ আহমেদ শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার জানামতে দলের মধ্যে আলোচনা হয়নি। তবে আমার ব্যক্তিগত কোনো আপত্তি নেই। এটি বাস্তবায়নে অসুবিধা হতে পারে। না ভোট সাধারণত সফেসটিকেটেড সোসাইটিতে সম্ভব হয়। তবে এটি বাস্তবায়ন কী করে হবে, এর মেকানিজমটা কী হবে, এটা চিন্তার বিষয়।’