সিলেটে জালিয়াতি করে দেড় কোটি টাকার জায়গা দখল?

সিলেট নগরের অভিজাত মহল্লা শাহজালাল উপশহরে যুবলীগ নেতাদের মদদে জালিয়াতি করে প্রায় দেড় কোটি টাকার জায়গা দখলের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়, যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আহমদ আল কবিরের মদদে তাঁর ছোট ভাই আহমদ আল ওয়ালী ও সিলেট জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান যুবলীগ নেতা শামিম আহমদসহ ১৩ জন জালিয়াতির মাধ্যমে উপশহরের এইচ ব্লকের ৪ নম্বর সড়কের ৩১২ নম্বর প্লটের পাঁচ কাঠা জায়গা দখল করেছেন।

গতকাল বেলা সাড়ে তিনটায় জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর-শাহারপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের সৈয়দ শামসুন্নুর আলী।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সৈয়দ শামসুন্নুর আলী বলেন, ২০০২ সালের ২১ জুলাই সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার আটঘর গ্রামের বাসিন্দা মো. নূর উদ্দিন খানের কাছ থেকে ২৫ লাখ টাকা দিয়ে তাঁর প্রয়াত বাবা সৈয়দ ফনু মিয়া ওরফে বুলু মিয়া আমমোক্তারনামা দলিল সম্পাদনপূর্বক রেজিস্ট্রি করে শাহজালাল উপশহরের ওই বাসার প্লট ক্রয় করেন। পরবর্তী সময়ে শাহজালাল উপশহরের কর্তৃপক্ষ হিসেবে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ সিলেটের উপবিভাগ-১–এর প্রকৌশলী প্লটের দখল সৈয়দ ফনু মিয়াকে বুঝিয়ে দেন। সংবাদ সম্মেলনে এ–সংক্রান্ত তথ্যাদিও উপস্থাপন করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ২০০৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর মো. নূর উদ্দিন খান মারা গেলে তাঁর ছেলে মো. সালমান উদ্দিন খান আহমদ আল কবিরের ছোট ভাই আহমদ আল ওয়ালী ও মহানগর যুবলীগের সাবেক সদস্য ও সিলেট জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শামীম আহমদসহ ১৩ জন ২০১২ সালের ৩১ জানুয়ারি জায়গা দখলের চেষ্টা চালান। এ ব্যাপারে তখন শাহপরান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

পরবর্তী সময়ে সৈয়দ ফুন মিয়ার জাতীয় পরিচয়পত্র ও স্বাক্ষর জাল করে জাল দলিল জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের দপ্তরে দাখিল করে জায়গার মালিক দাবি করে দখল-তৎপরতা চলে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এ অবস্থায় গত ১৬ মার্চ মহানগর হাকিম আদালতে (প্রথম) ১৩ জনের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ এনে একটি নালিশি মামলা করা হয়। আদালত আবেদনটিকে এজাহার হিসেবে গণ্য করে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে শাহপরান থানাকে বললে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। কিন্তু আসামিরা রাজনৈতিক প্রভাবে গত ২০ মে এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে পুলিশ।

সৈয়দ শামসুন্নুর আলী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বাবা সৈয়দ ফনু মিয়া তাঁর যুক্তরাজ্যপ্রবাসী ছেলেদের আয়-রোজগারের টাকা দিয়ে জায়গা কিনেছিলেন। নিরপেক্ষ কোনো তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত তদন্তের মাধ্যমে জায়গা ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করলে আহমদ আল কবির মুঠোফোন ধরেননি। শামিম আহমদ গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, যে বা যাঁরা এ অভিযোগ করছেন, তাঁরা আসলে জায়গার মালিক নন। অভিযোগকারীরা এ নিয়ে আদালতে একটি মামলাও করেছিলেন। তদন্তে মামলাটিও মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এখন সংবাদ সম্মেলন করে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা কোনো মহল দ্বারা প্ররোচিত বলে তিনি মনে করেন। এসব অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।