'ও তো আমাদের বুদ্ধিজীবী'

তোফা ও তহুরা
তোফা ও তহুরা

হাসিমুখে দা-দা-দা শব্দ করে যাচ্ছে তহুরা। তার বিছানার সঙ্গে লাগানো আরেক বিছানায় তোফা বেশ গম্ভীর। মুখের ভাবভঙ্গি দেখে মনে হচ্ছিল কিছু একটা নিয়ে ভাবছে ও।  মজা করে চিকিৎসক সাহনূর ইসলাম বললেন, ‘ও তো আমাদের বুদ্ধিজীবী।’

গতকাল দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকদের বিশেষ অনুমতি নিয়ে বিশেষ পরিচর্যা কক্ষে গিয়ে দেখা যায় এই দৃশ্য।

পিঠের নিচ থেকে কোমরের নিচ পর্যন্ত পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে জন্মেছিল গাইবান্ধার তোফা-তহুরা। ১ আগস্ট ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের ২০-২২ জনের একটি দল অস্ত্রোপচার করে তাদের আলাদা করে। অস্ত্রোপচারের পর জ্বর, সংক্রমণসহ কিছু জটিলতা দেখা দিয়েছিল ওদের। তবে গতকাল দুজনই ছিল অন্যদিনের তুলনায় অনেক ভালো। এতে তাদের মা শাহিদার মুখে ফুটে উঠেছে হাসি।

তোফা ও তহুরার বয়স এখন ১০ মাস। তোফা ও তহুরা যেভাবে জোড়া লাগানো ছিল, চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ‘পাইগোপেগাস’। বাংলাদেশে ‘পাইগোপেগাস’ শিশু আলাদা করার ঘটনা এটি প্রথম। এর আগে অন্যান্য হাসপাতালে অন্য ধরনের জোড়া লাগানো শিশুদের অস্ত্রোপচার করে আলাদা করা হয়েছিল।

মা শাহিদা বলেন, ‘একজন যখন কাঁদে, তখন অন্যজন তাকায় তাকায় দেখে। মেয়েরা হাসে-খায়। ওরা এখন ভালো আছে।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাহনূর ইসলামের অধীনে তোফা ও তহুরা ভর্তি আছে। সাহনূর ইসলাম বলেন, রোববার (আজ) সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা তোফা ও তহুরার পরবর্তী চিকিৎসা নিয়ে করণীয় ঠিক করতে বসবেন।