ঘাস মারতে ওষুধ মরল ধানগাছ

ধানখেতের ঘাস মারতে ওষুধ ব্যবহার করেছিলেন কৃষকেরা। এখন তাঁদের খেতের ধানগাছই মরে সাফ হয়ে যাচ্ছে। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কাদিরকোল গ্রামের ২৪ জন কৃষক এমন ক্ষতির শিকার হয়েছেন।

 গত বুধবার সরেজমিনে দেখা যায়, কাদিরকোল গ্রামে মাঠের প্রায় ২৬ বিঘা জমির ধানগাছ এভাবে মারা গেছে। গাছগুলো শুকিয়ে শুকনো কলাপাতার রং ধারণ করেছে। অনেকে নতুন করে ধানের চারা রোপণ করতে লাঙল দিয়ে খেত চষে ফেলছেন।

কৃষকেরা বলছেন, ধানখেতে ‘মিমপ্লেক্স অ্যাগ্রোকেমিক্যাল লিমিটেড’ নামের একটি কোম্পানির ‘মিমফিট ৫০০ ইসি’ ব্যবহার করে তাঁদের এই ক্ষতি হয়েছে। যাঁরাই ঘাস মারতে এই ওষুধ জমিতে ব্যবহার করেছেন, তাঁদেরই এ সমস্যা দেখা দিয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে রয়েছেন কাদিরকোল গ্রামের তৈয়ব আলী, আবদুল আজিজ, আবদুল জলিল লস্কর, ইউনুস আলী, আবদুস সাত্তার লস্কর, আলফাজ উদ্দিন, হাসান বিশ্বাস ও পীযূষ কান্তি। তাঁরা অভিযোগ করে বলেন, আনুমানিক ১৫ দিন আগে তাঁরা ধানখেতের ঘাস মারার জন্য স্থানীয় বাজার থেকে ‘মিমফিট ৫০০ ইসি’ কেনেন। ইউরিয়া সারের সঙ্গে মিশিয়ে তা খেতে ছিটিয়ে দেন। অনেকে স্প্রেও করেছেন। ব্যবহারের দু-তিন দিনের মধ্যেই জমির ঘাস না মরে ধানগাছ মরতে শুরু করে। প্রথমে ধানগাছের গোড়া থেকে পচন শুরু হয়।

কৃষক তৈয়ব আলী বলেন, ‘ঘাস মারতে ওষুধ দিলাম। এখন ধানগাছই মরে গেল। আমার তিন বিঘা জমির ধানই এভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। ওই ধান চাষ করতে ইতিমধ্যে প্রায় ১০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।’

এই কৃষকেরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কোম্পানির স্থানীয় প্রতিনিধিদের জানিয়েছেন। তাঁরা এসে মাঠ পরিদর্শন করে গেছেন। কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন।

মিমপ্লেক্স অ্যাগ্রোকেমিক্যাল লিমিটেডের ঝিনাইদহ অঞ্চলের প্রধান জাহিদ জীবন বলেন, কেন এমন হচ্ছে, তাঁরাও বিষয়টি বুঝতে পারছেন না। কোম্পানির বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি ওই এলাকায় গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের খোঁজখবর রাখছেন। ইতিমধ্যে মৃত ধানগাছ ও মাটির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। যেসব কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।