বছর বছর সংস্কার তবু বেহাল

মাদারীপুরের ইটেরপুল-ঘোষেরহাট সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল কালকিনির বালিগ্রাম ইউনিয়নের সনমান্দী এলাকা থেকে তোলা ছবি l প্রথম আলো
মাদারীপুরের ইটেরপুল-ঘোষেরহাট সড়কের বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল কালকিনির বালিগ্রাম ইউনিয়নের সনমান্দী এলাকা থেকে তোলা ছবি l প্রথম আলো

মাদারীপুরের ইটেরপুল-ঘোষেরহাট সড়কের ১২ কিলোমিটারই যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কটির সংস্কারে কর্তৃপক্ষ লাখ লাখ টাকা ব্যয় করছে। তবে তা কাজে আসছে না। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগও কমছে না।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর শহরের ইটেরপুল থেকে ঘোষেরহাট যেতে ১৫ মিনিট লাগার কথা। কিন্তু রাস্তা খারাপ হওয়ায় ১২ কিলোমিটার পথ যেতে এখন সময় লাগছে ৪০ মিনিটেরও বেশি। কারণ রাস্তার পিচ উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় আট বছর আগে সড়কটি নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে বছর বছর এর সংস্কার করা হচ্ছে। তবে দায়সারাভাবে সংস্কার করায় তা টিকছে না।

মাদারীপুর সড়ক বিভাগ জানায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটির সংস্কার করা হয়। পরে মেরামত করা স্থানগুলোতে আবারও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আবার সড়কটির ৪ কিলোমিটার অংশে ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে সংস্কারকাজ করা হয়। তবে কার্যাদেশ পাওয়া প্রতিষ্ঠানটি দায়সারাভাবে মেরামত করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সড়কটিতে নিয়মিত যাতায়াতকারী কালকিনির শশিকর এলাকার নিত্য গোপাল বলেন, প্রতিবছর সংস্কারের নামে সরকারি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট লোকজন। সড়কটি মেরামতের এক মাস না যেতেই আবার একই অবস্থার সৃষ্টি হয়। সড়কের অধিকাংশ স্থানে এক থেকে দেড় ফুটেরও বেশি গভীর গর্ত হয়েছে। এটি মরণ ফাঁদ ছাড়া অন্য কিছু নয়।

কালকিনির বালিগ্রাম ইউনিয়নের ধূরাসা এলাকার হাতেম আলী বলেন, ‘আমাদের এ রাস্তায় প্রতিবছর সংস্কারকাজ করা হয়। এখন রাস্তার পাথর আছে, কিন্তু পিচ নেই। অল্প দিনেই রাস্তা ভেঙে যায়। এ ছাড়া রাস্তার দুই ধারও উঁচু-নিচু হয়ে আছে।’

সদর উপজেলার ঘটমাঝি ইউনিয়নের কুন্তিপাড়া এলাকার রোকসানা বেগম বলেন, ‘ইটেরপুল থেকে রাস্তার কাজ শুরু হলেও আমাদের এখানে পুরোনো রাস্তার ওপরই সংস্কার করা হচ্ছে। প্রতিবছর রাস্তার যেখানে গর্ত, সেখানে ইট আর বালু দিয়ে ভরাট করে রাখা হয়। একটু বৃষ্টিতেই আবার গর্তের সৃষ্টি হয়ে জলাবদ্ধতা দেখা যায়। আমরা এর প্রতিকার চাই।’

রিকশাচালক বীরেন্দ নাথ বিশ্বাস বলেন, এ রাস্তায় চালালে রিকশার অনেক ক্ষতি হয়। কখনো কখনো রিকশা উল্টে যাত্রীরা আহত হয়। রাস্তার মধ্যে বড় বড় গর্ত আছে। গর্তের কারণে যাত্রী ও চালকদের অনেক কষ্ট হয়।

কালকিনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. দোদুল কাজী বলেন, উপজেলা উন্নয়ন সভায় এই সড়কের বিষয়ে একাধিকবার তথ্য উপস্থাপন করলেও সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের টনক নড়েনি।

মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুর রহিম বলেন, ‘প্রতিদিন সড়কটি দিয়ে প্রায় আট হাজার মানুষ চলাচল করে। সেই কথা মাথায় রেখে চলতি অর্থবছরে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে সদর দপ্তরে কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে।’