শাকসবজি ও ফলমূলে ফরমালিন নেই

রাজধানীর মতিঝিলে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) কার্যালয়ে আজ শনিবার ‘বাংলাদেশ ফুড সেফটি কনফারেন্স-২০১৭’ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন শেষে অতিথিরা। ছবি: প্রথম আলো
রাজধানীর মতিঝিলে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) কার্যালয়ে আজ শনিবার ‘বাংলাদেশ ফুড সেফটি কনফারেন্স-২০১৭’ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন শেষে অতিথিরা। ছবি: প্রথম আলো

শাকসবজি ও ফলমূলে ফরমালিন মেশানোর কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক। তিনি বলেছেন, তদন্ত করে নকল বা কৃত্রিম ডিমের অস্তিত্ব তাঁরা পাননি। তরমুজের মধ্যে রং মেশানোর অভিযোগও সঠিক নয়।

রাজধানীর মতিঝিলে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) কার্যালয়ে আজ শনিবার ‘বাংলাদেশ ফুড সেফটি কনফারেন্স-২০১৭’ (বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য সম্মেলন) বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএফএসএর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক এসব কথা বলেন।

মাহফুজুল হক বলেন, ‘নাগরিক সমাজের অনেকেই মনে করেন, ফরমালিন-মিশ্রিত বলে শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া যাবে না। এ ধারণার কারণে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। কারণ, শাকসবজি ও ফলমূল পুষ্টির বড় উৎস, যা অন্য কোনো কিছু দিয়ে মেটানো যাবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তদন্ত ও গবেষণা করে দেখেছি, শাকসবজি ও ফলমূলে ফরমালিন মিশ্রণের কোনো সুযোগ নেই।’

বিএফএসএর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আপেলে ফরমালিন দেওয়া কোনো সুযোগ নেই। এখন দেখা যাচ্ছে, ফলমূল পচছে না। আসলে নতুন অনেক প্রযুক্তি বের হয়েছে। আপেলে প্যারাফিন ওয়াক্সের প্রলেপ (কোটিং) দেওয়া হচ্ছে। এটি মৌমাছি থেকে আসে, যা খাওয়ার যোগ্য। এই প্রলেপ দেওয়ার কারণ হচ্ছে, যাতে করে আপেলের জলীয় বাষ্প শুকিয়ে যেতে না পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনেক সুপারস্টোরে আপেলের গায়ে লেখা থাকে, “আমি ফরমালিনমুক্ত”। এটি কিন্তু ভুল। কারণ, আপেলে ২৩ পিপিএম প্রাকৃতিক ফরমালিন আছে। আমের মধ্যেও প্রাকৃতিক ফরমালিন থাকে।’

কিছুদিন আগে যে যন্ত্র ব্যবহার করে আমসহ বিভিন্ন ফলমূলের ফরমালিন পরীক্ষা করা হয়েছিল, সেটি ভুল ছিল বলে উল্লেখ করেন মাহফুজুল হক। তিনি আরও বলেন, ‘প্রায়ই অভিযোগ আসে, বাজারে নকল বা কৃত্রিম ডিম পাওয়া যাচ্ছে এবং তরমুজের মধ্যে ক্ষতিকর রং মেশানো হচ্ছে। তবে আমরা তদন্ত করে দেখেছি, এসবের বাস্তব কোনো ভিত্তি নেই।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২৩ ও ২৪ আগস্ট রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে নিরাপদ খাদ্য সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে। ফরেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই), মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ) এবং বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) সম্মিলিতভাবে দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন এফআইসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট রূপালী চৌধুরী, এমসিসিআইয়ের সদস্যসচিব ফারুক আহমেদ, বিএসটিআইয়ের পরিচালক এএনএম আসাদুজ্জামান।

সম্মেলন আয়োজক কমিটির সচিব নকিব খান বলেন, ‘দেশ হিসেবে আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। তবে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার বিষয়ে এখনো অনেক দূর যেতে হবে। সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া এটি অর্জন সম্ভব নয়। তাই সবপক্ষকে নিয়ে প্রথমবারের মতো “বাংলাদেশ ফুড সেফটি কনফারেন্স” আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ, দেশের শিল্পোদ্যোক্তা, বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন।’

সম্মেলনের ডায়মন্ড স্পনসর হিসেবে আছে নেসলে, কোকাকোলা, জিএসকে ও পেপসিকো। গোল্ড স্পনসর হিসেবে আছে ফ্রুটো, ইউনিলিভার, স্কয়ার, পারফেটি ভ্যান ম্যালে, মেঘনা গ্রুপ, আকিজ গ্রুপ, আড়ং ডেইরি, গ্লোবাল ও ইফাদ এবং সিলভার স্পনসর হচ্ছে পোলার, নিউজিল্যান্ড ডেইরি, লালমাই গ্রুপ, মার্কস, স্বপ্ন ও পুষ্টি।