১০ সেপ্টেম্বর উত্তরা প্রকল্পের ৮৪০টি ফ্ল্যাটের লটারি

উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের অনেক ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ছবি: প্রথম আলো
উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের অনেক ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ছবি: প্রথম আলো

উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের ৮৪০টি ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আগামী ১০ সেপ্টেম্বর লটারি হবে। রাজউকের এই প্রকল্পে যাঁরা বরাদ্দ পেয়ে গত বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে চারটি কিস্তির টাকা পরিশোধ করেছেন, তাঁদের নিয়েই লটারি অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া ডিসেম্বরে আরও দুই হাজার ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ১০টি ভবনে ৮৪০টি ফ্ল্যাট সম্পূর্ণ প্রস্তুত আছে। ১০ সেপ্টেম্বর সকালে রাজউক ভবন মিলনায়তনে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে লটারি অনুষ্ঠিত হবে। বরাদ্দপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠিও দেওয়া হচ্ছে।
অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের ‘এ’ ব্লকে ফ্ল্যাটের জন্য ২০১২ সাল থেকে অনেকেই আবেদন করেছিলেন। ১ হাজার ৬৫৪ বর্গফুটের (মূল ১২৫০) ফ্ল্যাটের প্রতি বর্গফুটের দাম ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৫০০ টাকা। সরকারি দলের দুজন সাংসদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ৭৯টি ১৬ তলা ভবন তৈরির কাজ দেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময়ে কাজের অগ্রগতি হয়নি। পরে ২০টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আলাদাভাবে কাজ দেওয়া হয়। এর আগেই ফ্ল্যাট বরাদ্দ পাওয়া ৩৫ শতাংশ আবেদনকারী কিস্তি ও জামানতের টাকা তুলে নেন। অনেক বরাদ্দগ্রহীতা ৫ শতাংশ টাকা ছাড় দিয়ে জমাকৃত কিস্তির টাকা ফেরত নেন। বর্তমানে ৫ হাজার ৮০০ জনের মতো গ্রহীতা রয়েছেন। ভবনগুলোর কাজের অগ্রগতির কারণে নতুন করে কেউ আর টাকা তুলে নিচ্ছেন না বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরে প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ‘এ’ ব্লকে ৭৫টি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। তবে ভেতরের কাজ শেষ হয়নি। উত্তর দিকে ৩৩ নম্বর লটসহ ১০টি ভবনে ভেতরের ও বাইরের কাজ প্রায় পুরোপুরি শেষ হয়েছে। পার্শ্ববর্তী আরও পাঁচটি ভবনের চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ চলছে।
কয়েকজন ফ্ল্যাট-গ্রহীতাকে পাওয়া যায়। তাঁদের মধ্যে শান্তিনগরের বাসিন্দা রমিজ আহমেদ বলেন, তাঁর স্ত্রীর নামে ফ্ল্যাট কিনে সব কিস্তির টাকা পরিশোধ করেছেন। বছরের পর বছর ঘুরছেন। এখন বুঝে পাবেন বলে আশা করছেন। মিরপুরের ইকবাল চৌধুরী, উত্তরার শফিকুর রহমান একই ধরনের প্রত্যাশার কথা জানান।
সম্প্রতি এ প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, চলাচলের রাস্তাগুলো এখন পর্যন্ত সংস্কার হয়নি। ইটের ওপর কোথাও ঘাস জন্মেছে। কোথাও কোথাও ভাঙা, আস্তর উঠে গেছে। প্রকল্প পরিচালক রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রকল্প এলাকায় রাস্তা রয়েছে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার। বৃষ্টির কারণে রাস্তার কাজ করা যাচ্ছে না। দরপত্র হয়েছে, ঠিকাদার নিয়োগও প্রায় চূড়ান্ত। আশা করা যায়, আগামী মাসে কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।
প্রকল্পে ঢাকা ওয়াসার পানির পাইপলাইন এবং ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) বৈদ্যুতিক লাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। গ্যাস-সংযোগ হবে এলপিজি সিলিন্ডারের মাধ্যমে। বিভিন্ন ভবনের পাশে সিলিন্ডার ব্যাংক করা হচ্ছে। সেখান থেকে ফ্ল্যাটগুলোতে লাইন টেনে সংযোগ দেওয়া হবে। সংযোগটি হবে মিটারিং পদ্ধতিতে।
উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্পের উপপরিচালক (এস্টেট) মো. হামিদুল ইসলাম বলেন, আগামী ডিসেম্বরে আরও দুই হাজার ফ্ল্যাট বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে।