অবশেষে বিসিএস উত্তীর্ণরা মাধ্যমিকের শিক্ষক হচ্ছেন

দীর্ঘ এক বছর ধরে নানা চড়াই-উতরাই শেষে ৩৪তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে থেকে নন-ক্যাডার হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্তরা ঈদের আগেই সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পাচ্ছেন। তবে ৪৫০ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হলেও প্রথম দফায় ২৮৯ জন নিয়োগ পাচ্ছেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল দুজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, নিয়োগের জন্য পদায়নের খসড়াও চূড়ান্ত হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। ঈদের আগে আগামীকালই সর্বশেষে কর্মদিবস। ফলে যাঁরা নিয়োগ পাবেন, তাঁদের ঈদ আনন্দটা ভিন্নমাত্রায় হবে বলে মনে করছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা আজ প্রথম আলোকে বলেন, ৪৫০ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হলেও স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অংশ নেন ৩৩৬ জন। এতে করে ধরে নেওয়া হচ্ছে, বাকিরা হয়তো এই চাকরিতে যোগ দেবেন না। আর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত পুলিশি যাচাই প্রতিবেদন পাওয়া গেছে ২৮৯ জনের। এখন তাঁদেরই নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাবেন। দেশের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক) চৌধুরী মুফাদ আহমেদ আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, যেহেতু মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক-সংকট রয়েছে, তাই যাঁদের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পাওয়া গেছে, তাঁদের আগে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। বাকিদের প্রতিবেদন পাওয়া গেলেই সঙ্গে সঙ্গে নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। তবে পরে যাঁরা নিয়োগ পাবেন, তাঁদের জ্যেষ্ঠতায় কোনো সমস্যা হবে না। সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) করা মেধাতালিকা অনুযায়ীই জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা হবে।
বর্তমানে সারা দেশে ৩৩৮টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে। এগুলোতে সহকারী শিক্ষকের অনুমোদিত পদ আছে ১০ হাজারের বেশি। কিন্তু প্রায় দুই হাজার পদ শূন্য। আবার প্রতিনিয়তই শিক্ষক অবসরে যাচ্ছেন। ফলে পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে ইংরেজি, গণিতসহ কয়েকটি বিষয়ে এই সমস্যা প্রকট। কিন্তু নিয়োগবিধি-সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ২০১২ সালের পর থেকে এসব পদে আর নিয়োগ দেওয়া যাচ্ছিল না। পরে এই সংকট মেটাতে গত বছরের আগস্টে ৩৪তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কিন্তু ক্যাডার পদ পাননি (নন-ক্যাডার), এমন ৪৫০ জনকে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। কিন্তু পুলিশি যাচাই প্রতিবেদন না পাওয়ায় তা আটকে ছিল।