মিনায় হাজিদের পথের দিশারি

মিনায় হজ পালনে আসা হাজিদের সেবা দেন সৌদি আরবে কর্মরত ভারতীয় ও পাকিস্তানি পেশাজীবীরা। মিনার হাজিদের ৫ দিন সেবা দেন তাঁরা। স্বেচ্ছায় চাঁদা দিয়ে প্রবাস জীবনে ঈদের খুশিকে ভাগাভাগি করে নিচ্ছেন। কলকাতার হুগলি জেলার আজিজুল শেখ, সিরাজুল ইসলাম, বর্ধমান জেলার শহীদুলের সঙ্গে কথা হলো এই প্রতিবেদকের। জেদ্দার স্বর্ণ কারখানায় তাঁরা চাকরি করেন। শহীদুল জানান, ঈদের কারণে কর্মস্থলে ছুটি থাকে, দেশেও যেতে পারি না। পাঁচ দিন হাজিদের সেবা করি।

ভারতের আইএফএফ ইন্ডিয়া ফেটারনিটি ফোরাম, রিসালা স্টাডি সার্কেল, জেদ্দা ওয়েলফেয়ার ফোরাম, পাকিস্তান হজ ফোরাম—এসব ফোরামের নামে তাঁরা মূলত পথ হারানো হাজিদের পথ দেখান। তাঁদের সংখ্যা তিন হাজারের মতো।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘হজ শুরু হওয়ার এক মাস আগে আমরা নিজেদের উদ্যোগে জেদ্দা হজ কার্যালয়ে (সিজি অফিস) যোগাযোগ করি। সিজি অফিস আমাদের মিনার ম্যাপ এলাকা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেয়। পরিচয়পত্র দেয়। আমরা নিজেরা ৩০০ রিয়াল করে জমাই। এই টাকায় আমরা মিনায় খাবার খাই। ২৪ ঘণ্টা পালাক্রমে হারানো হাজিদের পথ দেখিয়ে দিই। সিজি অফিস ঘুমানোর একটা জায়গা দিয়েছে। পুরো মিনা এলাকা ৬ কিলোমিটার। প্রতি ১০০-২০০ মিটার পর আমরা দাঁড়িয়ে থাকি। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্থান থেকে আসা হাজিদের পথ দেখাই। হাজিদের সঙ্গে ভারী ব্যাগ থাকলে কিছুটা লাঘব করার চেষ্টা করি। দেশে মা-বাবা আছেন। এসব হাজির সেবা করাটা পুণ্যের কাজ বলে মনে করি। হজের এই ছুটিতে কোনো কাজ থাকে না আমাদের। যেহেতু আত্মীয়স্বজন দেশে থাকে, ছুটিতে থাকলে টিভি দেখে সময় কাটাতাম। এর চেয়ে এখন হাজিদের সেবা করেছি, এটা আমাদের পরম পাওয়া।’
হজের পাঁচ দিন মিনা ঘুরে ভারত ও পাকিস্তানের স্বেচ্ছাসেবকদের দেখা মিললেও কোনো বাংলাদেশি স্বেচ্ছাসেবকের দেখা মেলেনি। বাংলাদেশ থেকে আসা অনেক হাজি খেদ ঝেড়ে বলেন, বাংলাদেশের প্রায় ১৫-২০ লাখ লোক সৌদি আরবে কর্মরত। প্রবাসী বিভিন্ন ফোরাম এ ধরনের উদ্যোগ নিতে পারে। তাহলে মিনায় পথ হারানো বাংলাদেশি হাজিদের দুর্ভোগ অনেকটা কমবে।