রায় নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে সংসদে প্রস্তাব পাস

সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রসঙ্গ: ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে আপিল বিভাগের রায়

এ রায় কোথা থেকে, কারা তৈরি করে দিয়েছে, সেটা একটা প্রশ্ন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে এই প্রস্তাব পাস হয়। তার আগে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতাসহ ১৮ জন মন্ত্রী-সাংসদ আদালতের রায় নিয়ে আলোচনা করেন। তাতে সবাই প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার কড়া সমালোচনা করেন। কেউ কেউ বলেছেন, প্রধান বিচারপতি একাধিকবার শপথ ভঙ্গ করেছেন। তাঁর দুর্নীতির দালিলিক প্রমাণ আছে। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগও আনেন কেউ কেউ। সংসদের অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আদালতের রায়কে সাংঘর্ষিক ও স্ববিরোধী আখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘এ রায় কোথা থেকে, কারা যেন তৈরি করে দিয়েছে, সেটা একটা প্রশ্ন।’

সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, প্রধান বিচারপতি নিজেকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন; সংসদ, গণতন্ত্র—সবকিছুকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। এর উদ্দেশ্য কী, সেটাই প্রশ্ন। তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের অধিকার হলো, ব্যত্যয় দেখলে ব্যাখ্যা দিতে পারেন। সংবিধান সংশোধন বা আইন প্রণয়নের এখতিয়ার তাঁদের নেই। তিনি বলেন, এই রায় কারও কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। একমাত্র বিএনপি খুব উৎফুল্ল হয়ে মিষ্টি বিতরণ করেছে। রায় হয়তো তারা পড়েনি। কারণ, রায়ে সামরিক শাসন অবৈধ হওয়ার বিষয় এসেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রধান বিচারপতি তাঁর রায়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। তিনি আমিত্বের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলেই আমিত্ব এসে যায়। কাউকে পছন্দ না হলে প্রধান বিচারপতি তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন।

এক ব্যক্তি, প্রধান বিচারপতির কাছে জুডিশিয়ারি দায়বদ্ধ থাকবে। বিচারপতিরা চাকরি করতে পারবেন কি না, তা এক ব্যক্তির হাতে চলে যাচ্ছে। প্রধান বিচারপতি কারও প্রতি এতটুকু বৈরী হলে সেই বিচারপতির চাকরি থাকবে না। তিনি বলেন, যখনই গণতান্ত্রিক ধারা এগোতে থাকে, তখনই একটি বাধা এসে দাঁড়ায়। গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে হবে। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে।

ওই রায়ে মহিলা সংসদ সদস্যদের সম্পর্কে দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, মহিলা সংসদ সদস্যসহ সংসদ সদস্যরা রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচিত করেন। সেই রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতিকে নিয়োগ দেন। তাহলে প্রধান বিচারপতি থাকেন কি না, সে প্রশ্ন এসে যায়। সংসদ কীভাবে চলে, তা নিয়েও আদালতের পর্যবেক্ষণে ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সংসদে সবার কথা বলার স্বাধীনতা আছে, তা গত বাজেট অধিবেশনে প্রমাণিত হয়েছে। সরকারি দলের সদস্যরাও ভ্যাট নিয়ে যেভাবে বক্তব্য দিয়েছেন, অর্থমন্ত্রী ভ্যাট প্রত্যাহারে বাধ্য হয়েছেন।

গতকাল জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালিবিধির ১৪৭(১) ধারায় সংসদে নোটিশ দেন জাসদের সাংসদ মইন উদ্দীন খান বাদল। প্রস্তাবে বলা হয়, ‘সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী মামলার রায়ে ষোড়শ সংশোধনীকে আল্ট্রা ভায়ার্স ঘোষণাকে বাতিল করার জন্য ও মাননীয় প্রধান বিচারপতি কর্তৃক জাতীয় সংসদ সম্পর্কে এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যে অসাংবিধানিক, আপত্তিকর, অপ্রাসঙ্গিক পর্যবেক্ষণ, তা বাতিল করার জন্য যথাযথ আইনি পদক্ষেপ করা হউক।’ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা শুরু হয় এবং তা শেষ হয় রাত সাড়ে ১১টায়। আলোচনা শেষে কণ্ঠভোটে সর্বসম্মতভাবে প্রস্তাবটি পাস হয়।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক

এর আগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ষোড়শ সংশোধনী মামলার রায় যুক্তিনির্ভর নয়। আবেগতাড়িত ও বিদ্বেষপ্রসূত। তিনি বলেন, ২০১৫ সালে বিচারপতিদের অপসারণ-সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়া করা হয়েছিল। এটা আদালতের কাছে পাঠিয়ে মন্তব্য চাওয়া হয়েছিল। প্রথমে তারা উত্তর দেয়নি। পরে জানায়, বিষয়টি বিচারাধীন, এ কারণে বক্তব্য দেওয়া যাবে না। তাতেই বোঝা যায়, এটা নিয়ে তাদের একটা পরিকল্পনা ছিল।

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আইনের দ্বারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত। সংবিধান সর্বোচ্চ আইন। সংবিধান ক্ষমতা দিলে কেউ তা কেড়ে নিতে পারে না। যে যুক্তিতে বাতিল করেছেন, সেসব গ্রহণযোগ্য নয়।’

প্রধান বিচারপতির সমালোচনা করে আইনমন্ত্রী বলেন, কাউকে হেয়প্রতিপন্ন করে কথা বলা দায়িত্বশীল হতে পারে না। দায়িত্বজ্ঞান ও আইনি ভাষায় কথা বলার যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। প্রধান বিচারপতির দুটিরই অভাব দেখা গেছে। তিনি বলেন, ১৯৭২ থেকে কোনো বিচারপতি এত কথা বলেননি। প্রধান সামরিক শাসকও এত কথা বলেননি।

আইনমন্ত্রী বলেন, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল হলো ‘তাইরে নাইরে নাইরে খেলা’। বিচারপতি আব্দুর রহমান, বিচারপতি কে এম সোবহান, বিচারপতি দেবেশ ভট্টাচার্যকে তাঁরা জুডিশিয়াল কাউন্সিলে না নিয়ে সরাসরি বাড়ি পাঠিয়েছিলেন। এ রকম প্রমাণ আরও দেওয়া যাবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রধান বিচারপতি এ রায়ে বলতে চেয়েছেন, বাংলাদেশ অকার্যকর রাষ্ট্র। এমন সময়ে তিনি এটা বলছেন, যখন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ রায় দিয়ে তিনি বিএনপিকে উৎফুল্ল করার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, সংসদ সদস্যরা জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি। সংসদকে কেউ ছোট করলে পুরো জাতিকে ছোট করা হয়।

সংসদকে অপরিপক্ব বলার সমালোচনা করে তোফায়েল বলেন, ‘আমাদের দ্বারা নির্বাচিত রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারপতিরা পরিপক্ব। আর আমরা জনগণের দ্বারা নির্বাচিতরা অপরিপক্ব!’ তিনি প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে বলেন, ‘বেশি কথা বলা ভালো না। তিনি সেদিন বলেছেন, ‘‘আমাকে মিস কোট করা হয়েছে।’’ মিসকোট কাকে করা হয়? যে বেশি কথা বলে। দেশে এতজন প্রধান বিচারপতি ছিলেন, কাউকে নিয়ে এত বিতর্ক হয়েছে?’

উচ্চ আদালত থেকে দুর্নীতি দমন কমিশনে এক বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত না করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেন তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি তদন্ত করতে পারবে, কিন্তু বিচারকের বিরুদ্ধে তদন্ত করা যাবে না?

ষোড়শ সংশোধনী মামলার অ্যামিকাস কিউরিদের সমালোচনা করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, তাঁরা কারা? ড. কামাল আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রীবিরোধী। ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। রোকনউদ্দিন মাহমুদ হাইকোর্টে এক কথা বলেছেন, আপিল বিভাগে আরেক কথা বলেছেন। মোহাম্মদ আলী, তিনি দৌড় আলী নামে পরিচিত। হাসান আরিফ বিএনপির নিযুক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, ফিদা কামাল সেনা-সমর্থিত সরকারের অ্যাটর্নি জেনারেল, আবদুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া বিএনপির আমলে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, টি এইচ খান বিএনপির মন্ত্রী। তিনি প্রশ্ন রাখেন, নিরপেক্ষ বা আওয়ামী লীগ-সমর্থিত কোনো আদালতের বন্ধু পাওয়া গেল না?

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের সংবিধান শুরু হয়েছে “আমরা” দিয়ে। হঠাৎ এই প্রশ্ন আসল কেন? তিনি কি জানেন না, স্বাধীনতার ঘোষণা শুরু হয়েছিল “আমি” দিয়ে?’

বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন

রায়ের পর্যবেক্ষণ বাতিলের দাবি জানিয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, সর্বোচ্চ আদালত তাঁর এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে রায় দিয়েছেন। এই রায় বারবার দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করা হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। তিনি বলেন, রায়ে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন সম্পর্কে অস্বীকার নয় শুধু, বিদ্রূপ করার চেষ্টা করা হয়েছে। বর্তমান সরকার ও নেতৃত্ব সম্পর্কে অযাচিত মন্তব্য করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতির পাকিস্তানপ্রীতির পেছনে আর কিছু আছে কি না দেখা দরকার।

বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ

বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, সংবিধানে তিন বিভাগের ক্ষমতা ভাগ করা আছে। কেউ সীমা অতিক্রম করতে পারে না। সংবিধানে দেওয়া ক্ষমতা নিয়ে কাজ করতে হবে।

শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু

শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, দেখতে হবে এই রায়ে শপথ ভঙ্গের বিষয় আছে কি না। বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষার জন্য স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রধান বিচারপতির রায় ও পর্যবেক্ষণ বদলানো উচিত।

কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী

কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, এই রায়ে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছেন বিএনপির নেতা মওদুদ আহমদ। প্রধান বিচারপতি ও মওদুদ আহমদ আজকে একই সুরে কথা বলছেন। মওদুদ মৃত ব্যক্তির নামে অ্যাফিডেভিট করে গুলশানের জমি নিজের নামে লিখে নিয়েছেন। তিনি বলেন, মওদুদের মতোই প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাও ২০০৩ সালে উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরে নিজের নামে তিন কাঠার প্লট নিয়েছেন। ২০০৪ সালে তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ বিবেচনায় তাঁর প্লট চার কাঠায় পরিণত করা হয়। সেখানে তিনি ছয়তলা ভবন করেছেন।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিচারপতি ফয়সল মাহমুদ ফয়েজী সার্টিফিকেট কেলেংকারির কারণে হাইকোর্ট বিভাগ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। বিচারপতি জয়নাল আবেদিনের বিরুদ্ধে দুদক দুর্নীতির তদন্ত করেছিল। সেই সময় ওই তদন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলার পর তাঁকে তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছিল। তিনি বলেন, এসব দুর্নীতির বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, প্রধান বিচারপতি দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত। তাঁর দুর্নীতির দালিলিক প্রমাণ আছে। তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। এসব নিয়ে সংবাদও হয়েছে। যুদ্ধাপরাধের দায়ে মামলা চলাকালে সাকা চৌধুরীর স্ত্রী বিদেশে ও বাসভবনে এস কে সিনহার সঙ্গে দেখা করেছেন। এতে তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর প্রশ্ন, ‘বঙ্গবন্ধু একক নেতা না, তাহলে তাঁর (প্রধান বিচারপতি) কোন ঠাকুর একক নেতা?’

মোজাম্মেল হক বলেন, প্রধান বিচারপতি আত্মস্বীকৃত শান্তি কমিটির সদস্য। আদালতে তিনি নিজেই তা স্বীকার করেছেন। একজন আত্মস্বীকৃত পিস কমিটির সদস্য বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে না-ই জানতে পারেন। প্রধান বিচারপতি উসকানি দিয়েছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আবার বলেন, ‘‘দেখেন নাই পাকিস্তানে কী হয়েছে?’’ কত বড় দুঃসাহস তাঁর!’

পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ

পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, এ রায় অগ্রহণযোগ্য। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশ এবং সংসদকে অকার্যকর দেখানোর জন্য এ রায়।

সাংসদ শেখ ফজলুল করিম সেলিম

আওয়ামী লীগের সাংসদ শেখ ফজলুল করিম সেলিম প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি শপথ ভঙ্গ করেছেন। আপনি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। আপনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা যেতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘এই রায় আপনাকেই বাতিল করতে হবে। না করলে আপনার বিরুদ্ধে কী করা হবে, তার জন্য অপেক্ষা করেন।’

শেখ সেলিম প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে আরও বলেন, সময় আছে শুধরে যান, জনগণের কাছে ক্ষমা চান। না হলে সংসদের ক্ষমতা কী, বুঝতে পারবেন।

সাংসদ মইন উদ্দীন খান বাদল

সংসদে প্রস্তাব তুলে ধরার পর প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে মইন উদ্দীন খান বাদল বলেন, তাদের কাছে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য অস্ত্রধারী উত্তরপাড়াই উত্তম। প্রধান বিচারপতি প্রমাণ করতে পারবেন না, এই সংসদ বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ করেছে। এ জন্যই তিনি আইনি পয়েন্ট থেকে সরে অপ্রাসঙ্গিক কথা বলেছেন, যা বলার অধিকার তাঁর নেই।

বিচারপতিদের উদ্দেশে বাদল বলেন, ‘রায়ের মধ্য দিয়ে আপনারা আপনাদের চেহারা উন্মোচন করেছেন। সে চেহারা জনগণকে প্রচণ্ড দুঃখ দেবে।’

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া বলেন, সংবিধান সংশোধন করার কোনো অধিকার আদালতের নেই। এই রায় অসাংবিধানিক। সুপ্রিম কোর্টও সংবিধানের ঊর্ধ্বে নন। সংসদ সার্বভৌম, আদালত নন।

শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, বিচারক নিয়োগের আইন ও সুষ্ঠু পদ্ধতি না থাকায় এই জটিলতা এবং এই রায় এসেছে। আপিল বিভাগ আপিলের বাইরে অন্য কোনো রায় বা পর্যবেক্ষণ দিতে পারেন না। তাঁদের সে অধিকার নেই। সংসদও এই রায় মানতে বাধ্য নয়।

স্বতন্ত্র সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজী দাবি করেন, এই সংসদের মতো প্রাণবন্ত ও বিতর্কপ্রবণ সংসদ ১৯৭৩-এর পর আর দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে দীপু মনি, ফখরুল ইমাম, ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী, তাহজীব উল আলম সিদ্দিকী প্রমুখ বক্তব্য দেন।