দুটি লাশ উদ্ধার, নিখোঁজ ১৯

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ওয়াপদা লঞ্চঘাটে ডুবে যাওয়া তিনটি লঞ্চের দুজন যাত্রীর লাশ গতকাল বৃহস্পতিবার উদ্ধার করেছে পুলিশ। এখনো নিখোঁজ রয়েছে ১৯ জন। উদ্ধারকারী যান প্রস্তুত থাকলেও নদীতে প্রচণ্ড স্রোত থাকায় লঞ্চ তিনটিও উদ্ধার করা যায়নি।

গত সোমবার পদ্মার ভাঙনে ওয়াপদা লঞ্চঘাটের পন্টুন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে পন্টুনে নোঙর করা তিনটি লঞ্চ ডুবে যায়। এগুলোর মধ্য মৌচাক লঞ্চটি ওয়াপদা থেকে ঢাকা এবং নড়িয়া-২ ও মহানগরী লঞ্চ দুটি নারায়ণগঞ্জে চলাচল করত। নিখোঁজ ব্যক্তিদের মধ্যে তিনটি লঞ্চের ১৬ জন কর্মী ও তিনজন যাত্রী রয়েছে।

গতকাল উদ্ধার হওয়া লাশ দুটির মধ্যে এক যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি। অপর লাশটি নড়িয়ার লোনসিং গ্রামের পারভীন আক্তারের (৩৫)।

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, পারভীন আক্তার মৌচাক লঞ্চের যাত্রী ছিলেন। গতকাল দুপুরে পুলিশ নদী থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে। শনাক্ত করার পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনেরা ওয়াপদা, সুরেশ্বর ও দুলারচর এলাকায় অপেক্ষা করছেন।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে মোতালেব মোল্লা বলেন, ‘নবজাতক ভাগনিকে নিয়ে বোন, ভগ্নিপতি ও আমার মা ঢাকা থেকে ফিরছিলেন। বোন, ভাগনি ও মা আমাদের ছেড়ে নিখোঁজ হয়ে গেল। বোনকে পেলাম নিথর দেহে। মা ও ভাগনির সন্ধান পাচ্ছি না। আল্লাহ আমাদের সাথে কেন এমন করলেন।’

ডুবে যাওয়া লঞ্চ ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারের জন্য পদ্মা নদীতে অবস্থান করছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ), নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। উদ্ধারকারী যান প্রত্যয় নড়িয়া এলাকায় অবস্থান করছে।

বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক (উদ্ধার) ফজলুর রহমান বলেন, নদীতে প্রচণ্ড স্রোত। এ কারণে ডুবুরিরা নামতে পারছেন না।

উদ্ধারকর্মীরা জানান, নদীতে প্রচণ্ড স্রোত থাকায় উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। গত মঙ্গলবার ভেদরগঞ্জ উপজেলার দুলারচর এলাকায় মৌচাক লঞ্চটি শনাক্ত করা হয়েছে। তবে স্রোত থাকায় লঞ্চটিতে নোঙর করতে পারেনি প্রত্যয়। তাই সেখানে অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে নড়িয়া-২ ও মহানগরী লঞ্চ দুটি উদ্ধারের জন্য নৌবাহিনী ও বিআইডব্লিউটিএ আধুনিক যন্ত্র নিয়ে ওয়াপদা ঘাট ও আশপাশের এলাকায় কাজ করছে। যন্ত্রটি ১৫ বর্গমিটার এলাকায় ১৫০ মিটার গভীর পর্যন্ত কোনো বস্তু থাকার তথ্য দেবে।