প্রামাণ্যচিত্রের বাজার তৈরির কর্মশালা
ফিচার ফিল্ম বা কাহিনিচিত্রের জন্য যদি যৌথ প্রযোজক আর যৌথ বাজারের দরকার হয়, তাহলে ডকুমেন্টারি ফিল্ম বা প্রামাণ্যচিত্রের জন্য নয় কেন? রাজধানীতে ছয় দিনের একটি কর্মশালার মূল কথা এটাই।
কর্মশালাটির আয়োজক স্বাধীন ধারার নির্মাতাদের নতুন সংগঠন ‘ঢাকা ইনডিপেনডেন্ট ফিল্ম নেটওয়ার্ক’। তাদের প্রথম কর্মসূচি ‘ঢাকা ডক ল্যাব’। এই কর্মসূচির আওতায় হয়ে গেল প্রামাণ্যচিত্রের যৌথ প্রযোজনার কলাকৌশল ও যৌথ প্রযোজনার বাজারসংক্রান্ত কর্মশালা।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে গতকাল ছিল সমাপনী অনুষ্ঠান। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
কর্মশালায় দক্ষিণ এশিয়ার তরুণ নির্মাতারা প্রযোজকদের কাছে তাঁদের তৈরি প্রামাণ্যচিত্র উপস্থাপন (পিচিং), পরিবেশন, বাজারজাতসহ প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের পুরো প্রক্রিয়াটি হাতে কলমে শেখেন বিশ্বের বিভিন্ন চলচ্চিত্রজনের কাছ থেকে। শেষ দুই দিন প্রযোজকদের কাছে নিজেদের প্রকল্পগুলো উপস্থাপন করেন তাঁরা।
মোট ১৩টি প্রকল্প জমা পড়ে। ছয়টি শাখায় চারজনকে পুরস্কার দেওয়া হয়। এমার্জিং ট্যালেন্ট পুরস্কার পান বাংলাদেশের সুমন দেলোয়ার। তিনি আইএফআইবির আর্থিক সহযোগিতায় আগামী কান চলচ্চিত্র উৎসব ও কর্মশালায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। ৭১ টিভি পুরস্কার পান দক্ষিণ ভারতের অরুণ কার্তিক। চ্যানেল আই ও ঢাকা ডক ল্যাব পুরস্কার পান বাংলাদেশের হুমায়রা বিলকিস। কলকাতা ডকেজ ও গাজি টিভি পুরস্কার পান বাংলাদেশের তাসমিয়া আফরিন।
আয়োজন উপলক্ষে বিশ্বের বিখ্যাত প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা, প্রযোজক, টেলিভিশন সম্প্রচারক, চলচ্চিত্র পরিবেশক এবং সিনেমায় অর্থ লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে এসেছিলেন।
প্রথমবারের মতো চলচ্চিত্রের বাজারসংক্রান্ত এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করে কী ভাবছেন তরুণ নির্মাতারা? বাংলাদেশের ফরিদ আহমেদ বলেন, প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতাদের জন্য ঢাকা ডক ল্যাব বিশাল একটি প্ল্যাটফর্ম।
আসাম থেকে আসা বিশ্বজিত দাস বলেন, এই আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্বের নানা চলচ্চিত্রজনের মধ্যে যোগাযোগ হয়েছে। এটা অসাধারণ একটি সুযোগ।
৮ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া এই কর্মসূচিতে কর্মশালা ছাড়াও ছিল প্রকল্প উপস্থাপন, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, সেমিনার, বিখ্যাত চলচ্চিত্রকারদের মাস্টার ক্লাস। সমাপনী আয়োজনে বক্তৃতা করেন প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা মানজারে হাসীন মুরাদ, সংগঠনের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দীন ইউসুফ, ডেনমার্কের চলচ্চিত্রকার ক্যারোলিন লিডিন, যুক্তরাজ্যের জেন রে, কলকাতা ডকেজের বিষ্ণুদেব হালদার। আয়োজনটিতে বাংলাদেশ সরকার ও বেঙ্গল ফাউন্ডেশন আর্থিক সহযোগিতা করে। পাশাপাশি কসমস ফাউন্ডেশন ও ওরিয়েন্টাল সার্ভিসেস লিমিটেডও এই আয়োজনে সহযোগিতা করছে। আয়োজনটি সফল করতে সহযোগিতা করেছে ভারতের ডকুমেন্টারি রিসোর্সেস ইনিশিয়েটিভ।