'এখনো কানে বাজে গুলির শব্দ'

সন্তানদের নিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফে পৌঁছেছেন এই রোহিঙ্গা নারী। ছবিটি সম্প্রতি নাইট্যংপাড়া থেকে তোলা। ছবি: আশরাফুল আলম
সন্তানদের নিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফে পৌঁছেছেন এই রোহিঙ্গা নারী। ছবিটি সম্প্রতি নাইট্যংপাড়া থেকে তোলা। ছবি: আশরাফুল আলম

সহিংসতা থেকে বাঁচতে পালিয়ে এসেছেন ৬৫ বছরের রোহিঙ্গা নারী বেগম জান। কক্সবাজারের বালুখালী আশ্রয়শিবিরে বসে এখনো তাঁর কানে বাজে গুলি আর বিস্ফোরণের শব্দ। ভয়ে চমকে ওঠেন।

বেগম জানের জীবনের অনেকটা সময়ই কেটেছে কষ্টে আর যন্ত্রণায়। শেষ বয়সে এসে কষ্ট আরও বেড়েছে। মিয়ানমারের রাখাইনে ভিক্ষা করতেন তিনি। স্বামীকে হারিয়েছেন ২৫ বছর আগে। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। বয়সের ভারে ঠিকমতো হাঁটাচলা করতে পারেন না। লাঠিতে ভর করে হাঁটতে হয় তাঁকে। এ অবস্থাতেই দুদিন ধরে হেঁটে হেঁটে সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছেন।

কক্সবাজারের বালুখালীতে আশ্রয়শিবিরে বসে আল জাজিরার সাংবাদিক কেটি আর্নল্ডের সঙ্গে কথা হয় বেগম জানের।

বেগম জান বললেন, সবাই পালিয়ে যাচ্ছিল। তাদের সঙ্গে সঙ্গে আমিও পালাচ্ছিলাম। আমি এখন বাংলাদেশে আছি। এখনো মনে হয় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী আমার পেছনে ছুটে আসছে। তবে আমি এখন সুখী। কারণ এখন আমি গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই না।

গুলি আর বিস্ফোরণের শব্দ শোনার ভয়ংকর এক অভিজ্ঞতার কথা জানালেন বেগম জান। বললেন, ‘এক রাতে ঘুম ভাঙে গুলি আর বিস্ফোরণের শব্দে। সেই শব্দ এত জোরে ছিল যে তিনি সহ্য করতে পারছিলেন না। শব্দে তিনি ঘুমাতে পাচ্ছিলেন না। সেই শব্দ এত বীভৎস ছিল যে এখনো তাঁর কানে বাজে।’

বেগম জান আরও বলেন, ‘আমি চাই বহির্বিশ্ব আমাদের যন্ত্রণার কথা জানুক।’

২৫ আগস্টের পর মিয়ানমার থেকে প্রায় তিন লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা এসেছে বাংলাদেশে। জাতিসংঘ ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থা সহিংসতা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চিকে আহ্বান জানিয়েছে।