বিরোধপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসক নিয়োগ করবে সরকার

বিরোধপূর্ণ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরোধ সালিসির মাধ্যমে নিষ্পত্তি সম্ভব না হলে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম আইনানুগভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে সরকার প্রশাসক নিয়োগ করে পরিচালনা করবে। এ ছাড়াও যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজ বা আউটার ক্যাম্পাস বিষয়ে মামলা রয়েছে, সেগুলো একটি বিশেষ আদালতে এনে শুনানির মাধ্যমে দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা হবে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নানা অনিয়ম, মামলাসংক্রান্ত জটিলতা, অনিষ্পন্ন কাজ বিষয়ে এক পর্যালোচনা সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। আজ রোববার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী, শিক্ষাসচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী সালাহউদ্দিন আকবর, ইউজিসির সদস্য আতফুল হাই শিবলীসহ মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় দীর্ঘ পর্যালোচনা শেষে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সাত বছর পরও নিজস্ব ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করা হয়নি, সেগুলো ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অবশ্যই নিজস্ব ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করতে হবে। এটা করতে ব্যর্থ হলে তাদের সাময়িক সনদ বাতিল করা হবে এবং ওই সময়ের পর এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এসব বিশ্ববিদ্যালয় দেশের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে বছরের পর বছর শিক্ষার নামে ব্যবসা চালিয়ে আসছে। যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও ট্রেজারার নেই এবং এসব গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের জন্য কর্তৃপক্ষ কোনো প্রস্তাবও পাঠায়নি, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিগগিরই সরকার নিজ উদ্যোগে নিয়োগ দেবে।

সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত অডিট করানো হয় না বা অডিট প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেয় না, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির যৌথ উদ্যোগে একটি অডিট দল গঠন করা হবে। এই দল পর্যায়ক্রমে এসব বিশ্ববিদ্যালয় অডিট বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর অসামঞ্জস্যপূর্ণ ধারাগুলো সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

সভায় আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের প্রতারণার হাত থেকে সতর্ক করার জন্য সরকার ও ইউজিসির অনুমোদন ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী ভর্তি না করার বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দারুল ইহসান, প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়, নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়, সাউদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, বিজিসি ট্রাস্ট ইউনিভার্সিটি, কুইনস ইউনিভার্সিটি, আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিসহ যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এবং আউটার ক্যাম্পাস বিষয়ে মামলা রয়েছে  সেগুলো একটি বিশেষ আদালতে এনে শুনানির মাধ্যমে দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা হবে।