পূজার কেনাকাটায় পছন্দ লাল-সাদা

দুর্গাপূজার আবহ টের পাওয়া যাবে বসুন্ধরার দেশী দশে ঢোকার পথেই। ছবি: আবদুস সালাম
দুর্গাপূজার আবহ টের পাওয়া যাবে বসুন্ধরার দেশী দশে ঢোকার পথেই। ছবি: আবদুস সালাম

লাবণী মণ্ডল প্রতিবছরই একটি করে লাল-সাদা শাড়ি কেনেন। অন্য রং হলেও লাল-সাদা থাকতেই হবে। কদিন পরেই শারদীয় দুর্গা উৎসব। বিপণিবিতানগুলোতেও সেই লাল-সাদার আধিক্য। টুকটাক কেনাকাটাও শুরু হয়েছে। তবে বিক্রেতারা বলছেন, কিছুদিন পর তা আরও বাড়বে। 

পূজার কেনাকাটার জন্য খুব ভিড় না থাকলেও কিছু না কিছু বিক্রি হচ্ছে। গাউছিয়ার শাড়ির দোকানে ঢুকলেই পূজার আবহ পাওয়া যাবে। প্রায় সব দোকানেই লাল-সাদা ও বিভিন্ন উজ্জ্বল রঙের শাড়ি সাজানো। ‘ঢাকাই শাড়িবিতান’-এর এক বিক্রয়কর্মী এক একটি শাড়ি প্রদর্শন করছেন আর বিধান চন্দ্র সাহা মোবাইলে শাড়ির ছবি তুলছিলেন। কয়েকভাবে তুললেন কাতানের মধ্যে অফ হোয়াইট জমিন ও লাল পাড়ের শাড়ির ছবি। বিধান ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। স্ত্রী থাকেন কুমিল্লায়। তিনি বলেন, ‘বিয়ের পর প্রথম পূজা। তাই ভালো একটি শাড়ি কিনতে চাই। কয়েকটি ছবি পাঠিয়েছি। এখন যেটা পছন্দ করে, সেটাই কিনব।’
গাউছিয়ার শাড়ির দোকানিরা বলছেন, কাতান, তসর, সিল্ক ও ভারী কাজের শাড়িগুলো পূজায় বেশি চলে। মো. সানি নামের এক দোকানি বলেন, ‘এই শুক্র-শনিবার ভিড় ছিল। শেষ দিকে গিয়ে আরও বাড়বে।’ দামের ব্যাপারে বলেন, দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা দামের শাড়িই বেশি বিক্রি হচ্ছে। অবন্তী রায় মা ও বোনকে নিয়ে এসেছেন। আরও কয়েকটি পোশাক কিনলেও শাড়ি ছাড়া তাঁর পূজা হয় না। তিনি বলেন, ‘অষ্টমী ও দশমীতে লাল-সাদা পরা হয়। এবারও ও রকম শাড়ি কিনব। ঢাকায় বড় বড় সব মণ্ডপেই ঘুরতে যাব।’
শাড়ির দোকানে কেনাকাটা চললেও নিউমার্কেটের পোশাকের দোকান বা চাঁদনি চকের দরজি দোকানগুলোতে পূজার জন্য তেমন ভিড় নেই। শুভেচ্ছা ফ্যাশন নামের একটি দরজি দোকানের মাস্টার বলেন, পূজায় তাঁরা তেমন কোনো ফরমাশ পান না। অল্প কিছু পোশাক বানানো হয়।

দেশী দশের একটি শোরুমে পূজা উপলক্ষে পোশাক পছন্দ করছিলেন এক ক্রেতা। ছবি: আবদুস সালাম
দেশী দশের একটি শোরুমে পূজা উপলক্ষে পোশাক পছন্দ করছিলেন এক ক্রেতা। ছবি: আবদুস সালাম

বসুন্ধরার শপিং মলের দেশি দশে পূজার আবহ পাওয়া গেল। ‘রঙ বাংলাদেশ’ এবার চারটি রংকে প্রাধান্য দিয়েছে—লাল, সাদা, বাসন্তী ও হলুদ। পাঞ্জাবির নকশায় ‘ওম’, ‘নামাবলি’ লেখা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। শাড়িতেও আছে। তবে এবার শিউলি ফুলকে নকশায় আনা হয়েছে। দেশি দশের বসুন্ধরা শাখার ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এই সময়ে শিউলি ফোটে। পূজায় লাল-সাদার ব্যাপার থাকে আর ফুলটিও লাল-সাদা।’ এ ছাড়া দেশাল, বাংলার মেলা, অঞ্জনসসহ বাকি শো-রুমগুলোও পূজা উপলক্ষে নতুন পোশাক তুলেছে। রঙে এসে ধুতি কিনবেন কি না, তা নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন কলেজ পড়ুয়া সকাল চৌধুরী। সঙ্গে থাকা বন্ধুদেরও পরামর্শ নিচ্ছিলেন কেনার ব্যাপারে।
আড়ংয়ের পোশাকের পাশাপাশি গয়নাও এসেছে। বিক্রয়কর্মী পিংকি ‘কোন ঝুমকা’ নামের একটি কানের দুল দেখালেন। রুপার ওপরে লাল পাথরের কাজ করা এ ঝুমকাটি লম্বাটে। তিনি বলেন, এ রুপার ওপরে লাল পাথরের কাজ করা আরও কিছু গয়না এবার বিক্রি হচ্ছে। পোশাকে আছে লালের মাঝে কমলা রঙের নকশা। এক বিক্রয়কর্মী বলেন, শাড়ি অল্প কিছু এসেছে। দু-এক দিনের মধ্যে আরও নতুন নকশার শাড়ি আসবে। জানালেন, ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার পরেই পূজার কেনাকাটা শুরু হয়েছে।