পাঠকের মুখোমুখি প্রথম আলো

‘যে কথা যায় না বলা’—নকশার এই বিভাগটি বন্ধ হলো কেন? আমাদের মতো বয়সী যারা মনের অনেক কথা কাউকে সরাসরি বলতে পারি না এই বিভাগে সেই কথাগুলো বলাতে পারতাম।—এই অনুযোগ কদমতলা পূর্ব বাসাবো স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তানজিলা আক্তার ও আয়েশা খানের।

শামসুন্নাহার নামের এক অভিভাবকের অনুযোগ, বাংলা মিডিয়ামের প্রাথমিক সমাপনী ও জেএসসির পরামর্শ প্রথম আলোর পড়াশোনা পাতায় দেওয়া হয়, কিন্তু ইংরেজি ভার্সনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে না।

শনিবার বিকেলে পাঠকদের মুখোমুখি হয় প্রথম আলো। পূর্ব বাসাবো কদমতলা স্কুল অ্যান্ড কলেজে অনুষ্ঠিত এই পাঠক সমাবেশে স্থানীয় রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, সরকারি-বেসরকারি চাকুরে, অভিভাবক এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। প্রথম আলোর প্রতি তাঁরা তাঁদের ভালো লাগা, চাহিদা, অভিযোগ এবং অনুযোগের কথা তুলে ধরেন।

সম্পাদক মতিউর রহমান সূচনা বক্তব্যে পাঠকদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, তাঁদের জন্যই প্রথম আলো আজ দেশের অন্যতম বড় কাগজে পরিণত হয়েছে। আরও বেশি করে পাঠকের কথা, তাঁদের চাহিদা তুলে ধরার লক্ষ্যে পাঠকদের মতামত জানতে এই আয়োজন করা হয়েছে।

সম্পাদকের বক্তব্যের পর পাঠকেরা তাঁদের কথা বলতে থাকেন। ব্যবসায়ী ইব্রাহিম রেজা বলেন, এখন তরুণ প্রজন্মের ভাবনা চিন্তা দ্রুত বদলে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে পরিবারে সঙ্গে তাদের একটা দূরত্বের সৃষ্টি হচ্ছে। এই তরুণদের নিয়ে প্রথম আলোর আরও কাজ করা উচিত।

ঢাকা ব্যাংকের কর্মকর্তা নিস্তাক আহমেদ বলেন, ইদানীং অনুসন্ধানী প্রতিবেদন একটু কম হচ্ছে। তিনি বলেন, বৌদ্ধমন্দির থেকে রাজবাগ পর্যন্ত সড়কটি ৬০ ফুট চওড়া করার কথা শোনা যাচ্ছে ২০০৫ সাল থেকে। কিন্তু কাজ কিছুই হচ্ছে না। নিস্তাক আহমেদ এ বিষয়টি তুলে ধরার আহ্বান জানান।

সবাই যে কেবল সমস্যার কথা বলেছেন তা নয়, মজার মজার অভিজ্ঞতার কথাও বলেছেন অনেকে। ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় এক নেতা নাসিমুল গনি বলেন, মূলত মেয়েদের পাতা হলেও তিনি নিয়মিত নকশা পড়েন। একদিন স্ত্রীর অসুস্থ হলে নকশার রেসিপি দেখে তিনি খিচুড়ি রান্না করে সবাইকে খাইয়ে বিপুল প্রশংসা কুড়িয়েছেন।

এ ছাড়া সাহিত্য পাতায় গল্প-কবিতার পরিমাণ বাড়ানো, ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ছোট ছোট নতুন উদ্যোগগুলোকে তুলে ধরা, এবং সর্বোপরি বেশি করে ইতিবাচক সংবাদ প্রকাশের ওপরে জোড় দেন পাঠকেরা।

প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, আগামী বছরের শুরু থেকে পত্রিকাটি নতুন আঙ্গিকে সাজিয়ে পাঠকের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেখানে তাদের এই পরামর্শ কাজে লাগবে। তিনি বলেন, এই এলাকার ১৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে পূর্ব কদমতলা বাসাবো স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতি বছর বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে, এতে প্রথম আলো আর্থিক সহায়তা দেবে। এ ছাড়া আগামী বছর তাদের বিজ্ঞান উৎসবেও প্রথম আলো সহায়তা দেবে। তিনি বলেন, স্কুলের তরুণ প্রজন্মের ছাত্রীরা যাতে তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরতে পারে সে জন্য এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ দুজন প্রতিনিধি পাঠানো হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্কুলের অধ্যক্ষ সাইফুল আলম, পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ইয়াহিয়া সোহেল, সদস্য জুয়েল লস্কর, সাবেক ছাত্র সাজেদুল ইসলাম, শিক্ষক তানজিলা বারী, আমেনা খাতুন, শিরিন আক্তার, আইরিন আলম, তানজিনা তামিম, সাংবাদিক গোলাম কিবরিয়াসহ অনেকে।